আদ্রা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ নিয়ে সিপিএমের মুখ আগেই বন্ধ হয়েছে। রেল মন্ত্রক ছেড়ে দেওয়ায় এখন মুখ বন্ধ তৃণমূলেরও। কংগ্রেস ভেবেছিল রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী আদ্রায় এসে ওই রেলপথ নিয়ে আশ্বাস-বাণী শুনিয়ে যাবেন। আর সেই বার্তা নিয়ে গ্রামে গ্রামে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল তারা। কিন্তু সম্প্রতি আদ্রা সফরে এসে অধীরবাবু এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য না করায় ফাঁপরে পড়ে গিয়েছে কংগ্রেসও।
দলের কাশীপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি স্বপন চৌধুরীর কথায়, “রেল প্রতিমন্ত্রীর কাছে আমরা একমাত্র এই রেলপথের দাবিই করেছিলাম। ওই রেলপথ নিয়ে কিছু আশার কথা তিনি শুনিয়ে গেল পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যেত। সেই সুযোগটা হাতছাড়া হল।” তবে হাল ছাড়তে চাইছেন না কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো। তিনি বলছেন, “ওই রেলপথের দাবিতে আমরা আগে আন্দোলন করেছিলাম। রেলমন্ত্রক এখন আমাদের হাতে। ওই রেলপথ নিয়ে যাতে আসন্ন রেলবাজেটে কিছু ঘোষণা করা হয়, সে জন্য সব রকম ভাবে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।”
তত্কালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব রেলবাজেটে ওই রেলপথ নিয়ে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। রেল সূত্রের খবর, সমীক্ষায় ওই রেল পথ অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু তারপর ওই রেলপথের বিষয়টি আর এগোয়নি। সেই সময় সংসদে রেল বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়া। কাজেই ওই রেলপথ নিয়ে সিপিএম কার্যত সমালোচনার জায়গায় নেই বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। একই অবস্থা তৃণমূলেরও। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীনও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। সেই সময় ওই রেলপথ নির্মাণের দাবিতে বান্দোয়ান থেকে আদ্রা পর্যন্ত পদযাত্রা করেছিল কংগ্রেস। এখন রেলমন্ত্রক কংগ্রেস পাওয়ায় ও সর্বোপরি অধীরবাবু রেল প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন কংগ্রেস কর্মীরা।
কংগ্রেসের কাশীপুর ব্লক কমিটি অধীরবাবুকে স্মারকলিপি দিয়ে আর্জি জানিয়েছেন, কাশীপুর, হুড়া, পুঞ্চা, মানবাজার ১ ও ২ ব্লক, বান্দোয়ান, রানিবাঁধ, বেলপাহাড়ি ও বিনপুর হয়ে রেলপথটি তৈরি করতে হবে। দশটির মধ্যে ছ’টি ছয়টি ব্লকই পুরুলিয়া জেলায়। ওই এলাকাগুলির মধ্যে কাশীপুর বাদে বাকি ব্লকগুলিতে কংগ্রেস দুর্বল। ওই এলাকাগুলিতে শক্তি বাড়াতে তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আদ্রা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ নিয়ে রেলমন্ত্রকের কাছে আশ্বাস শুনতে চাইছে পুরুলিয়ার কংগ্রেস নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা রেলের মাধ্যমে অনুন্নত এলাকার উন্নয়ন ত্বরাণিত করতে চেয়েছিলাম। শীর্ষ নেতৃত্বকেও একাধিকবার জানিয়েছি। রেলপথের ঘোষণা হলে মানুষ যাতে জমি দেন, সেই বিষয়ে আমরা উদ্যোগী হব।” |