আবার বারাসত, বোনকে বাঁচাতে গিয়ে জখম দুই
বোনকে বাঁচাতে গিয়ে ফের আক্রান্ত ভাই। সেই বারাসতেই। এ ক্ষেত্রে প্রাণহানি না হলেও রাজীব দাসের হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি ফের উস্কে দিল এই ঘটনা।
রবিবার মদ্যপ এক যুবকের হাত থেকে বোনের শ্লীলতাহানি আটকাতে গিয়ে গুরুতর জখম হলেন তাঁর ভাই এবং দাদা। অভিযুক্ত যুবক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নিখিল দাসের ভাগ্নে সোমনাথ সর্দার বলে জানায় পুলিশ।
ঠিক দু’বছর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে বারাসতের জেলাশাসকের বাংলো থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন রিঙ্কু দাস। তাঁকে দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে মারা যান তাঁর ভাই রাজীব দাস। ওই ঘটনার পরেও বারাসত যে এতটুকু পাল্টায়নি, তার একাধিক উদাহরণ রয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় বারাসতের বামনগাছি এলাকায় এক দল মদ্যপ যুবক অফিসফেরতা কয়েক জন মহিলাকে নিগ্রহ করার চেষ্টা করে। মহিলাদের সহকর্মীরা ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁদেরও মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
সেই বামনগাছিতেই রবিবার রাতে ফের বোনকে উদ্ধার করতে গিয়ে মার খেতে হল প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ওই যুবককে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ একটি ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় দু ’পক্ষের মধ্যে মারপিট বেধেছিল। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’পক্ষের মারপিট লেগেছিল মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে। পুলিশ জানিয়েছে, এর মধ্যে এক পক্ষ ছিল কাশিমপুর তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নিখিল দাসের ভাগ্নে সোমনাথ সর্দারের দলবল। গত ১১ ফেব্রুয়ারি একটি ডাকাতির মামলায় জামিন পেয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছে সোমনাথ। ওদের সঙ্গে গণ্ডগোল বাধে স্থানীয় বাসিন্দা বিট্টু শীল এবং তার বন্ধুদের।
আক্রান্ত তরুণীর বাড়ির সামনেই দু’পক্ষের ওই মারপিট বাধে বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষণ ধরে ওই ঘটনা দেখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন আক্রান্ত তরুণীর দাদা। দু’পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন তিনি। সেই সময়ে মদ্যপ সোমনাথ ও তার দলবল তরুণীর দাদার উপরে চড়াও হয়। তাঁর বোন, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তখন তাঁকে বাঁচাতে আসেন। এর পরেই সোমনাথ ও তার দলবল ওই ছাত্রীর উপরেও ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাঁকে মাটিতে ফেলে জামাকাপড় ছিঁড়ে দিয়ে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। এই সময়ে ওই তরুণীর ভাই বোনকে বাঁচাতে এলে দুষ্কৃতীরা তাঁর উপরেও চড়াও হয়। তাঁকে ‘পাঞ্চার’ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। দুষ্কৃতীদের মারে ওই যুবক শিঁড়দাড়ায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই ঘটনার পরেই বারাসত থানায় খবর দেয় আক্রান্ত তরুণীর পরিবার। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই সেখানে উপস্থিত হন তৃণমূল নেতা নিখিল দাস। স্থানীয় ক্লাবে সালিশি সভা বসিয়ে তিনি বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার নির্দেশ দেন। বারাসত থানার পুলিশও প্রথমে ওই নেতার প্রস্তাবে সায় দেয় বলে অভিযোগ। কিন্তু তরুণীর পরিবার অভিযোগ দায়ের করার প্রশ্নে অনড় থাকায় পুলিশ বাধ্য হয়েই অভিযোগ গ্রহণ করে। আক্রান্ত তরুণীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য বারাসত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে নিখিল দাস, তারক দাস, সোমনাথ সর্দার-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। নিখিলবাবুও পাল্টা অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বারাসত থানা সূত্রের খবর, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সোমনাথ-সহ দশ জনকে গ্রেফতার করেছে। তৃণমূল নেতা নিখিল দাসকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.