|
|
|
|
সঙ্কটে প্রান্তিক পরিবহণ |
সরকারি নির্দেশিকার গেরোয় অটোর অনুমতি মিলছে না |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পরিবহণ ব্যবস্থায় গতি আনতে প্রয়োজন রয়েছে অটো রিকশার। অভিযোগ, সরকারি নিয়মের গেরোয় নতুন অটো চালানোর অনুমতি মিলছে না।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অটো চালানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম চালু করেছে সরকার। তার মধ্যে প্রধান দু’টি শর্ত হল, অটো গ্যাস চালিত হতে হবে এবং বাস রুটের ৩০ শতাংশের মধ্যে অটোর রুট সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় নতুন অটো নামানোর ক্ষেত্রে চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেলা পরিবহণ আধিকারিক প্রিয়াঞ্জন দাস বলেন, “সরকারি নিয়ম মানতে আমরা বাধ্য।” পরিবহণ বোর্ডের সদস্য প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “মূলত, গ্রামীণ এলাকায় পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নেই এই সিদ্ধান্ত। এ বার আমরা গ্রামীণ এলাকায় বেশি করে অটো চালানোর উপর জোর দেব।”
সূত্রের খবর, প্রধান সমস্যা হচ্ছে গ্যাস চালিত অটোর শর্তে। আগে ডিজেল, পেট্রোল যে কোনও অটো চালানোর জন্যই মিলত অনুমতি। শহরে প্রায় দু’শোর মতো অটোর অনুমতিও মিলেছিল। এ ছাড়াও প্রায় আড়াইশো জন অটো নামানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু, গ্যাস চালিত অটো ছাড়া অনুমোদন দেওয়া যাবে না, এই শর্তে প্রশাসন আগের মতো অনুমতি দিতে পারছে না। যে সব যুবক অটো চালানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন তাঁদের কথায়, “গ্যাস চালিত অটোর ক্ষেত্রে নানা সমস্যা আছে। এমনটা চললে অটো কেনার পরিবর্তে অন্য কিছু ভাবতে হবে।” কী সমস্যা?
তাঁরা জানিয়েছেন, গ্যাসচালিত অটোর ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি। এ ছাড়াও শহরে মাত্র একটি গ্যাস পাম্প রয়েছে। মেদিনীপুর শহরের স্টেশন বা রাঙামাটি এলাকায় যে অটো চলে, কিংবা জগন্নাথমন্দির, জজকোর্ট এলাকায় যে অটো চলে সেই সব অটোকে শুধু গ্যাস ভরতেই যেতে হবে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু, তেল হলে সে সমস্যা নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আবেদনকারীর কথায়, “৫ টাকার পরিবর্তে ৬ টাকা ভাড়া চাইলেই যাত্রীরা ঝগড়া শুরু করে দেন। গ্যাস চালিত অটো চালাতে হলে উঠলেই দশ টাকা ভাড়া করতে হবে। কে ওই টাকা দেবে?”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার নিরিখে চিন্তাভাবনা করে সরকার এই নির্দেশিকা জারি করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই কলকাতা আর জেলার সমস্যা এক রকম না হওয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। এমনকী বাস রুটে ৩০ শতাংশ রাস্তায় অটো চালানোর সরকারি সিদ্ধান্তেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে শহরে। শহরের মধ্যে পরিবহণ ব্যবস্থা বলতে রিকশা বা অটো। বাস চললেও তা শুধু শহরের মধ্যে চলে না। গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য শহরের কোনও কোনও রাস্তা দিয়ে বাসগুলি চলাচল করে। বাস আবার সর্বত্র দাঁড়ায় না। কিন্তু হাত দেখালেই দাঁড়িয়ে যায় অটো। ফলে ধর্মা থেকে কেরানিচটি, স্টেশন থেকে শরৎপল্লি হয়ে কাঁসাই নদী-সহ বহু এলাকাতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকী শহর থেকে নয়াগ্রাম, মোহনপুর, পাথরা অর্থাৎ যে সব রুটে বাস চলে না, অন্য পরিবহণ ব্যবস্থাও দুর্বল অথচ সেই সব এলাকার ১০-১২টি গ্রামের মানুষকে নিয়মিত নানা কাজে শহরে আসতে হয়, সমস্যায় পড়ছেন তাঁরাও। পরিবহণ বোর্ডের সদস্য প্রদ্যোৎবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, “সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করা হবে। গ্রামীণ এলাকার মানুষকে শহরে আসার জন্য উন্নত পরিবহণ দিতে প্রয়োজনে পরিবহণ মন্ত্রকের সঙ্গেও আলোচনা করব।” |
|
|
|
|
|