জীবনবিমা, সাধারণ বিমা কিংবা মিউচুয়াল ফান্ড। এক জন এজেন্টকেই সব রকম প্রকল্প বেচার অনুমতি দিতে দীর্ঘ দিনই দরবার করছেন বিমা ও ফান্ড সংস্থার কর্তারা। তাঁদের দাবি, এতে শুধু কমিশনের কথা চিন্তা না করে গ্রাহকের চাহিদা মাফিক প্রকল্প কেনার পরামর্শ দেবেন এজেন্টরা। তাতে গ্রাহক যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই লাভবান হবে শিল্পও। এ বার তাঁদের সেই দাবি অন্তত আংশিক ভাবে মেনে নিল বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ। জানিয়ে দিল, স্বাস্থ্য বিমা বিক্রি করতে পারবেন জীবনবিমা ও সাধারণ বিমার এজেন্টরাও। তবে সে ক্ষেত্রে যে সব সংস্থা শুধুমাত্র স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পই বিক্রি করে, তাদেরই এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে হবে তাঁদের। বেচা যাবে না একাধিক সংস্থার স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পও।
এমনিতে স্বাস্থ্য বিমা সাধারণ বিমারই অঙ্গ। কিন্তু দেশে তার প্রসার যেন দ্রুত ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই বিমা নিয়ন্ত্রক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। এখনও জীবনবিমা এজেন্টের মাধ্যমে প্রকল্প বিক্রি করতে পারে শুধু মাত্র স্বাস্থ্যবিমা বেচা কোনও সংস্থা। কিন্তু সে জন্য লাগে আলাদা শংসাপত্র। নতুন নিয়মে তা আর লাগবে না।
বিভিন্ন রকম প্রকল্প বেচতে আলাদা-আলাদা এজেন্ট ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার জন্য সওয়াল করার পিছনে যুক্তি ছিল, উপযুক্ত বিপণন পরিকাঠামোর অভাবই দেশে বিমা ব্যবসার অগ্রগতির প্রধান অন্তরায়। অবশ্য তাঁদের সেই দাবি মানতে চাননি অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। বরং এ জন্য ভুল বুঝিয়ে প্রকল্প বিক্রি ও উপযুক্ত প্রকল্পের অভাবকেই দায়ী করেন তিনি।
কিন্তু বিমা কর্তাদের দাবি, বাজারে ভাল প্রকল্পের অভাব নেই। অভাব গ্রাহক সচেতনতার। সেই বাধা কাটাতেই একই লাইসেন্সের ভিত্তিতে এজেন্ট বা ব্রোকারদের মিউচুয়াল ফান্ড ও বিভিন্ন ধরনের বিমা প্রকল্প বিক্রির অনুমোদন পাওয়াতে এত তৎপর তাঁরা।
বজাজ-অ্যালায়েঞ্জের এমডি ও সিইও তপন সিঙ্ঘেল বলেন, এ জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। এখন ওই দু’ধরনের প্রকল্প বিপণনের জন্য বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি ও আই আর ডি এ-র কাছ থেকে পৃথক পৃথক লাইসেন্স নিতে হয়। বিমা কর্তাদের আর্জি, একটি থাকলেই, ওই দুই প্রকল্প বিক্রির অনুমতি দেওয়া হোক।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য খণ্ডন করে তপনবাবু বলেন, “উপযুক্ত প্রকল্পের অভাব নেই। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সে বিষয়ে গ্রাহকেরা অবহিত নন। তাই বিপণন ও বিক্রির পরিকাঠামো সম্প্রসারণ জরুরি। মিউচুয়াল ফান্ড এবং বিমা প্রকল্প একই ব্যক্তির মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করা গেলে, বিমা গ্রাহকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ানো সম্ভব।” এতে ভুল বুঝিয়ে প্রকল্প বিক্রির প্রবণতাও কমবে বলে বিমা সংস্থাগুলির দাবি। |