ফের হরতালের ডাক মৌলবাদীদের, ফের তা প্রতিরোধের আহ্বান শাহবাগের। সপ্তাহখানেক আগে জামাতে ইসলামির ডাকা হরতাল রুখে দিয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ। এ বার গোল বেঁধেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এই হরতালের পক্ষে দাঁড়িয়ে যাওয়ায়। ফলে বড় হয়ে উঠেছে এই প্রশ্ন, কী হবে রবিবার? নিষিদ্ধ হওয়ার গন্ধ পেয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে মৌলবাদীরা। আর তাদের এই মরণ-কামড় প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে পিছু হটে যাবে শাহবাগের লড়াই, যা আজ পরিণত হয়েছে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গঠনের যুদ্ধে।
কাল দুপুরের পরে জামাতে ইসলামির বন্ধু ১২টি কট্টরপন্থী দলের অতর্কিত হামলায় গোটা দেশে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। রবিবার তারা হরতালের ডাকও দেয়। শাহবাগের আন্দোলনে রাজাকারদের ফাঁসি ও মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবি যখন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, পাল্টা শক্তি প্রদর্শনের জন্যই তখন ভাঙচুর- হাঙ্গামার পথ নেয় মৌলবাদীরা। কিন্তু এই হামলার পরে ১৮ দিনের দোলাচল কাটিয়ে মৌলবাদীদেরই পক্ষে দাঁড়িয়ে গেল বিএনপি। কালই তারা ‘পুলিশি হামলার নিন্দা’ করে গ্রেফতার হওয়া হাঙ্গামাকারীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছিল। আজ তারা সরাসরি তাদের হরতালকে সমর্থন করায় বিস্ফোরক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে। এ দিনও পুলিশের সঙ্গে মৌলবাদীদের সংঘর্ষে পাবনায় দু’জন মারা গিয়েছেন। |
কী করবে সরকার? জরুরি অবস্থা জারির কথা কি ভাবা হচ্ছে?
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, “কখনওই না। স্বাধীনতা-বিরোধীদের হাঙ্গামা ঠেকাতে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে সরকারের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। দরকারে বিজিবি-র মতো আধাসামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হবে। কিন্তু জরুরি অবস্থা জারির কথা বিবেচনা করা হচ্ছে না।” ইনুর দাবি, শুক্রবার মৌলবাদীরা অতর্কিত হামলা চালানোতেই তা প্রতিরোধ করা কষ্টকর হয়েছিল। কিন্তু সর্বত্র নিরাপত্তা বাহিনী দারুণ কাজ করেছে। বামপন্থী এই নেতা বলেন, “আগের হরতাল মানুষই রাস্তায় নেমে ব্যর্থ করেছিলেন। এ বারও তাই হবে। প্রশাসন পাশে থাকবে।” তথ্যমন্ত্রীর কথায়, বাংলাদেশে এখন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বা বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের মতো আবেগ তৈরি হয়েছে। বিরোধিতা করে আর সুবিধা হবে না। তিনি বলেন, “মানুষ বুঝে গিয়েছেন, এই লড়াইয়ে পরাজয়ের অর্থ তালিবানের হাতে দেশকে তুলে দেওয়া। ইসলাম আর তালিবান এক নয়।”
বিএনপি-র মহাসচিব ফখরুল মির্জা কিন্তু শাহবাগের আন্দোলনকে ‘সরকারি বিক্ষোভ’ বলেই অভিহিত করেছেন। তাঁর কথায়, শাহবাগের শাক দিয়ে অপশাসনের মাছ ঢাকতে চায় আওয়ামি লিগ। এ জন্যই কালকের হরতালকে তাঁরা সমর্থন করছেন। জামাতে ইসলামিও হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে। তবে সব ইসলামি সংগঠন যে জামাতকে সমর্থন করে না, তা দেখাতেই ২৩ মার্চ ঢাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল ইসলামি জোট। জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক অঙ্গীকার পূরণ করে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার ডাক দিয়েছে পীর-মাশায়েকদের এই সংগঠন।
কাল মৌলবাদীদের নিশানা ছিল বিভিন্ন শহর-গ্রামে শাহবাগের সমর্থনে গড়ে ওঠা গণচেতনা মঞ্চগুলি। বহু জায়গায় সেই মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি ভাষা শহিদ মিনার ও তার মাথায় উত্তোলিত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাও ছিঁড়ে-ভেঙে দেয় মৌলবাদীরা। তার প্রতিবাদে আজ দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা হাতে মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন শাহবাগ আন্দোলনের সংগঠকরা। শাহবাগের অবস্থানকারীরা রায়ের বাজারে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতি সৌধের পাশে বড় সমাবেশ করে মৌলবাদী দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
|
বাস দুর্ঘটনায় মৃত ১৯
সংবাদসংস্থা • ইসলামাবাদ |
বাস দুর্ঘটনায় মারা গেলেন কমপক্ষে ১৯ জন। আহত আরও ৮। ঘটনাটি পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার মিনিবাসে করে বিয়েবাড়ির লোকজন যাচ্ছিলেন। তখনই বাসটি উল্টে পড়ে যায় খালে। উদ্ধারকারীরা তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করে ১৯ জনের দেহ। তবে এখনও অনেকেই নিখোঁজ। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি। |