মাওবাদী অভিযোগে ধৃত
আড়াই বছর জেল খেটে বেকসুর খালাস ৭
ঙ্গলমহলের নিরীহ বাসিন্দাদের মাওবাদী তকমা দিয়ে ধরপাকড় করার অভিযোগ বারবারই উঠেছে। শুক্রবার বাঁকুড়া আদালত আড়াই বছর আগে মাওবাদী নাশকতার ছক কষার অভিযোগে ধৃত তেমনই সাত জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেওয়ায়, ফের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (১) নবনীতা রায় ওই নির্দেশ দেন। চার জন এ দিনই মুক্তি পান। বাকি তিন জন অন্য একটি মামলায় অভিযুক্ত থাকায় এ দিন
ছাড়া পাননি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রানিবাঁধ থানার মিঠাআম গ্রামের (যেখানে বাড়ি আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেতা রাজারাম সোরেনের) কমল মুর্মু, সত্যলাল টুডু, বসন্ত মুর্মু, তুলসিয়া গ্রামের শ্যামাপদ মাহাতো, জামদাহা গ্রামের সারদাপ্রসাদ কিস্কু, বারিকুল থানার হিজলি গ্রামের কিঙ্কর পাল এবং বেলপাহাড়ি থানার ভুলবেদ্যা গ্রামের ভৈরব মান্ডিদের মাওবাদী সন্দেহে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই বছর ২৮ নভেম্বর পুলিশ আদালতে চার্জশিট দিয়ে জানায়, ভৈরব, শ্যামাপদ ও সত্যলাল ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বারিকুলের বারোমাইলের জঙ্গলে বসে গোপন বৈঠক করে নাশকতার ছক কষছিলেন। অভিযান চালিয়ে তাঁদের কাছ থেকে গুলিভর্তি একটি ৯ এমএম পিস্তল, মাওবাদীদের কিছু বই ও পোস্টার মেলে। ওই তিন জনকে জেরা করে বাকিদের ধরা হয়। ধৃতেরা এত দিন ছিলেন জেলবন্দি।

বাঁকুড়া আদালত চত্বরে ছাড়া পাওয়া চার যুবক। নিজস্ব চিত্র
এ দিন মুক্তি পান কমল, বসন্ত, সারদাপ্রসাদ ও কিঙ্কর। সকলেরই বয়স তিরিশের আশপাশে। ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী সায়ন্তন চৌধুরী বলেন, “সাত জনকেই নির্দোষ ঘোষণা করে বেকসুর খালাস করেন বিচারক। তিনি ওঁদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।” বাকি তিন জন অন্য মামলাটিতে জামিন পেলেও বন্ডের নথি সংক্রান্ত কিছু জটিলতায় এ দিন মুক্তি পাননি বলে সায়ন্তনবাবু জানান। বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) রিনা চক্রবর্তী বলেন, “উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে ওঁরা বেকসুর খালাস পেয়েছেন।”
আড়াই বছর জেলবন্দি থাকার যন্ত্রণা ভুলতে পারছেন না এই সাত জন। বসন্ত মুর্মুর দাবি, “ঘটনার দিন মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে ছিলাম। সঙ্গে গাড়ির বৈধ কাগজপত্র না থাকায় পুলিশ ধরে। পরে ওরা আমাকে মাওবাদী সাজিয়ে দিল। আমার কথা কেউ বিশ্বাস করল না।” একই অভিযোগ করেছেন ভৈরব ও কিঙ্কর। সারদাপ্রসাদ বলেন, “এক রাতে পুলিশ এসে গ্রামের রাস্তা চেনানোর জন্য আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। বের হতেই জিপে তুলে নিয়ে গিয়ে থানার ফাটকে পুরে মাওবাদী সাজিয়ে দিল।”
এ বার তাঁরা শান্তিতে বাঁচতে চান। তবু তাঁদের আশঙ্কা, “পুলিশের অন্যায়ের জন্য আমরা মাওবাদী তকমা পেয়েছি। বাড়ি ফিরলে পুলিশ ফের অত্যাচার করবে না, সে নিশ্চয়তা কোথায়?” তাঁদের আর্জি, “আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের রাজ্য সরকার নানা সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। আর আমাদের কোনও দোষই ছিল না। সরকার কি আমাদের দেখবে না?” পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সর্ম্পকে বাঁকুড়ার এসপি মুকেশ কুমার বলেন, “আদালতের রায় জানি না। খোঁজ নিতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.