|
|
|
|
তাজা মাইন-এ জঙ্গলমহলে অশনিসঙ্কেত দেখছে পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম ও কলকাতা |
জঙ্গলমহলে মিলল তাজা মাইন। শুক্রবার ভোরে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ায় যৌথ বাহিনীর শিবিরের অদূরে পিচ রাস্তার ধারে স্থানীয় এক বাসিন্দার সৌজন্যে দু’টি ল্যান্ডমাইন উদ্ধার হওয়ার পরে, ওই এলাকায় মাওবাদীদের কার্যকলাপ নিছকই গতিবিধি কিংবা আনাগোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বলেই মনে করছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, মাইন উদ্ধারেই প্রমাণ, মাওবাদীরা যৌথ বাহিনীর উপরে গেরিলা হানার জন্য নতুন ভাবে তৈরি হচ্ছে।
রাজ্য পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ বলেন, “মানিকপাড়ায় যে দু’টি ল্যান্ডমাইন উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলি কিন্তু পুরনো ল্যান্ডমাইন নয়। প্রাথমিক ভাবে আমরা জেনেছি, দিন কয়েক আগেই সেগুলি পোঁতা হয়। মাওবাদীদের মতলব ছিল, যৌথ বাহিনীর গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া।”
তা হলে কি ওই এলাকায় নতুন করে মাওবাদী তৎপরতা বেড়েছে? |
ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ায় উদ্ধার হওয়া মাইন। নিজস্ব চিত্র |
আইজি-র জবাব, “মাওবাদী তৎপরতা ওই এলাকায় কমলেও, একেবারে বন্ধ হয়নি। মাওবাদীদের শক্তি যতই কমে যাক, ওরা একটি বা উপর্যুপরি এ রকম দু’টি ল্যান্ডমাইন ফাটিয়ে যৌথবাহিনীর ক্ষতি করে আমাদের মানসিক ধাক্কা দিতে চাইছে। ওরা ভাবছে এমন করলে আমরা মানসিক ধাক্কা খাব, সেই সুযোগে ওরা চাঙ্গা হয়ে উঠবে।”
মানিকপাড়া-বেলতলা রাস্তায় শিমুলডাঙায় জোড়া মাইনের ওই ফাঁদ পাতা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে মানিকপাড়া পুলিশ বিট হাউস ও সিআরপি-র ক্যাম্প। শিমুলডাঙা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বেলতলায় রয়েছে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ক্যাম্প। ওই পথে নিয়মিত পুলিশ এবং সিআরপি-র গাড়ি যাতায়াত করে।
এ দিন ভোরে জনৈক পথচারী পিচরাস্তার ধারে শুকনো শালপাতা ও ছাই চাপা দেওয়া মাইন দু’টি দেখতে পান। সে দু’টির সঙ্গে সংযুক্ত প্রায় ২০ মিটার লম্বা তার টানা ছিল জঙ্গলের গভীরে গাছের আড়াল পর্যন্ত। পুলিশের ধারণা, সেখান থেকে ফ্ল্যাশগান বা মোবাইল দিয়ে তারের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহ পাঠিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক ছিল মাওবাদীদের।
বছর দু’য়েক আগে বেলতলা-মানিকপাড়ার এই রাস্তায় জোড়া মাইন পুঁতেছিল মাওবাদীরা। সে বারও পুলিশ খবর পেয়ে যাওয়ায় শেষমেশ কোনও অঘটন ঘটেনি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কিছু দিন আগেই জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর উপরে নতুন করে হামলা চালানোর বিষয়ে মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশন নতুন বছরের গোড়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গে সম্প্রতি রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, জঙ্গলমহলে এখনও মাওবাদীদের পোঁতা ল্যান্ডমাইন-ই প্রধান বিপদ। লালগড় আন্দোলন ও তার পরবর্তী সময়ে কিষেণজির মৃত্যু পর্যন্ত মাওবাদীরা অসংখ্য ল্যান্ডমাইন পুঁতেছিল এবং তার একটা বড় অংশ এখনও উদ্ধার হয়নি বলে পুলিশই স্বীকার করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে মাওবাদীরা নতুন ল্যান্ডমাইন পুঁতছে বলেও গোয়েন্দারা জানতে পারেন।
বৃহস্পতিবারই নয়াগ্রাম থানার বাছুরখোঁয়াড়ের জঙ্গল রাস্তার ধারে মাটিতে পোঁতা দু’টি মাইন উদ্ধার করেছিল পুলিশ। |
|
|
|
|
|