পনেরো বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ রাজ্য সরকার কতটা কাযর্কর করছে, সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইল আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ এর আগেও এই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য জানিয়ে যে হলফনামাটি পেশ করা হয়, তাতে বিচারপতিরা খুশি হননি, উল্টে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। কারণ ওই হলফনামায় জানানো হয়েছে, পনেরো বছরের পুরনো গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির কাছে নোটিস পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে একটি নোটিস জারি হয়েছে বৃহস্পতিবার।
শুক্রবার বিচারপতি জানান, কবে নোটিস জারি হয়েছে তা জানানোর প্রয়োজন নেই। বরং আদালতের নির্দেশ রাজ্য সরকার কতটা কার্যকর করেছে, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য চায় আদালত। এই নির্দেশের সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানায়, আদালতের আদেশ যদি কাযর্কর করা না হয়, তা হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের আদালতে হাজির করা হবে।
২০০৮ সালে ১৫ বছরের গাড়ি বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি আদালত মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের নজরদারি কমিটি গঠন করে দেন। বায়ুদূষণ সংক্রান্ত এই জনস্বার্থ মামলাটি যিনি করেছেন সেই পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জানান, ওই কমিটি শহরে গাড়ির দূষণের উপরে নজর রাখবে এবং মাঝেমাঝে আদালতে সেই ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দেবে। কিন্তু প্রায় ৫ বছর হয়ে গেলেও কমিটি আদালতে কোনও রিপোর্ট জমা দেয়নি। এর পরে ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, ওই কমিটি আদৌ তৈরি হয়েছিল কি না, হয়ে থাকলে তা এখনও সক্রিয় কি না। কমিটি কোনও রিপোর্ট তৈরি করে থাকলে, তা পেশ করার নির্দেশও দেয় আদালত।
গাড়ির জ্বালানি তেলের ভেজাল ধরার জন্য রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা-ও জানতে চেয়েছিল আদালত। রাজ্য সরকারের পক্ষে পরিবহণ সচিব শুক্রবার যে হলফনামা পেশ করেছে সেখানে জানানো হয়েছে, ভেজাল তেল ব্যবহার করছে কি না, তা জানার জন্য গাড়ির মালিক এবং চালকের কাছ থেকে তেল কেনার রসিদ নিয়ে খতিয়ে দেখছেন পরিবহণ দফতরের অফিসারেরা। এর পরেও বিচারপতি নির্দেশ দেন, ভেজাল তেল ধরার অভিযান চালানোর যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা কতটা সক্রিয় ভাবে কার্যকর হচ্ছে, সেই ব্যাপারেও নির্দিষ্ট তথ্য জানতে চায় আদালত। |