সিনেমা সমালোচনা...
তিনটি চরিত্রের অভিনয়ই শুধু দেখার
কিছু কিছু গল্প বা উপন্যাস আছে, যেগুলো সব সময়ই সমসাময়িক। তবে সেই সব কাহিনি থেকে সিনেমা তৈরি করলে, সেই সিনেমা যে সফল হবে, তার কোনও গ্যারান্টি নেই।
এমনিতে প্রকাশিত গল্প থেকে ছবি তৈরি করাটা অসুবিধার। গল্প আর সিনেমা। আলাদা মাধ্যম, প্রকাশভঙ্গিও আলাদা। সেটাই জরুরি। দিব্যেন্দু পালিতের ‘ত্রাতা’ নব্বইয়ের দশকে লেখা হলেও আজও তা ভীষণ ভাবে সমসাময়িক। এক ভীরু মধ্যবিত্ত মানুষের পাড়ার মস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ।
সেই গল্প অবলম্বনেই তৈরি ‘নামতে নামতে’। কিন্তু গল্প আর সিনেমা এই দুটি আলাদা মাধ্যমের ব্যবধান দূর করতে পারেননি পরিচালক রাণা বসু। চেষ্টা অবশ্যই করেছেন। গল্প হিসাবে ‘ত্রাতা’র প্লট বেশ সরলরৈখিক। লিখিত মাধ্যমে সেটা কোনও অসুবিধার নয়। কিন্তু ফিচার ছবি হওয়ার মাল-মশলা তাতে নেই। আর সিনেমা তো শুধু প্লটকেন্দ্রিক হলে চলে না। চরিত্র আর ডিটেলও সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নামতে নামতে
রূপা, শাশ্বত, রজতাভ
চিত্রনাট্যকার অদিতি মজুমদার আর পরিচালক রাণা বসু সেটা জানেন। সেই মতো চেষ্টার ত্রুটি করেননি। তবে সেটা চেষ্টার পর্যায়েই থেকে গিয়েছে। পর্দায় প্রতিফলিত হয়েছে খুব কম। ছবির ক্লাইম্যাক্স চমৎকার, কিন্তু এতটা সময় জুড়ে তার বিস্তার, গল্পটা না পড়া দর্শকও বুঝতে পেরে যাবে ততক্ষণে।
ছবির প্রশংসনীয় দিক হল তিন মুখ্য চরিত্রের অভিনয়। মধ্যবিত্ত ভীরু কেরানি আনন্দবাবুর চরিত্রে রজতাভ দত্ত, আনন্দবাবুর স্ত্রী সীমার ভূমিকায় রূপা গঙ্গোপাধ্যায় আর পাড়ার দাদা টোটা ওরফে গণেশ হালদারের চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।
তিন জনই অসাধারণ। আনন্দবাবু পেশায় কেরানি। আচরণে শান্তিপ্রিয়। তবে সেটা তাঁর মাহাত্ম্য নয়, ভীরুতা। তা এমনই পর্যায়ের যে পুজোর হাজার টাকা চাঁদা দিতে না চাওয়ায় পাড়ার ক্লাবের ছেলেদের হাতে মার খান, পরে সেই টাকা দিয়েই সন্ধি করেন তাদের সঙ্গে। এমনকী মেয়ের টিউটরের জন্যও তাদেরই শরণাপন্ন হন। যদিও মুখে “মানুষের মর্যাদা গেলে কী থাকে?” গোত্রের বুলি ঝুলিয়ে রাখেন। রজতাভ দত্ত এ চরিত্রে অনবদ্য।
রূপা গঙ্গোপাধ্যায় স্বাভাবিক অভিনেত্রী। এই সময়কার অন্যতম সেরা অভিনেত্রী তো বটেই। বাস্তববোধ সম্পন্ন সীমার চরিত্রে তাঁর অভিনয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা সেই স্বাভাবিক ছন্দেরই প্রকাশ।
‘কহানি’, ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ থেকে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মস্তান-খুনির তকমাটা লেগে গিয়েছে। কিন্তু ‘নামতে নামতে’ ছবিতে তার কোনও প্রভাব নেই। এখানে তিনি বরং গডফাদারের ‘করলিওনে’ পরিবারের একজন। ভদ্র, মার্জিত, রয়েল এনফিল্ড চালানো পাড়ার দাদা।
ছবির আর এক সম্পদ হতে পারত গান। সিদ্ধার্থ রায় (ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিধু) সঙ্গীত পরিচালক। অনেক গানই সুন্দর। বিশেষ করে টাইটেল ট্র্যাক, মির আর ব্যান্ডেজের গাওয়া ‘হে কাল্লু’, রূপঙ্করের ‘আয় ঘুম যায় ঘুম’। তবে কিছু গান ছবি থেকে বাদ দিয়ে শুধু মিউজিক সিডিতে থাকলেই ভাল হত।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.