|
|
|
|
হলদিয়ায় এবিজি বিদায়ের জের |
ঢিমেতালে পণ্য খালাস, অপেক্ষায় ২১টি জাহাজ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের জঙ্গি আন্দোলনের জেরে এবিজি সংস্থা পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গিয়েছে মাস তিনেক হল। কিন্তু হলদিয়া বন্দরের ঘাড় থেকে এবিজি-র ভূত যেন আর নামছেই না!
জাহাজে মালপত্র ওঠানো-নামানোর জন্য এবিজি-র বিকল্প কোনও সংস্থা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ হচ্ছে না হলদিয়ায়। মালপত্র খালাসের প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে গিয়েছে। তাই ওই বন্দরে আসা জাহাজগুলিকে দীর্ঘ ক্ষণ আটকে থাকতে হচ্ছে। বন্দরে জাহাজ ঢোকা বা বেরোনোর হারও কমে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, বার্থ না-পাওয়ায় বৃহস্পতিবার ২১টি পণ্যবাহী জাহাজকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় মোহনায়। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, অনেক জাহাজই ধামড়া বা বিশাখাপত্তনমে চলে যেতে পারে বন্দর সূত্রের খবর।
পণ্য খালাসে এই দুরবস্থা কেন?
দায় চাপানো হচ্ছে সেই এবিজি-র উপরেই। হলদিয়া বন্দর সূত্রে বলা হয়, এবিজি-র সরঞ্জাম (মোবাইল হারবার ক্রেন) এখনও পড়ে রয়েছে দুই আর আট নম্বর বার্থে। তাই ওই দু’টি বার্থে মালপত্র ওঠানো-নামানোর কাজ পুরোপুরি বন্ধ। এবিজি-র ক্রেন না-সরলে ওই দু’টি বার্থে জাহাজ ঢুকতে পারবে না। কিন্তু পণ্য খালাসকারী বিভিন্ন সংস্থা বন্দর-কর্তৃপক্ষের এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নয়। পণ্য খালাসকারী একটি সংস্থার এক প্রতিনিধি জানান, এবিজি যখন কাজ করত, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ওই দু’টি বার্থে রোজ ৪০ হাজার টন পণ্য খালাস করা যেত। সেখানে এখন অন্য ১২টি বার্থ মিলিয়ে দিনে গড়ে ৭৫ হাজার টন পণ্য খালাস হচ্ছে। তাই দু’টি বার্থ আটকে থাকায় পণ্য খালাসের পরিমাণে খুব একটা হেরফের হওয়ার কথা নয়। তবে এবিজি-র বিকল্প কোনও সংস্থা খুঁজে বার করতে না-পারলে হলদিয়া বন্দরের এই সঙ্কট কাটবে না।
বন্দর-কর্তৃপক্ষ বিকল্প সংস্থার সন্ধান করছেন না কেন?
এক বন্দরকর্তা বলেন, দুই এবং আট নম্বর বার্থে মোবাইল হারবার ক্রেন নিয়ে কারা কাজ করার জন্য বিশ্ব-দরপত্র ডাকা হয়েছিল। কয়েকটি সংস্থা দরপত্র দিয়েছে। কিন্তু তার পরে কাজ আর তেমন এগোয়নি।
ওই দু’টি বার্থে কবে ফের পণ্য খালাস শুরু হবে, বন্দরকর্তারা তা বলতে পারছেন না। এক বন্দরকর্তা জানান, নতুন দরপত্র অনুযায়ী কোনও সংস্থাকে কাজ না-দেওয়া হচ্ছে পর্যন্ত সমস্যা মিটবে না। তিনি বলেন, “এবিজি-কে সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ওই সব সরঞ্জাম সরলে মালপত্র খালাসের গতি সামান্য বাড়তে পারে। এ ছাড়া আর কোনও উপকার হবে না।”
অপেক্ষা করতে করতে কিছু জাহাজ যে অন্য বন্দরে চলে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলছে, তার কী হবে? বন্দর সূত্রে বলা হয়, গত সপ্তাহেই এক দিন মোহনায় ২৯টি জাহাজ সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আর বৃহস্পতিবার মোহনায় দাঁড়িয়ে থাকা ২১টি জাহাজের মধ্যে ১২টিই এসেছে নির্দিষ্ট সময়ের থেকে অনেক দেরি করে। ফলে তাদের আগে অন্য কিছু জাহাজ ঢুকে পড়েছে বন্দরে। আবার কোনও কোনও জাহাজ ঢুকতে পারছে না নাব্যতার সমস্যার জন্য। |
|
|
|
|
|