প্র্যাক্টিসে চমক। শনিবার বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় টিমের প্র্যাক্টিসে কয়েক জন ক্রিকেটারকে দেখা গেল বিশেষ ধরনের মুখোশ পরে অনুশীলন করছেন। জানা যাচ্ছে, এই মুখোশ আমদানি করেছেন টিমের ট্রেনার রামজি শ্রীনিবাসন। এই মুখোশ পরলে শরীরে অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা কমে যায়। উঁচু জায়গায় খেলতে গেলে বা ট্রেনিং করতে নামলে যে সমস্যায় ভোগেন প্লেয়াররা। এই মুখোশ ব্যবহার করলে শরীরের সহ্যক্ষমতা বেড়ে যায়, ফুসফুসও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যেটা হয় ‘হাই অল্টিচিউড ট্রেনিং’-এর ক্ষেত্রে। ভারতীয় শিবিরের খবর হল, সব ক্রিকেটার এখনও এ ধরনের মুখোশ ব্যবহার করছেন না।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে এ ধরনের ট্রেনিং শুরু কেন? তা হলে কি দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন সফরের কথা মাথায় রেখে আগে থেকেই তৈরি হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া? পরিষ্কার কোনও জবাব এখনই পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ময়দানের অভিজ্ঞ ফিজিক্যাল ট্রেনারদের সঙ্গে কথা বলে একটা জিনিস পরিষ্কার। এই ট্রেনিংয়ে অভিনবত্ব আছে ঠিকই, কিন্তু কতটা সাফল্য দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। |
বাংলা দল থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত ট্রেনার হিসাবে যিনি ময়দানে পরিচিত, সেই চিন্ময় রায় বলছিলেন, “আমি জিনিসটা চাক্ষুস দেখিনি। তাই বলতে পারছি না কতটা কার্যকর হবে। কিন্তু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কার্ডিও ভাসকুলার ট্রেনিং দু’ এক দিনে সারা যায় না। টানা সাত -আট দিন করতে পারলে তবেই প্লেয়াররা উপকৃত হয়। এ ভাবে মুখোশ ব্যবহার করে কত দূর লাভ হবে, এখনই ঠিক বলতে পারছি না।” এর পরে কঠিন বিদেশ সফর দক্ষিণ আফ্রিকা। তার জন্য কি এত দিন আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে? চিন্ময় ঠিক নিশ্চিত নন।
ময়দানের এক বিদেশি ফিজিক্যাল ট্রেনারের কাছেও এ ধরনের মুখোশ একেবারে নতুন। প্রয়াগ ইউনাইটেডের ব্রাজিলীয় ফিজিক্যাল ট্রেনার জার গার্সিয়া সব শুনে বলছিলেন, “আমি কোনও দিন এ ধরনের মুখোশের কথা শুনিনি। ফুটবলে এ ধরনের মুখোশ কোথাও ব্যবহার হয়েছে বলে জানি না। আপনি তো ক্রিকেটের কথা বলছেন। ক্রিকেট দুনিয়ায় এ ব্যাপারটা আগে হয়েছে কি না বলতে পারব না।”
কিন্তু একজন পেশাদার ট্রেনার হিসাবে আপনার কী মত? এ ধরনের মুখোশ ব্যবহার করলে কি শারীরিক সক্ষমতা বাড়তে পারে? গার্সিয়ার জবাব, “ক্রিকেটে বাড়লেও বাড়তে পারে। আমি যতটুকু ক্রিকেট দেখেছি, তাতে ওদের খুব একটা দৌড়তে দেখিনি। এই বল করছে, এই বল ধরছে, ছুড়ছে এই সব। কিন্তু ফুটবলের ট্রেনিংয়ের ধরনটাই আলাদা। ফুটবলারদের প্রয়োজনীয়তাও অন্য ধরনের। সেখানে এ রকম মুখোশ ব্যবহার করলে কাজ দেবে বলে মনে হয় না।”
|
এলিভেশন ট্রেনিং মাস্ক |
অনেকটা গ্যাস মাস্কের মতো দেখতে এই মুখোশ ট্রেনারদের কাছে পরিচিত ‘এলিভেশন ট্রেনিং মাস্ক’ বলে। সাধারণত মাউন্টেন ক্লাইম্বিং বা এক্সট্রিম স্পোর্টসের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরাই ট্রেনিংয়ে এই ধরনের মুখোশ ব্যবহার করেন।
|
মুখোশ ব্যবহারে কী লাভ |
• ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কারণ ফুসফুসকে ৯ গুণ বেশি খাটতে হয় অক্সিজেন নিতে।
• এনার্জি বেড়ে যায়।
• মানসিক এবং শারীরিক স্ট্যামিনা বেড়ে যায়।
• মনকে বেশি ফোকাসড রাখা যায়। |
|