• বেজিং/পিয়ংইয়ং • উত্তর কোরিয়া মিসাইল রকেট উৎক্ষেপণ করেছে গত মঙ্গলবার। এটা তাদের তিন নম্বর উৎক্ষেপণ পরীক্ষা। সঙ্গে সঙ্গে উত্তাল গোটা বিশ্ব। ‘গোটা বিশ্ব’ কথাটা আক্ষরিক ভাবেই ঠিক, কেননা অন্যান্য সময় এই ধরনের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেখায় পশ্চিমি দেশগুলো, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ইত্যাদি। এই বার কিন্তু আশ্চর্য কাণ্ড, এদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছে চিনও। বেজিং-এ ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া (ডিপিআরকে)-র প্রতিনিধি জি জেন রায়নকে ডেকে পাঠিয়ে প্রভূত ভর্ৎসনা করেছে চিনা সরকার। বলেছেন: এ আবার কী? আন্তর্জাতিক কমিউনিটি এত করে বলছে যে কথা, সেটা এ ভাবে অমান্য করছ তোমরা? চিনের মুখে এমন বাধ্যতার বাণী? ভাবা যায় না! চিনই না মানবাধিকার ইত্যাদি নানা প্রশ্নে আন্তর্জাতিক কমিউনিটি-র যাবতীয় বাণীর মুখে ছাই দিয়ে চলে আসছে মহাদর্পে, মহাপরাক্রমে?
ব্যাপারটা আরওই ভাবা যায় না এই কারণে যে, উত্তর কোরিয়ার ‘মিত্র’ বলতে এই পৃথিবীতে যদি কেউ থাকে, তবে সেটা এই চিন-ই। কমিউনিস্ট শাসনের সূত্রেই এই দীর্ঘ মৈত্রী। উত্তর কোরিয়ার বিবিধ কাজেকর্মে বিরক্ত হয়ে মার্কিন সরকার যতই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার বোঝা চাপায়, ততই চিন দয়াপরবশ হয়ে পড়ে তার প্রতি। আবার অন্য দিকে মার্কিন-অনুগ্রহে ভরপুর দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত নিয়ে যে-ই ঝগড়া পেকে ওঠে, ততই পিয়ংইয়ং-এর পাশে এসে দাঁড়ায় প্রবল পরাক্রান্ত বেজিং। সুতরাং এ এক গভীর প্রেমের ইতিহাস। কিন্তু প্রেমও চিরস্থায়ী নয়। বেজিং-এর ধৈর্যসীমাও অতিক্রম করে যেতে বসেছে পিয়ংইয়ং।
পিয়ংইয়ং-এর ভাবটা অবশ্য, আমার মন মেতেছে, তারে আজ থামায় কে রে। বেজিং-কে মুখের উপর বলে দিয়েছে তারা, তিনের পর চার নম্বর, এমনকী পাঁচ নম্বর উৎক্ষেপণের জন্যও তারা একদম তৈরি। লঞ্চপ্যাড তৈরি হচ্ছে আরও ভাল করে। যাই হোক, কোরিয়া উপসাগরের এই ঝঞ্ঝাবিক্ষোভের ফলে অতলান্তিকে বইছে খুশির হাওয়া।
|
• ঢাকা • বাচ্চারা হিন্দিতে ‘ডাব’ করা কার্টুন দেখছে? সর্বনাশ! শেষমেশ মাতৃভাষাই বদলে যাবে নাকি? বাংলার বদলে হিন্দি? আতঙ্কিত বাংলাদেশের সরকার। তাই প্রিয় কার্টুন ডোরেমন-এর সম্প্রচার নিষিদ্ধ হল সে দেশে। ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের নেতা বলেছেন, বাচ্চাদের অনুষ্ঠান এমন হওয়া উচিত, যা থেকে তারা মূল্যবোধ শিখবে, ধর্মীয় শিক্ষা পাবে। তা নয়, ডোরেমন-এ তো শুধু মিথ্যে কথা শেখানো হয়। তা-ও আবার হিন্দিতে! ভাষা নিয়ে বাংলাদেশ অতি সংবেদনশীল, বিশেষত হিন্দির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা বিষয়ে। সে দেশের এক বিরাট অংশের কাছে হিন্দি সিরিয়াল আর ভারতীয় আগ্রাসন মোটামুটি সমার্থক। ভাষা-কেন্দ্রিক রাজনীতির তার চড়ায় বাঁধা। ডোরেমন-এর ওপর তারই কোপ পড়ল। তবে, আশ্চর্য, বড়দের হিন্দি সিরিয়াল এখনও দিব্যি রমরমিয়ে চলছে।
|
ইতিমধ্যেই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব হয়ে গিয়েছেন তিনি, এখনও ৪১ পেরোয়নি। ক্ষুরধার বুদ্ধি আর অত্যুচ্চ মানের কম্পিউটার দক্ষতাকে সম্বল করে এই মানুষটি এখন বিশ্বের সব রাষ্ট্রেরই চোখে প্রথম ও প্রধান শত্রু, রাষ্ট্রের গোপনতম নথিপত্র কী সব অদ্ভুত উপায়ে বিশ্বের হাটে ফাঁস করে দিয়ে, বিভিন্ন রাষ্ট্রকে ভয়ানক সংকটে ফেলে এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ভীতি-উদ্রেককারী ব্যক্তিত্ব। ইনিই উইকিলিকস-এর প্রধান ব্যক্তি: জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে চাইছে বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার জন্য, সুইডেন চাইছে তাঁকে কোনও মতে দেশে এনে দেশান্তর-আজ্ঞা দিয়ে আমেরিকায় ফেরত পাঠাতে, ব্রিটেনেও তাঁর নামে মামলা ঝুলছে। লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন এই বিতর্কিত-তম মানুষটি, এবং সম্প্রতি সেখান থেকেই ঘোষণা করেছেন: অস্ট্রেলিয়ার আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে লড়তে চলেছেন তিনি। তাঁর নতুন দলের নাম কী হবে? কী আবার, উইকিলিকস পার্টি!
নিজে কার্যত বন্দি দশায় থেকেও কী ভাবে নির্বাচনে লড়বেন বলে ভাবছেন তিনি? অস্ট্রেলিয়ার দুটি প্রদেশ নিউ সাউথওয়েলস ও ভিক্টোরিয়ার নিয়ম অনুযায়ী কোনও জন্মসূত্রে অস্ট্রেলীয় ব্যক্তি প্রবাসে থেকেও ভোটদান করতে পারেন। অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলীয়। এই দুটির যে কোনও একটি প্রদেশ বেছে নেবেন তিনি। নিজে ভোট দেবেন, ভোটে দাঁড়াবেন, আর জোগাড় করবেন অন্তত পাঁচশো লোক, যাঁরা তাঁর নতুন দলে যোগদান করবেন। তা হলেই অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন কমিশন এই দলকে নির্বাচনে দাঁড়াতে দেবে। কিন্তু কী হবে তাঁর নতুন দলের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা? এখানেই সবচেয়ে স্পষ্ট, দ্বিধাহীন অ্যাসাঞ্জ। ইন্টারনেট-এর মাধ্যমে তাঁর দল তৈরি করে তুলবে একটা স্বচ্ছতার রাজনীতি, দায়বদ্ধতার রাজনীতি। অন্যান্য রাষ্ট্রীয় দল বা নেতাদের ঠিক যেটার অভাব। অর্থাৎ অ্যাসাঞ্জ নথিপত্র ফাঁস করে যে রাষ্ট্র-বিরোধিতার কাজটি শুরু করেছিলেন, সেটাকেই আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন এখন, বিকল্প রাজনীতি তৈরির মাধ্যমে। |