লুঠপাটে বাধা, দুষ্কৃতীর গুলিতে খুন ব্যবসায়ী
গ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অবাধে তাঁর কারখানা থেকে সোনা ও হিরের গয়নার বাক্স লুঠ করছিল দুষ্কৃতীরা। বাধা দিয়েছিলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ষষ্ঠীচরণ দেব (৫৩)। জাপটে ধরেন এক দুষ্কৃতীকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অন্য দুষ্কৃতীর গুলিতে প্রাণ হারাতে হল ওই প্রৌঢ়কে।
বৃহস্পতিবার রাতে হাওড়ার ডোমজুড়ের ষষ্ঠীতলায় এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন। এলাকায় পর পর কয়েকটি চুরি-ডাকাতির ঘটনায় মানুষের ক্ষোভ জমছিলই। ষষ্ঠীচরণবাবু খুনের ঘটনায় সেই ক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়ে। অভিযোগ, সব অপরাধই থানা থেকে দু’কিলোমিটারের মধ্যে
ষষ্ঠীচরণ দেব
হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে প্রায় সাত ঘণ্টা হাওড়া-আমতা রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীরা। একই দাবিতে আজ, শনিবার ১২ ঘণ্টা ডোমজুড় শহর বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
‘ডোমজুড় রৌপ্য ও স্বর্ণ শিল্পী সমিতি’র সভাপতি ছিলেন ষষ্ঠীচরণবাবু। সমিতির সম্পাদক তরুণ ঘোষ বলেন, “কয়েক বছরের মধ্যে এলাকায় একাধিক দুষ্কতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ কোনও ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেয়নি।” এলাকার অন্যতম স্বর্ণ ব্যবসায়ী অজয় পারুই বলেন, “দুষ্কৃতীদের হামলার আতঙ্কে আমরা ব্যবসার পরিধি ছোট করে নিচ্ছি।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা বলেন, “শুক্রবার ব্যবসায়ীরা দুষ্কৃতী হামলার যে সব অভিযোগ তুলেছেন, তার বেশির ভাগই থানায় জানানো হয়নি। যেগুলির অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত হচ্ছে। ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে দুষ্কৃতীদের ছবি আঁকানো হবে।”
ষষ্ঠীতলায় নিজের পাঁচিল ঘেরা দোতলা বাড়ির একাংশে কারখানা বানিয়েছিলেন ষষ্ঠীচরণবাবু। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জনা চারেক কারিগর সিন্দুকে গয়না তুলছিলেন। পাশের ঘরে ছেলে, বছর ছাব্বিশের শৌভিকের সঙ্গে খাচ্ছিলেন ষষ্ঠীচরণবাবু। জনা সাতেক দুষ্কৃতী পাঁচিল টপকে ঢুকে কারখানার একতলায় এসে দুই কারিগরকে মারধর করে বেশ কিছু গয়নার বাক্স হাতায়। একই ভাবে লুঠপাট চালায় কারখানার দোতলার ঘরেও। শব্দ শুনে ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন ষষ্ঠীচরণবাবু। এক দুষ্কৃতীকে জাপটে ধরতেই অন্য দুষ্কৃতী তাঁর কানে রিভলভার ঠেকিয়ে গুলি চালায়। ষষ্ঠীচরণবাবু লুটিয়ে পড়তেই দুষ্কৃতীরা নিজেদের মোটরবাইকে উঠে চম্পট দেয়। ষষ্ঠীচরণবাবুকে ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। স্বামীর মৃত্যুর কথা শোনার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ষষ্ঠীচরণবাবুর স্ত্রী সবিতাদেবী। তাঁকে আলমপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।
এলাকায় ষষ্ঠীচরণ দক্ষ কারিগর হিসাবে পরিচিত। সোনা-হিরের গয়না বানিয়ে তিনি বহু পুরস্কার পেয়েছেন। কলকাতার প্রথম শ্রেণির গহনার দোকানগুলি থেকে বরাত নিয়ে তিনি কাজ করতেন। বৃহস্পতিবারের ঘটনা নিয়ে শৌভিক বলেন, “কলকাতার দোকানে পাঠানোর জন্য প্রচুর গয়না বানানো হয়েছিল। ডাকাতেরা গয়নার বাক্স নিয়ে পালাচ্ছিল। বাবা একজনকে জাপটে ধরেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.