আচমকা স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষকদের একাংশের অনুপস্থিতি দেখে ক্ষুব্ধ উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া উপস্থিত শিক্ষকদের সতর্ক করে দিলেন। পাশাপাশি, তিনি শিক্ষকদের সুষ্টুভাবে পঠনপাঠন ও মিডডে মিল চালু রাখারও নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ইটাহার গ্রাম পঞ্চায়েতের ভদ্রশিলা নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষকদের একাংশের অনিয়মিত হাজিরার জেরে স্কুলের পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ পেয়ে এদিন জেলাশাসক স্কুলে যান।
জেলাশাসক স্কুলের ক্লাসরুমে ঢুকেই পড়ুয়াদের একাংশকে শিক্ষকদের সামনেই ছুটোছুটি ও হইচই করতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি স্কুলের শিক্ষক ব্রহ্মপদ সরকারের কাছে জানতে চান ক্লাস হচ্ছেনা কেন? তিনি জেলাশাসককে জানান, কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত ক্লাস চলছিল। এরপর জেলাশাসক তাঁর কাছে জানতে চান স্কুলে কতজন শিক্ষক রয়েছেন? বর্তমানে কতজন হাজির রয়েছেন? ব্রহ্মপদবাবু জেলাশাসককে জানান, স্কুলে পাঁচ জন শিক্ষক রয়েছেন। সেইসময় দুইজন হাজির ছিলেন। প্রধান শিক্ষক সহ বাকি তিন জন শিক্ষক স্কুলে আসেননি শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জেলাশাসক ব্রহ্মপদবাবু ও অপর শিক্ষক সুমন আচার্যকে বলেন, “আপনারা সঠিক সময়ে প্রতিদিন স্কুলে এসে পঠনপাঠন ও মিডডে মিল চালু রাখুন। আপনারা প্রায়ই দেরি করে স্কুলে আসেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। এসব বরদাস্ত করা হবে না। বাকি তিনজনকে প্রতিদিন সঠিক সময়ে স্কুলে আসতে বলবেন। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এরপরই জেলাশাসক পড়ুয়াদের কাছে মিডডে মিল নিয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন। সেই স্কুল চত্বর পরিস্কার রাখা, পড়ুয়াদের নিয়ে বাগান করার নির্দেশ দেন দুই শিক্ষককে। তিন শিক্ষকের অনুপস্থিতি বিষয়ে দুই শিক্ষক বলেন, “ব্যক্তিগত কাজে আটকে যাওয়ায় প্রধান শিক্ষক সহ তিন শিক্ষক নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে আসতে পারেননি। তাঁদেরকে জেলাশাসকের নির্দেশের কথা জানিয়ে দেব।” প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় শিলের মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। তবে জেলাশাসক চলে যাওয়ার পরে ওই তিন জন স্কুলে যান বলে স্কুল সূত্রের খবর।
অভিভাবক তথা তৃণমূল নেতা গৌতম পালের অভিযোগ, “রায়গঞ্জে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শিক্ষকদের একটি কর্মশালায় ফাঁকিবাজ শিক্ষকদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন। স্কুলচত্বরও পরিস্কার রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও এই স্কুলের শিক্ষকদের হুঁশ না ফেরায় এদিন আমিই জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানাই।”
প্রাথমিক স্কুলটির ১০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। ক্লাসরুম রয়েছে তিনটি। স্কুলের দুই শিক্ষক জানিয়েছেন, স্কুলের নলকূপটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল। রান্নাঘর ও শৌচাগার বেহাল। সীমানা পাঁচিল ভেঙে গিয়েছে। উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শেখর রায় বলেন, “ওই স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।” |