ক্ষুব্ধ অন্য অস্থায়ী কর্মীরা
মুগ্ধ মমতা, মাইনে বাড়ল মালির
রিপাটি করে সাজানো ফুলের বাগান। যত্নে ছাঁটা গালিচা ঘাসে পা ডুবে যায়। আর চারদিক আলো করে ফুটে থাকা চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, রকমারি গাঁদা। এই কুসুম কাননই মন কাড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। খুশি হয়ে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের অতিথিনিবাসের মালির বেতন বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশেও দেখা দিয়েছে নতুন বিতর্ক। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের ৬৩টি স্থায়ীপদ শূন্য। চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মীদের দিয়েই পর্ষদের কাজ চলছে। মালি রঞ্জন করনের বেতন বাড়ানোর কথা বললেও অস্থায়ী কর্মীদের মুখ্যমন্ত্রী কোনও আশার আলো না দেখানোয় তাঁরা হতাশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মীর কথায়, “বাম আমল থেকেই আর্কিটেক্ট, ইঞ্জিনিয়ার-সহ পর্ষদের গোটা ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৬৩টি পদে কোনও নিয়োগ হয়নি। অস্থায়ী কর্মীরাই বিভাগটি চালাচ্ছেন। অথচ তাঁদের কথা ভাবলেন না মুখ্যমন্ত্রী।”
এ প্রসঙ্গে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অন্য কাজে এসেছিলেন। অস্থায়ী কর্মীদের বিষয়টি তাঁকে জানানোর সুযোগ হয়নি।” তবে পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক সৌমেন পাল জানান, ৬৩টি পদের মধ্যে অনেক পদেই স্থায়ী লোক লাগবে না। জনা পনেরো টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। তাদের নিয়োগের জন্য রাজ্যকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মালি রঞ্জন করণও অস্থায়ী কর্মী। পাঁচ বছর ধরে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের অতিথিশালা ‘সৈকতাবাসে’ বাগানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বছর তিরিশের এই যুবক। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আমার করা ফুলের গাছ দেখে খুব খুশি। নিজে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। অনেকটা সময় কাটান বাগানে।” বৃহস্পতিবার সৈকতাবাস ছাড়ার আগে জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকিকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, যাতে রঞ্জনকে পুরস্কৃত করা হয় ও তাঁর বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ফুলের এই বাগান দেখেই খুশি মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র
দু’দিন ধরে ছুটির মেজাজেই দিঘায় কাটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘুরে বেড়িয়েছেন বেলাভূমিতে। সঙ্গে ছিলেন দাদা-বৌদি এবং তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী থাকায় দিঘায় নিরাপত্তা ছিল আঁটোসাঁটো। তার জেরে পর্যটকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দিঘার ব্যারিস্টার কলোনির হোটেলগুলিতে ওঠা পযর্টকরা দু’দিন ধরে এক থেকে দেড় কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে বাধ্য হন। স্বভাবতই তাঁরা বিরক্ত। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে ছিলেন, সেই ‘সৈকতাবাস’ লাগোয়া নামী-দামি হোটেলের পর্যটকেরাও সোজা পথে যাতায়াত না করতে পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কয়েকজনকে তর্কাতর্কি করতেও দেখা যায়। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ‘হাই প্রোফাইল’ অতিথির নিরাপত্তার স্বার্থে এটুকু তো করতেই হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দিঘা ছেড়ে কলকাতা রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছিল, এ দিন মুখ্যমন্ত্রী তাজপুর ও মন্দারমণি যেতে পারেন। যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল পেটুয়াঘাট মৎস্যবন্দরেও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোথাওই যাননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে না পেয়ে হতাশ তাজপুর-মন্দারমণির হোটেল মালিকরা। ‘তাজপুর হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক শ্যামল দাস বলেন, “আমরা দু’দিন ধরে আশায় ছিলাম মুখ্যমন্ত্রী আসবেন, আমাদের সমস্যার কথা শুনবেন। শেষ পর্যন্ত উনি আর এ দিকে না আসায় আমরা হতাশ।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.