মুর্শিদাবাদের সঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুরে বুধবার কংগ্রেসের ডাকা ১২ ঘণ্টা বনধে বিপর্যস্ত হল জনজীবন। সরকারি অফিস আদালতে বনধের প্রভাব না-পড়লেও বেসরকারি ক্ষেত্রে তা কার্যকর ছিল। কংগ্রেস সকালের দিকে রাস্তায় নামতেই দলের মহিলা সভানেত্রী, ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি-সহ ১১ জন কর্মী-সমর্থককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরেই বনধ সমর্থনকারী কংগ্রেসের লোকজন পিছু হটে। বনধ বিরোধিতায় তৃণমূল কর্মীরা সক্রিয়ভাবে নামেন। শহরের পুরভবন এলাকায় তৃণমূলের বিক্ষোভের জেরে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাঙ্ক খুলতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। দুপুরে বন্ধ টেলিফোন এক্সচেঞ্জের দরজার তালা কাটতে শুরু করে বনধ বিরোধারা। বেগতিক দেখে কর্মীরা টেলিফোন এক্সচেঞ্জের অফিস খুললে উত্তেজনা কমে। পুরসভার সামনে তৃণমূল কর্মী সমর্থকের জটলা করেন। বনধ সমর্থকদের কাউকে সেখানে দেখা যায়নি। |
দলের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী-সহ আরও পাঁচ জন বিধায়কের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বালুরঘাটে ছাত্র পরিষদ কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে এ দিন ১২ ঘণ্টা জেলা বনধের ডাক দেয় কংগ্রেস। এ দিন তার জেরে বালুরঘাটে বেসরকারি বাস চলাচল করেনি। দোকানপাট বন্ধ ছিল। অধিকাংশ ব্যাঙ্ক ও বিমা অফিসও ছিল বন্ধ। স্কুল কলেজ খোলা থাকলেও পড়ুয়ার অনুপস্থিত থাকায় পড়াশোনা হয়নি। সকালে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের বাস ডিপো এবং ব্যাঙ্কের সামনে থেকে কংগ্রেসের নেতা ও সমর্থক ১১ জনকে গ্রেফতার করে পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জ্যাকলিন দর্জি জানান। জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “সরকারি দফতরগুলিতে কর্মী উপস্থিতির হার ছিল স্বাভাবিক। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় সাংবাদিকদের অভিযোগ করেন, বালুরঘাটে ছাত্রপরিষদের রাজ্য সভাপতি রাহুল রায়, জেলা সভাপতি সৌরভ প্রসাদ-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করে তাদের জেলে পাঠানো হয়। হিলি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সাদিক সরকারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অথচ হরিরামপুরে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়টি তৃণমূল জোর করে দখল করে রাখলেও তা উদ্ধারে পুলিশ প্রশাসন নীরব। কংগ্রেসের সংখ্যাধিক্য সদস্য বিশিষ্ট হরিরামপুরের সৈয়দপুর গ্রামপঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের আর্জি জানালেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ। তিনি বলেন, “সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিরুদ্ধে ডাকা এ দিনের বনধ ব্যর্থ করতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল ময়দানে নামে। তবে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভাবে সাড়া দেওয়ায় বন্ধ সফল হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের প্রতিক্রিয়া, “বিচ্ছিন্ন ভাবে কয়েকটি এলাকায় দোকান বন্ধ থাকলেও বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ কাজে যোগ দেন। জেলার সর্বত্র জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। বনধ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।” |