বিধান রোডে গোষ্ঠ পালের মূর্তির সামনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি বড় অ্যাম্বুল্যান্স ক’য়েক ঘন্টা দাঁড়িয়েছিল। শেষে সরস্বতীর মূর্তি, পুজোর বাজার গাড়িতে তুলতে দেখে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। বুধবার বেলা ৩টা নাগাদ শিলিগুড়ি শহরে এই ঘটনা নজরে পড়েছে ওই রাস্তার পথচারীদের অনেকেরই। রোগীদের নিয়ে যাতায়াতের জন্য যে অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহারের কথা তাতে করে বাজার নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অনেকেই। হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, নার্সিং কলেজের তরফে ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি নিয়ে পুজোর বাজারে যাওয়া হয়। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অনুপ রায়, সুপার সব্যসাচী দাসও ঘটনা জেনে বিব্রত হন। কার অনুমতিতে বাজার করতে অ্যাম্বুল্যান্সটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কে অনুমতি দিয়েছেন তা কেউ স্বীকার করতে চাননি। |
ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “এই সব কাজে অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি নিয়ে হাসরপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলব।” অধ্যক্ষ জানান, অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে বাজার করতে যাওয়া কখনই কাম্য নয়। তিনি বলেন, “কে বা কারা ওই গাড়ি নিয়ে গিয়েছেন তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। অনুমতি কে দিয়েছেন তাও দেখা হচ্ছে।” হাসপাতালের একটি সূত্রই জানিয়েছেন, নার্সিং কলেজের ছাত্রীরাই ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি অধিকাংশ সময় ব্যবহার করেন। ছাত্রীদের নার্সিং হস্টেল থেকে কলেজে নেওয়া-সহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অফিসের নানা কাজে সেটি ব্যবহার করা হয়। রোগী পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ ছাড়া অ্যাম্বুল্যান্স অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে কেন তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
এর আগেও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে পিকনিকের বাজার করতে যাওয়া, কর্মীরা বাড়ির বাজার করতে গিয়েছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। সে সময় ঘটনার নিন্দা করে এ ধরনের কাজ বরদাস্ত হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন। পরিস্থিতি যে বদলায়নি এ দিনের ঘটনাতেই তা স্পষ্ট।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রোগীদের জন্য অনেক সময় অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েও সঠিক সময়ে মেলে না। এখনও অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় বাসিন্দারা অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে দুর্ভোগ পোহান। অথচ সরস্বতী পুজো, পিকনিক, বাড়ির বাজার মতো কাজে কেন অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হচ্ছে তাই তাঁরা বুঝতে পারছেন না। যাঁরা অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে বাজার করতে গিয়েছেন তাদেরও এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার বলে মনে করেন তাঁরা। বিষয়টি হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস কাজে বাইরে রয়েছেন। তিনি বিষয়টি জেনে ক্ষুব্ধ। সব্যসাচীবাবু বলেন, “অন্য গাড়ি নিয়ে বাজারে যাওয়া যেচে পারত। কিন্তু তা না করে কার অনুমতিতে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে বাজারে যাওয়া হয়েছে তা বুঝতে পারছি না। ফিরে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’’ |