অভিযুক্ত যুবক গ্রেফতার
কটূক্তির প্রতিবাদ, ছাত্রীকে অস্ত্রের আঘাত
প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আক্রোশে এক স্কুলছাত্রীকে রাস্তাঘাটে হামেশাই কটূক্তি করত এক যুবক। মঙ্গলবার রাতে মেয়েটি প্রতিবাদ করতে সরাসরি যুবকের বাড়ি পৌঁছে যায়। অভিযোগ, মেয়েটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে বাবলু বাউরি নামে ওই যুবক। বাধা দিতে গিয়ে জখম হন মেয়েটির বাবাও। পুরুলিয়া শহরের তেলকলপাড়ায় এই ঘটনার পরেই অভিযুক্ত যুবক গা ঢাকা দেয়। তবে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে ধরে ফেলে।
রাতেই বাবা-মেয়েকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আশঙ্কাজনক থাকায় গভীর রাতে ওই কিশোরীকে ঝাড়খণ্ডের বোকারোয় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা ওই মেয়েটি শহরেরই একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নামোপাড়া এলাকা থেকে টিউশন নিয়ে সাইকেলে সে বাড়ি ফিরছিল। অভিযোগ, বাবন তার পথ আটকে কটূক্তি করে। বছর কুড়ির বাবন এক সময় মেয়েটির স্কুলেই এক ক্লাস উঁচুতে পড়ত। গত বছর সে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই দু’জনের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। মেয়েটি বাড়ির লোকজনকে নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল ছেলেটির বাড়িতে। তখনই কথাবার্তার মাঝে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেয়েটিকে বাবন আঘাত করে।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই মানবাজার বাসস্ট্যান্ডের কাছে টিউশন পড়ে ফেরার পথে এক তরুণীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে অজয় মাঝি নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অজয়ের বাড়ি মানবাজারের খাটচিরি গ্রামে। ওই তরুণী পুলিশকে লিখিত ভাবে জানান, পেশায় গাড়িচালক অজয় তাঁরই গ্রামের বাসিন্দা। বিভিন্ন সময় সে তাঁকে দেখে অশ্লীল ইঙ্গিত করত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি কিছু বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে উত্ত্যক্ত করে অজয়। তাঁর ওড়না ধরে টানাটানি করে বলেও অভিযোগ। পুলিশ অজয়কে গ্রেফতার করেছে।
অন্য দিকে, পুরুলিয়ার আহত ছাত্রীটির দিদির দাবি, কিছুদিন আগে বাবন তাঁর বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিলেও বোন প্রত্যাখ্যান করে। এর পর থেকেই বাবন তাঁর বোনকে রাস্তাঘাটে দেখতে পেলে কটূক্তি করত। দিদির কথায়, “মঙ্গলবার রাতে বোন বাড়ি ফিরে বলে, বাবন ওর পথ আটকে বাজে কথা বলেছে। এমনকী এ কথা বাড়িতে না জানানোর জন্য হুমকিও দেয় বাবন। ওর মুখে সমস্ত কথা শুনে আমি বাবাকে জানাই।” ওই কিশোরীর বাবা, পেশায় পাইপ কারখানার কর্মী বুধবার হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে জানান, দুই মেয়ে আর ছোট ছেলেকে নিয়ে তিনি রাতেই তেলকলপাড়ায় বাবনদের বাড়িতে যান। তাঁর বড় মেয়ে বলেন, “ওখানে গিয়ে আমার ছোট মেয়ে সন্ধ্যার ঘটনার প্রতিবাদ করে। এই নিয়ে বাবনের সঙ্গে ওর কিছুটা কথাকাটাকাটি হয়। বোন বাবনকে চড় মারতে উদ্যত হয়। আচমকা বাবন একটা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছোট মেয়েকে আঘাত করে। ওকে বাঁচাতে গিয়ে বাবাও জখম হন।” এলাকাবাসী তাঁদের পুরুলিয়া হাসপাতালে নিয়ে যান।
পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় জানান, মেয়েটির বুকের ডান দিকে গভীর ক্ষত রয়েছে। রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রক্ত বন্ধ করা হেলেও মেয়েটির আরও ভাল চিকিৎসা প্রয়োজন। মেয়েটির বাবার ডান চোখের কাছে তিনটে সেলাই পড়েছে। অভিযুক্ত যুবকের বাবা শ্যামাপদ বাউরির অবশ্য দাবি, “আমার ছেলে বিবাহিত। কাজেই সে অন্য মেয়েকে কটূক্তি করতে যাবে কেন? এটা এমন কিছুই হয়নি যে এটা নিয়ে এত হইচই করতে হবে।”
আহত কিশোরী যে স্কুলের ছাত্রী, সেটির প্রধান শিক্ষক বিভূতি প্রামাণিক বলেন, “শুনলাম অভিযুক্ত ছেলেটি আমাদের স্কুলেই পড়ত। তবে সে এখন আর স্কুলে পড়ে না। ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। যা ঘটেছে বিধি মোতাবেক প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি অবশ্যই সামাজিক অবক্ষয়ের উদাহরণ। সামাজিক মূল্যবোধকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে সকলকে। তবেই এ ধরনের ঘটনা রোখা যেতে পারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.