দিনের বেলায় দম্পতির পেশা, সব্জি বিক্রি। আঁধার ঘনালে ঘুটঘুট, সেই পেশাই বদলে যায় গুলি-বন্দুক বিক্রিতে। দু’জনেই ধরা পড়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসায়ী সন্দেহে ধরা পড়েছে আর এক জন। গ্রামে যে হাতুড়ে চিকিৎসক হিসাবে পরিচিত। চায়ের দোকানও আছে। ব্যবসা চলত সেখান থেকেই।
মঙ্গলবার এমনই এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে বসিরহাট থানার পুলিশ। ধরা পড়েছে আরও এক জন। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির বড় চক্রের হদিস মিলেছে বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ডিসেম্বর মাসে গুলি-ভর্তি রিভলবার-সহ ধরা পড়ে বসিরহাটের বাঁশঝাড়ি গ্রামের বাসিন্দা রবিউল সর্দার ওরফে টিটো। পুলিশি জেরায় সে জানায়, বসিরহাটের পাইকপাড়ার ব্যাঙপুকুরের বাসিন্দা রুহুল আমিন মণ্ডল তার কাছে ৪ হাজার টাকায় আগ্নেয়াস্ত্রটি বিক্রি করেছে। রুহুলের কাছ থেকে বসিরহাট, হাড়োয়া, মিনাখাঁ-সহ আরও কিছু এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি হয়েছে বলেও তদন্তে জানতে পারে পুলিশ।
গ্রামে হাতুড়ে চিকিৎসক হিসাবে পরিচিত হলেও অবস্থা বেশ স্বচ্ছল রুহুলের। বাড়ির সামনে আবার চায়ের দোকানও দিয়েছে। সব কিছু দেখে পুলিশের সন্দেহ ঘণীভূত হয়। পুলিশের দাবি, ওই চায়ের দোকান থেকেই আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসা চলত বলে দাবি পুলিশের।
নজর রেখেছিল পুলিশ। খবর আসে, গুলি-বন্দুক নিয়ে এক দম্পতি আসবে রুহুলের বাড়িতে। খবর ভুল ছিল না। পিঁফার কাছে পুলিশ ওই তিন-সহ গাড়িটি থামায়। গ্রেফতার করা হয় রুহুলকে। ধরা পড়ে সুবিদ আলি শেখ ও আকলিমা বিবি নামে ওই দম্পতিও। তাদের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর শিমুলতলা হাসপাতালের পাশে। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় রিভলবার-গুলি। তদন্তকারী অফিসারেরা দাবি করেছেন, কয়েকটি রিভলবার কেনার জন্য ওই দম্পতিকে বরাত দিয়েছিল রুহুল। নমুনা হিসাবে একটি রিভলবার ও দু’টি গুলি সঙ্গে এনেছিল ওই দম্পতি।
বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আর কারা অস্ত্র ব্যবসায় যুক্ত, তা জানতে তদন্ত হচ্ছে।” ধৃতদের এ দিনই বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, শিমুলতলা হাসপাতালের পাশে দিনের বেলায় ফুটপাতে বসে সব্জি বিক্রি করত আকলিমা। সুবিদ তার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী। সে-ও প্রকাশ্যে একই কাজ করত। আড়ালে ছিল আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসা। সম্প্রতি ডাকাতির অভিযোগে ধরাও পড়েছিল সুবিদ। অস্ত্র কেনাবেচার অভিযোগে আকলিমাও এক বার পুলিশের জালে ধরা পড়ে। কলকাতার মেটিয়াবুরুজের এক ব্যক্তির কাছ থেকে অস্ত্র আনত আকলিমারা। তার দাবি, মূলত দুই ২৪ পরগনার মেছোভড়ি এলাকায় অস্ত্র সরবরাহ করত তারা। |