আবার এ শহরে শান্তা রাও
বিস্মৃত নৃত্যশিল্পী
লকাতায় গেলে সুনীল আর শোভার সঙ্গে অবশ্যই দেখা কোরো, বন্ধুজনদের বলতেন শান্তা, শান্তা রাও। বিশ্বখ্যাত এই ভরতনাট্যম শিল্পী এ শহরের জন্য একটা বিশেষ ভালবাসা পুষে রেখেছিলেন আজীবন। এ শহরেই তাঁর পরিচয় সুনীল জানার সঙ্গে, পরে যাঁর তোলা ছবি আর অশোক চট্টোপাধ্যায়ের লেখা নিয়ে আইসিসিআর থেকে প্রকাশিত হয় ডান্সেস অব দ্য গোল্ডেন হল (১৯৭৯)। মাঙ্গালোরের সারস্বত ব্রাহ্মণ শান্তা প্রথমে শেখেন কথাকলি, তখনও মহিলারা এই নৃত্যে আসতেন না। কুচিপুড়ি, মোহিনীআট্টম কোনও ধারাই তিনি বাদ দেননি, শেষে থিতু হন ভরতনাট্যমে। জওহরলাল তাঁর নাচ দেখে বলেছিলেন, ‘ভারতীয় নৃত্য যে এত সুন্দর হতে পারে আমি ভাবতেই পারিনি।’ ১৯৪০-এর শেষের দিকে নিউ এম্পায়ারে এ শহরে শান্তার প্রথম নাচের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল কে সি দাশের পরিবার। সেটা ছিল খ্যাতিমান ইম্প্রেসারিও হরেন ঘোষের নিবেদন। সে দিন শান্তার নাচ দেখতে এসে ইন্দ্রাণী রহমান এতটাই প্রভাবিত হন যে কিছু কাল পরেই ভরতনাট্যম শিখতে চলে যান দক্ষিণ ভারতে। পরে আরও কয়েক বার এ শহরে এসেছেন শান্তা।
সঙ্গে বাম দিকে সুনীল জানা ও ডান দিকে হার্বার্ট ম্যাটার-এর (নিউইয়র্ক) তোলা শান্তা রাওয়ের ছবি।
১৯৫৩-য় তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন যে কমিটি তাতে ছিলেন যামিনী রায়, সুনীতিকুমার, নীহাররঞ্জন রায়, নির্মলকুমার বসু প্রমুখ। বছর ছয়েক আগে বেঙ্গালুরুর বাড়িতে নাচ-গান-ছবি আর গবেষণার কাজ চালাতে চালাতেই নীরবে প্রয়াত হন শান্তা (১৯২৫-২০০৭)। তাঁকে ফিরে দেখার আয়োজন আজ আইসিসিআর-এর নন্দলাল বসু গ্যালারিতে সন্ধে সাড়ে ছটায়। বলবেন ডান্সেস অব দ্য গোল্ডেন হল-এর লেখক অশোক চট্টোপাধ্যায়। দেখা যাবে সুনীল জানার তোলা শান্তার ছবি আর তাঁর নাচের ক্লিপিংস, অমনিবাস (ইউ এস এ) আর বিবিসি-র আর্কাইভ থেকে। আইসিসিআর ও ক্র্যাফ্টস কাউন্সিল অব ওয়েস্ট বেঙ্গল আয়োজিত এই শ্রদ্ধা-অনুষ্ঠানের সূচনা-প্রদীপ জ্বালবেন অপর্ণা সেন, বলবেন রেবা সোম ও কপিলা বাত্‌স্যায়ন।

সুনীল-স্মরণ
উনিশ বছর বয়সে যে পত্রিকার সম্পাদনা শুরু করেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সেই কৃত্তিবাস তাঁর স্মরণেই প্রকাশ পেল এ বার বইমেলায়। ‘কৃত্তিবাসের সম্পাদকীয় কখনও আমাকে লিখতে হবে, কল্পনাও করতে পারিনি।’ শুরুতেই জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী স্বাতী। বিশিষ্ট জনেদের রচনায় ঋদ্ধ এই স্মৃতিপত্রটিতে রয়েছে তাঁর বেশ কিছু ছবির অ্যালবাম, আর প্যারিসে লেখা অপ্রকাশিত কবিতার পাণ্ডুলিপি: ‘ফুঁ দিয়ে প্রদীপ নেভালেই বোঝা যায়/ কোন্ সুখে আছি বন্দী/ তার মধ্যেই একবার ভূমিকম্প/ দ্বিতীয় বয়ঃসন্ধি!’ আছে তাঁর গ্রন্থতালিকাও (১৯৫৭-২০১২)। প্রথম রচনাটিতে তাঁর সম্পর্কে লিখছেন রণজিত্‌ গুহ ‘এমন কতকগুলি মৌলিক ধারণায় বিশ্বাস করতেন যা থেকে কোনও প্ররোচনার বশেই তিনি নোঙর তুলে দূরে সরে আসতে রাজি হননি।’

অবনীন্দ্র সংখ্যা
রবিকা-য় আর চাপা থাকছেন না তিনি, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর স্মৃতি চাপা থাকে প্রতি বছর বাইশে শ্রাবণ। দিনটি যে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পাশাপাশি অবন ঠাকুরের জন্মদিনও, সেটা প্রায় ভুলেই যাই। এ বার ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল সম্পাদিত ‘বৈশাখী’ পত্রিকা বড় যত্নে প্রকাশ করেছে অবনীন্দ্র সংখ্যা (সংখ্যা সম্পা. অনির্বাণ রায়)। অবনীন্দ্রের কবিতা, গল্প, রূপকথা, স্মৃতিকথা, প্রবন্ধের সঙ্গে কয়েকটি ভূমিকা এবং বেশ কিছু মূল্যবান চিঠি, অবনীন্দ্র-সুভাষিতম্‌, অলোকেন্দ্রনাথ-মাণীন্দ্রনাথের সঙ্গে রানী চন্দ প্রমুখের স্মৃতিচারণ, অর্ধেন্দ্রকুমার-অমিয় সান্যাল-মোহনলাল-রমেন্দ্রনাথ মল্লিকের আলোচনা, আর মনোজিত্‌ বসুর লেখা জীবনীর পুনর্মুদ্রণ এ সংখ্যার বিবিধ সম্পদ।

দরবারি
শিল্প, সাহিত্য ও স্থাপত্যকলার মতো নৃত্য ও সংগীতের প্রতি মুঘল সম্রাটদের অনুরাগের কথা অনেকেই জানেন। সেই ইতিহাস গভীরে গিয়ে খুঁজেছেন বিশিষ্ট শিল্প-ঐতিহাসিক অশোককুমার দাস। তা নিয়েই ভারতীয় সংগ্রহালয়ে এ বার আলোচনা ‘মিউজিক, মিউজিসিয়ানস অ্যান্ড ডান্স অ্যাট দ্য মুঘল কোর্ট’। ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টেয় আশুতোষ শতবার্ষিকী প্রেক্ষাগৃহে এই অনুষ্ঠান, তাঁর টেগোর ন্যাশনাল ফেলোশিপের দ্বিতীয় বক্তৃতা। তানসেন, বীণকার নৌবত খান, বিজাপুরের সংগীতবিশারদ সুলতান ইব্রাহিম আদিল শাহ ও তাঁর জামাতা বখতার খান কলাবন্তের প্রতিকৃতি-সহ নানা বাদ্যযন্ত্র, নৃত্যভঙ্গি এবং সংগীতানুষ্ঠানের মুঘল ও বিজাপুরি ছবি দেখা যাবে এই আলোচনার সঙ্গে। এ দিকে মার্গ ফাউন্ডেশন থেকে সদ্য প্রকাশিত হল অশোকবাবুর দীর্ঘ গবেষণার ফসল ওয়ান্ডার্স অব নেচার/ উস্তাদ মনসুর অ্যাট দি মুঘল কোর্ট।

বিবেক-প্রদর্শনী
প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্যকে নতুন করে তুলে ধরে দেশের মানুষকে, বিশেষত যুবশক্তিকে জাগাতে চেয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ৩-৫ ফেব্রুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশততম জন্মতিথি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় ‘বিবেক প্রদর্শনী’ হয়ে গেল দক্ষিণেশ্বর শ্রীসারদা মঠ প্রাঙ্গণে। এর ছ’টি বিভাগ ছিল ভারতীয় সংস্কৃতি, ভারতের প্রাণ উপনিষদ, বিজ্ঞান ও বেদান্ত, স্বাধীনতা সংগ্রাম, নারী জাগরণ ও জাগো যুবশক্তি। প্রদর্শনীতে অগণিত বিবেকানন্দ-অনুরাগীর সমাবেশ হয়। শ্রীসারদা মঠের নানা শাখাকেন্দ্রেও এটি দেখানো হবে। এ দিকে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের উদ্যোগে এবং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহায়তায় ‘সঙ্গীতের মাধ্যমে ঐক্য’ শীর্ষক দুই দিনের আলোচনায় স্বামী সর্বভূতানন্দ, বিজয়কুমার কিচলু, অরুণকুমার বসু প্রমুখর বক্তব্য শোনা গেল। করণ সিংহের নটরাজ: লর্ড অব কসমিক ডান্স বইটি প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠানে ছিল অভিজিত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় বৃন্দবাদন, পার্থ বসুর সেতার ও শ্রীরাম-পরশুরামের বেহালার যুগলবন্দি এবং বালমুরলীকৃষ্ণের কণ্ঠে স্বামী বিবেকানন্দ বিষয়ক ভজন ও ভক্তিগীতি। সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপনে শামিল স্কটিশ চার্চ কলেজও। নরেন্দ্রনাথের বিশ্বজয়ী সন্ন্যাসী হয়ে-ওঠার নাট্য-আলেখ্য ‘যুগনায়ক বিবেকানন্দ’-এর উপস্থাপনা ও প্রযোজনায় জগন্নাথ ও ঊর্মিমালা বসু। নাট্যকার সমর চৌধুরী। ১১ ফেব্রুয়ারি ৬টায় কলেজের নবনির্মিত সেমিনার-কক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজক প্রাক্তন ছাত্র সমিতি ও বাংলা বিভাগ।

কাঁথাশিল্প
জোকার গুরুসদয় সংগ্রহশালার ৫১তম প্রতিষ্ঠাদিবস (৮ ফেব্রুয়ারি) উপলক্ষে হস্তশিল্প এবং বাংলার বস্ত্রবয়ন শিল্প নিয়ে ছিল বিস্তৃত আলোচনা, ‘টেক্সটাইলস অব বেঙ্গল: ট্রাডিশন, মডার্নিটি অ্যান্ড বিয়ন্ড’। বঙ্গে প্রচলিত বস্ত্রধারার সঙ্গেই আলোচনায় উঠে এল সুতি সিল্ক এবং উত্তরবঙ্গের বস্ত্রশিল্প প্রসঙ্গ। আর ছিল ঐতিহ্যবাহী কাঁথাশিল্প। মহামায়া শিকদারের পরিচালনায় দু’দিনের কর্মশিবির হল সূচিশিল্পে। প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে কাঁথাশিল্পের দুর্লভ নমুনা। ‘বাংলার কাঁথাশিল্প’ শীর্ষক এই প্রদর্শনী চলবে ১৭ তারিখ পর্যন্ত, ১২-৭টা। এ দিকে সাবর্ণ চৌধুরী পরিবার পরিষদের সদস্যদের সংগ্রহ নিয়ে বড়িশার বড়বাড়িতে আয়োজিত হয়েছে বার্ষিক প্রদর্শনী: ‘তমসো মা জ্যোতির্গময়’, চলবে ১৩ পর্যন্ত, ১০টা-৯টা। প্রদর্শিত হয়েছে সারদা মায়ের চিতাভস্ম সহ বহু দুর্লভ সামগ্রী।

স্বীকৃতি
‘বাংলা সাহিত্যের অনেকটাই মালয়ালিতে অনুবাদ হয়েছে, কিন্তু মালয়ালি সাহিত্যের প্রায় কিছুই বাংলা সাহিত্যে হয়নি, উদ্যোক্তাদের কাছে অভিযোগটা যখন শুনলাম এক বাক্যে স্বীকার করে নিতে হল,’’ বলছিলেন তিলোত্তমা মজুমদার। মালয়ালি সাহিত্যের বিখ্যাত ঔপন্যাসিক কাক্কনাদনের স্মরণে তৈরি কাক্কনাদন ফাউন্ডেশনের প্রথম সাহিত্য পুরস্কারটি পাচ্ছেন তিনি। বলছিলেন, ‘আমি নিয়মিত মালয়ালি-সহ ভারতীয় অন্য ভাষার সাহিত্য পড়ি। কিন্তু সরকারি উদ্যোগের বাইরে সে সবের অনুবাদ হয় খুবই কম।’ মুর্শিদাবাদের ইতিহাস আর সংস্কৃতি নিয়ে তাঁর উপন্যাস রাজপাট (আনন্দ) বিবেচিত হয়েছে এই পুরস্কারের জন্য। পাশাপাশি তাঁর বেশ কিছু ছোটগল্পেরও অনুবাদ প্রকাশিত হতে চলেছে মালয়ালি ভাষায়। ১৪ ফেব্রুয়ারি কেরলের কোলমে পুরস্কার অর্পণ অনুষ্ঠান। এ-ও এক অন্তর্বিনিময়, ভারতীয় সাহিত্যে।

দুই বাংলার গান
বাংলাদেশে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চার প্রসারের জন্য সে দেশের বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে দুই বাংলার গানের উত্‌সব। কয়েক মাস আগেই ১০৩ জন শিল্পী গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। এ বার ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এ শহরে শুরু হয়েছে ‘বাংলা গানের উত্‌সব, কলকাতা-২০১৩’। চলবে ১৬ পর্যম্ত। থাকছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, অরুণ ভাদুড়ি, শ্রীকান্ত আচার্য, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, ফরিদা পারভিন, কৌশিকী দেশিকান প্রমুখ। ১৩ ফেব্রুয়ারি আছে ঢাকার ‘ভাবনা’-র উপস্থাপনায় ‘ভানুসিংহের পদাবলী’ এবং কলকাতার ‘দক্ষিণী’-র ‘শাপমোচন’।

আধুনিক রূপকথা
ছবি: আমন্ত্রণপত্র থেকে।
এক দেশে এক কন্যা ছিল। রাজকন্যা নয় সে। জীবজগত্‌ আর গাছপালা নিয়ে ছিল তার অনাড়ম্বর সুখ-শান্তিতে ভরা ভালবাসার শৈশব। এই মেয়েটিকে নিয়েই লবঙ্গলতিকা চরিত (ছাতিম বুকস) লিখেছেন শিল্পী মিমি রাধাকৃষ্ণন। ‘এ এক আধুনিক রূপকথা। যেখানে রূপকথা লিখতে লিখতে তা এক সময় হয়ে গিয়েছিল আত্মকথাই।’ বললেন মিমি। শান্তিনিকেতন কলাভবনে থাকাকালীন প্রিন্টমেকিং শিখেছেন সোমনাথ হোরের কাছে। বর্তমানে দিল্লির বাসিন্দা এবং সেখানেই ছবি আঁকা। তারই মাঝে লেখালেখি। এ রূপকথা শুধু ছোটদের নয়। বড়রাও নিজেদের অনুভূতির সঙ্গে মিল খুঁজে পাবেন বলে মিমির আশা। গল্প অন্য মাত্রা পেয়েছে মিমির নিজের আঁকা ছবিতে। ১১ ফেব্রুয়ারি হিন্দুস্তান পার্কের ‘আকারপ্রকার’ গ্যালারিতে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় বইটি প্রকাশ করবেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।

প্রতিমা
বাবা প্রকৃতীশ বড়ুয়ার কাছ থেকে ছোট্ট বয়সে প্রকৃতির পাঠ পেয়েছিলেন শিল্পী প্রতিমা বড়ুয়া। জন্ম বালিগঞ্জে, বড় হয়ে ওঠা অসমের গৌরীপুরে। আমবাগানের বাঁধা হাতি আর নদীর সঙ্গে খেলা করতে করতেই শিল্পীর পূর্ণতা প্রতিমা দেবীর। পেয়েছেন পদ্মশ্রী, ডিলিট, সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার। তবু শেষপাতে অজ্ঞাত অভিমানে স্বেচ্ছানির্বাসন। ওদিকে বহতা নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠে নানা লোকগাথা। এ দুইকে এক সুতোয় গেঁথে লোকশিল্পী গবেষক প্রবীর দেব তৈরি করেছেন এক অন্তরঙ্গ তথ্যচিত্র ‘দেওসিয়ার উপকথা’। কর্মসূত্রে নৈহাটির বাসিন্দা প্রবীরবাবুর আদি বাস অসমের রঙ্গিয়া। ফলে গোয়ালপাড়ার ভাওয়াইয়া থেকে লোকগাথা তাঁর অন্তরঙ্গ সঙ্গী। এই আপনপারাই ওঁকে উদ্বুদ্ধ করেছে শিল্পী প্রতিমা বড়ুয়াকে নিয়ে এমন ছবি নির্মাণে। অতএব হাতি প্রকৃতি জনজীবনের সঙ্গে এ ছবিতে অনিবার্য ভাবে উঠে এসেছে হৃদয়গ্রাহী সুর। লালন অ্যাকাডেমির উপস্থাপনায় সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে দেখানো হল ছবিটি।

পরিচালক
আদ্যন্ত থিয়েটারের মানুষ। সাত বছর বয়সে থিয়েটারে হাতেখড়ি। পরে রমাপ্রসাদ বণিক ও কুমার রায়ের কাছে অভিনয় শেখা। দূরদর্শনের প্রথম দিকের
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য
সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন রাজা সেন, উত্‌পলেন্দু চক্রবর্তীর নির্দেশনায়। নিজে কিছু করবেন, সেই ইচ্ছেতেই তথ্যচিত্র তৈরি শুরু করেন পরিচালক রাণা বসু। রাণার কথায়, ‘সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম’। সময় এল ২০১১-তে। বেছে নিলেন দিব্যেন্দু পালিতের গল্প ‘ত্রাতা’। যে গল্প নিয়ে রমাপ্রসাদ বণিকের বিখ্যাত নাটক। সেই নাটকেই সাড়া ফেলেছিলেন খরাজ মুখোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় এবং চন্দন সেন। বাইশ বছর পরে আবার সেই গল্প। কেন? ‘গল্পটি আজও একই রকম প্রাসঙ্গিক।’ মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তা বাড়িওয়ালা থেকে পাড়ার গুণ্ডা সবার কাছেই মাথা নত করতে বাধ্য হন, এ ভাবে কতদূর নামতে হয়, সেটা দেখাতেই ছবির নাম বদলে ‘নামতে নামতে’। ছবিতে শাশ্বতকে আবারও দেখা যাবে ভিলেনের ভূমিকায়। অন্যতম মুখ্য চরিত্রে (সীমা) রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। রাণার কথায়, রূপা ছাড়া এই চরিত্রটার জন্য অন্য কাউকে ভাবতে পারিনি। অন্য রকম চরিত্রে দেখা যাবে রজতাভ দত্তকে। সদ্য মুক্তি পেল ‘নামতে নামতে’।

স্মরণ
কমলা গার্লসের তরুণী অঙ্কনশিক্ষিকা, ট্রামে স্কুলে চলেছেন। হাতে চটের ব্যাগে পোষা ভালুকছানা। স্কুলের বাচ্চাদের সে কী আনন্দ। এই রকম ঘটনা ঘটানো বোধহয় শানু লাহিড়ীর পক্ষেই সম্ভব ছিল। বর্ণময় জীবন, কমলকুমার-নীরদকুমারের সহোদরা। সরকারি আর্ট কলেজের পরে বৃত্তি নিয়ে প্যারিস। ছাত্রাবস্থাতেই প্রদর্শনী, পুরস্কার। শেষকালের স্বল্পকালীন অসুস্থতার মধ্যেও রং-তুলি চেয়েছেন কন্যার কাছে। স্বদেশে-বিদেশে পুরস্কার-প্রদর্শনীর তালিকা বিশাল। সেরামিক, কাঠের প্লেট, এক্সরে প্লেটে ছবি, কিছু ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য, বই অলঙ্করণ। বেশ কয়েকটি বই এবং বহু নিবন্ধ লিখেছেন। তাঁর লেখা তিনটি বই স্মৃতির কোলাজ, রবীন্দ্র-চিত্র চেতনা, ছোটদের গল্পসংকলন এঁদো গলি থেকে বেণীমাধব। কখনও কলকাতার দেওয়াল-চিত্রণ, ঝাঁটা হাতে রাস্তা পরিষ্কার, বন্দিদের দিয়ে ছবি আঁকানোয় ব্যস্ত থাকতেন। ভালবাসতেন মানুষকে। ততটাই মনোযোগী তাবত্‌ প্রাণীকুলের প্রতি। একবার সকন্যা জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে পড়েছিলেন বাঘের ডেরায়। অসমে একলা বন্দুক হাতে ‘বঙ্গালি খেদাও’ আন্দোলনে বাড়িতে চড়াও জনতাকে সামলেছিলেন স্বামীর অনুপস্থিতিতে। গত বছরও মস্ত ক্যানভাসে ছবি এঁকে করেছেন একক প্রদর্শনী। রন্ধনে দ্রৌপদী মানুষটি একটি রান্নার বই লেখায় হাত দিয়েছিলেন। রাজনীতি আর স্বপ্রচারের ধারেকাছে থাকতেন না। পঁচাশি বছরে তাঁর চলে যাওয়ায় পৃথিবী থেকে আনন্দ-ছন্দ একটু তো কমে গেল। হয়তো তাই ওঁর বাড়িতে স্মৃতি-সন্ধ্যায় পুত্রকন্যার তরফ থেকে অতিথিদের দেওয়া হল চারাগাছ-- আনন্দ আর প্রাণের প্রতীক। ১৩ ফেব্রুয়ারি ক্যালকাটা আর্ট ফোরামের উদ্যোগে রোটারি সদনে সন্ধে ৬টায় স্মরণসভায় থাকছে বহু শিল্পীসংগঠন, শিল্পানুরাগী জন।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.