বাঙুরে ১৮ দিনে মৃত চার ‘সুস্থ’ প্রসূতি
তাঁদের কারও কোনও শারীরিক অসুবিধা ছিল না। দেখা দেয়নি কোনও অসুস্থতাও। অথচ, প্রসবের জন্য সাধারণ সিজারের পরেই একের পর এক মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি— এই ১৮ দিনে এমআর বাঙুর হাসপাতালে এই রকম সুস্থ-সবল চার জন সদ্য প্রসূতি মারা গিয়েছেন। একই সঙ্গে বন্ধ্যত্বকরণের অতি সাধারণ অস্ত্রোপচারের পরে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। তিনিও শারীরিক ভাবে একেবারে সুস্থ ছিলেন বলে জানান চিকিৎসকেরা। আচমকা এই মৃত্যুতে বিভ্রান্ত বাঙুর-কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে ‘ডেথ অডিট’ করেও মৃত্যুর কারণ বুঝতে পারেননি। শেষে তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনের দ্বারস্থ হন।
গত শুক্রবার স্বাস্থ্য-অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী নিজে হাসপাতালে এসে মৃতাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখেন এবং চিকিৎসক ও মৃতাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন। নিজে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য-অধিকর্তা পরে বলেন, “২০১৩ সালে দাঁড়িয়েও যদি ১৯ শতকের মতো সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে প্রসূতির মৃত্যু হয়, সেটা আমাদের কাছে লজ্জার। আর বন্ধ্যত্বকরণ করতে গিয়ে মৃত্যুর কথা তো অকল্পনীয়। বাঙুরে মৃতাদের আগে কোনও শারীরিক অসুবিধা ছিল না। এটাই আরও দুঃখের। পরিবারকল্যাণ দফতরের কর্তাদের নিয়ে আলাদা টিম তৈরি করে বিষয়টির তদন্ত হবে।”
প্রসঙ্গত, গত বছরই পশ্চিমবঙ্গে প্রসূতি মৃত্যু কমেছে বলে গর্ব করে ঘোষণা করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সারা দেশে যখন প্রসূতি মৃত্যুর হার প্রতি লক্ষে ২০০, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা নেমে হয়েছিল ১৪৫।
স্বাস্থ্যকর্তারা আরও জানিয়েছেন, বছর ছয়েক আগে আরজিকর হাসপাতালে এক বার পরপর বেশ কয়েক জন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। প্রথমে তাঁদেরও মৃত্যুর কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে খতিয়ে দেখে বোঝা যায়, অ্যানাস্থেশিয়া সংক্রান্ত কিছু ত্রুটি থেকে গিয়েছে। বাঙুরের সুপার সন্তোষ রায় অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অ্যানাস্থেশিয়ায় ত্রুটি ছিল না। ওটি-তেও কোনও সংক্রমণ নেই। কারণ, ওই একই ওটিতে অন্যান্য অস্ত্রোপচারও হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। অথচ, সিজারের রোগীদের পরপর রেনাল ফেলিওর হচ্ছে, অর্থাৎ কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। বন্ধ্যত্বকরণের পরে মৃতার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।
রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা শেফালি রায় নামে এক প্রসূতির সিজারের পরে অবস্থা খারাপ হওয়ায় ৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে এসএসকেএমে রেফার করা হয়। সেখানে শনিবার ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরে তাঁর বাড়ির লোকজন হাসপাতালে বিক্ষোভও দেখান। এমআর বাঙুর থেকে প্রসূতিদের কিডনি তুলে নিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান তাঁরা। বাঙুরে এ বিষয়ে তাঁরা লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.