|
|
|
|
বিডিও’র চিঠি জেলাশাসককে |
নলকূপ বসলেও শুকজোড়া নির্জলাই |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
গভীর নলকূপ তৈরি হয়েছে। তবে জল মিলছে না। সঙ্কটে গ্রামের মানুষ। ছবিটা পিছিয়ে পড়া জঙ্গলমহলের বেলপাহাড়ির। সমস্যার কথা জানিয়ে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তকে চিঠি লিখেছেন বেলপাহাড়ির বিডিও সর্বোদয় সাহা। চিঠিতে বিডিও-র আশঙ্কা, এর ফলে এলাকায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। গত বছরই পানীয় জলের দাবিতে অনশন-বিক্ষোভ হয়েছে। জেলাশাসকের আশ্বাস, “সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
বেলপাহাড়ির শুকজোড়ায় মোট তিনটি গভীর নলকূপ তৈরি হয়েছে। অথচ তার একটি থেকেও জল মিলছে না। নলকূপ তৈরি করেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর (মেকানিক্যাল)। দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিত্যানন্দ খান অবশ্য বলেন, “একটি নলকূপের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। বাকি দু’টি সচল রয়েছে।” মাটির নীচের জলস্তর কমতে থাকার ফলেই সমস্যা হচ্ছে বলে দফতর সূত্রে খবর। বেলপাহাড়ির শিলদা অঞ্চলের বড় শুকজোড়া, ছোট শুকজোড়া ও তার আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। গ্রীষ্মে সঙ্কট চরমে ওঠে। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী পুকুর ও ক্যানালের জল ব্যবহার করেন। সমস্যা সমাধানে জল প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। গত বছর অগস্টে বেলপাহাড়িতে এসে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন তিনটি গভীর নলকূপ তৈরির জন্য পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদও অর্থ বরাদ্দ করে। সব মিলিয়ে বরাদ্দ হয় ৪৮ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে ২৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
সে কথাই জেলাশাসকের কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বিডিও। সোমবার পাঠানো ওই চিঠিতে (মেমো নম্বর ২০২) স্থানীয় মানুষের অসন্তোষের কথা জানানো হয়েছে। কেন এই পরিস্থিতি? জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে খবর, বেলপাহাড়ির এই এলাকায় জলস্তর অত্যন্ত কম। গোড়ায় ঠিক হয়েছিল, তিনটি গভীর নলকূপ থেকে মোট ১৮টি ট্যাপকলে জলের সংযোগ পৌঁছবে। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা এই ট্যাপকল থেকে জল নিতে পারবেন স্থানীয়রা। কিন্তু এলাকাবাসীর এলাকাবাসীর দাবি মেনে ৪৬টি ট্যাপকল বসাতে হয়েছে। ফলে, সর্বত্র সমান পরিমাণ জল পৌঁছচ্ছে না। এক-একটি নলকূপের জন্য প্রায় ৫০০ থেকে ৫৫০ ফুট পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা-ও সে ভাবে জলস্তর মেলেনি। পাথুরে জমি হওয়ায় কাজেরও সমস্যা হয়েছে।
বেলপাহাড়ির এই এলাকায় জলের সমস্যা নতুন নয়। গত বছর ৩০ মে বেলপাহাড়ির বিডিওকে চিঠি লিখে সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। জানানো হয়েছিল, পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের দাবিতে ৪ জুন অনশন হবে। সেই মতো অনশন-বিক্ষোভ কর্মসূচিও হয়। শুকজোড়ার এক বাসিন্দার কথায়, “এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। অথচ, সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করা হয়নি।” এরপরই এলাকায় নতুন জল প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ আরও ২৪ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। এই অর্থে শিলদায় আরও একটি গভীর নলকূপ তৈরি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “সমস্যা সমাধানে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জলস্তর কম। তাই নতুন প্রকল্প করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। শিলদার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|