|
টেলি সংস্থাগুলিকে তলব রাজ্যের |
গ্রাহকদের হয়রানি রুখতে
ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত • কলকাতা |
|
অবাঞ্ছিত পরিষেবা দিয়ে টাকা কেটে নেওয়া থেকে শুরু করে চোখ কপালে তুলে দেওয়া বিল। টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ ভুরি ভুরি। এ বার রাজ্যের গ্রাহকদের সেই ভোগান্তি কমাতে সংস্থাগুলিকে তলব করল ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। সমাধানের পথ খুঁজতে ওই বৈঠকে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের সঙ্গেও আলোচনা করেন ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংস্থাগুলির প্রতিনিধিদের নির্দেশও দেন তিনি।
গ্রাহকদের অভিযোগ, কখনও তাঁদের ‘অজান্তে’ মোবাইল ফোনে অবাঞ্ছিত বাড়তি পরিষেবা (ভ্যাস) দেওয়ার নামে মাসুল কেটে নিচ্ছে সংস্থা। কখনও বা মিটার চালু করে দিচ্ছে রিং শুরু হতেই (আদপে যা কথা শুরুর পর হওয়ার কথা)। ল্যান্ডলাইন ফোন বিগড়ালে, কেন তা সারাই হচ্ছে না, সেই উত্তর পেতেই গড়িয়ে যাচ্ছে মাস। এমনকী পরিষেবায় বিরক্ত হয়ে গ্রাহক ল্যান্ডলাইন ছেড়ে দিতে চাইলে, তা লিখতে দেওয়া হচ্ছে না আবেদনপত্রে।
এমন সমস্ত অভিযোগ পেয়েই সব বেসরকারি সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিএসএনএল-কে এ দিন তলব করেছিলেন সাধনবাবু। ডেকেছিলেন নজরদারি সংস্থা ট্রাই-সহ বাকি সব সংশ্লিষ্ট পক্ষকে। উপস্থিত ছিলেন দফতরের সচিব বিবেক ভরদ্বাজও। এই আলোচনায় সংস্থাগুলির প্রতিনিধিদের সামনে একের পর এক অভিযোগ তুলে ধরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। এ সব ক্ষেত্রে ট্রাইয়ের কী সুপারিশ রয়েছে, তা-ও আঞ্চলিক কর্তাদের কাছে জানতে চান তিনি।
পরে সাধনবাবু বলেন, “বিস্তর অভিযোগ আসছে। যেমন, এক গ্রাহককে বিদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা মাসুলের যে উর্ধ্বসীমা ধার্য করেছিল, বাস্তবে বিল এসেছে তার দশ গুণেরও বেশি। সংস্থাটির দাবি, বিদেশে গেলে গ্রাহক বিদেশি সংস্থার পরিষেবা নেন। তা ছাড়া মাসুলের উর্ধ্বসীমা পেরোলে ফোন বন্ধ করার প্রযুক্তি নেই! পরে সংস্থাটি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে।”
মন্ত্রীর দাবি, এই সব ক্ষেত্রে গ্রাহককে সতর্ক করতে ব্যবস্থা গ্রহণের দায় সংস্থারই। তাঁদের মতে, এ সব ক্রেতা-সুরক্ষার পরিপন্থী ও অনৈতিক ব্যবসারই নামান্তর। এ ভাবে গ্রাহক-স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে, সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তাঁরা। দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, বিজ্ঞাপন ও বিপণনে টেলি সংস্থাগুলি বিপুল খরচ করলেও, গ্রাহকদের সমস্যার বিষয়গুলি সম্পর্কে জানাতে উদ্যোগী হয় না। সাধনবাবু বলেন, “পরিষেবার ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা স্বচ্ছ করতে ব্যবস্থা নিতে বলছি।”
উল্লেখ্য, মাস ছয়েক আগেও টেলি সংস্থাগুলিকে নিয়ে এ রকম বৈঠক হয়েছিল। সাধনবাবুর দাবি, তাতে কিছুটা উন্নতিও হয়। কিন্তু ফের অবস্থার অবনতি দেখেই আবার বৈঠকের সিদ্ধান্ত। এ বার অবশ্য বিষয়টি নিয়ে আরও কড়া হতে চান তিনি। ক্রেতা সুরক্ষার জন্য দফতরে চারটি ‘মিডিয়েশন সেল’ খোলা হয়েছে। দফতরের কর্তারা জানান, ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যাওয়ার আগে সেখানে যে কেউ অভিযোগ জানাতে পারেন। আগে সেখানে ডাকলেও সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা বহু ক্ষেত্রে ঠিক সময়ে আসতেন না। আর তা না করার কথাও সংস্থাগুলিকে কড়া ভাবে বলে দিয়েছেন মন্ত্রী। |