জনজোয়ারে ভেসে গেল ঢাকার রাজপথ। কাদের মোল্লা-সহ একাত্তরের ঘাতক শিরোমণিদের ফাঁসির দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে শুরু হওয়া বিক্ষোভ থেকে এ দিন মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রতি কোণ থেকে জড়ো হন লাখো মানুষ। রাজাকারদের প্রাণদণ্ডের দাবির সঙ্গে ডাক দেন মৌলবাদী জামাতে ইসলামিকে বয়কট ও নিষিদ্ধ করার। সে দিনের স্বাধীনতা যোদ্ধারা এ দিনের সমাবেশে হাজির হয়ে বকেয়া কাজ শেষ করার দায়িত্ব তুলে দিলেন তরুণ প্রজন্মের হাতে। |
ঢাকার শাহবাগ চত্বরে মহাসমাবেশ। ছবি: রয়টার্স |
এ দিন বেলা তিনটেয় শুরু হওয়ার কথা ছিল মহাসমাবেশের। কিন্তু দুপুর বারোটা থেকেই আশপাশের প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক ছেয়ে যায় মানুষে মানুষে। আগেই জানানো হয়েছিল, রাজনৈতিক নেতাদের স্বাগত জানানো হবে সমাবেশে। কিন্তু বক্তৃতা করতে দেওয়া হবে না। এ দিন বক্তৃতা দেন পরিচিত মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। সেই সঙ্গে চলে গণসঙ্গীত, স্লোগান। বক্তারা বলেন, বাঙালি জাতি লড়াই ভুলে গিয়েছে ভেবেই নতুন করে ফণা তুলছিল সে দিন স্বাধীনতার বিরোধিতা করা জামাতে ইসলামি। দেশ জুড়ে যথেচ্ছ দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে তারা ভেবেছিল, বাংলাদেশকে আবার তালিবান পাকিস্তানে পরিণত করবে। মঙ্গলবার হরতালের মধ্যেই হাতে হাত ধরে বিক্ষোভ শুরু করেছিল কিছু সাহসী তরুণ। বড়জোর শ’তিনেক। কিন্তু ঢাকার মানুষ তাদের পাশে দাঁড়াতেই সংখ্যাটা নিমেষে দাঁড়াল কয়েক হাজারে। কায়রোর তাহরির স্কোয়ারের মতো নতুন ইতিহাস গড়ল শাহবাগ স্কোয়ার।
এই জনজোয়ার থেকেই দাবি ওঠে জামাতকে নিষিদ্ধ করার। সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের ইতিহাস বার বার সেনাশাসনের বুটের নীচে চাপা পড়েছে। উন্নত গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। এখানে জামাতের মতো স্বাধীনতা-বিরোধীর জায়গা নেই। বিভিন্ন বক্তা বলেন, জামাতে ইসলামি সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর। তাদের বয়কট করতে হবে। তারা যাতে ফের ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন না দেখে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
মহাসমাবেশ থেকে জানানো হয়, শাহবাগ স্কোয়ারের আন্দোলন চলবে। |