|
|
|
|
অম্বিকেশ-কাণ্ডে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট |
সুপারিশ না মানলে রাখা কেন কমিশন |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের মনোভাব নিয়েই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। কার্টুন-কাণ্ডে ধৃত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলায় ক্ষুব্ধ আদালতের বক্তব্য, রাজ্য সরকার যদি মানবাধিকার কমিশন না-ই মানে, তা হলে এত খরচ করে এমন কমিশন রাখার কী দরকার? কমিশনের সুপারিশ না মানার যে প্রবণতা রাজ্য সরকার দেখাচ্ছে তা যথার্থ নয় বলেও মন্তব্য করেছে আদালত।
কার্টুন-কাণ্ডে ধৃত অধ্যাপককে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। অম্বিকেশবাবুকে যাঁরা গ্রেফতার করেছিলেন, সেই পুলিশ কর্মীদের শাস্তি এবং মামলাটি প্রত্যাহারেরও সুপারিশ করেছিল কমিশন। কিন্তু রাজ্য সরকার কোনও সুপারিশই মানেনি। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে অম্বিকেশ মহাপাত্র সংক্রান্ত জনস্বার্থের মামলাটির শুনানির সময় আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন।
রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা জেনে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারতি অরুণ মিশ্র মন্তব্য করেন, কমিশনের সুপারিশ রাজ্য সরকারকে কী ভাবে আইনগত ভাবে মানাতে হয়, তা হাইকোর্ট জানে। এ প্রসঙ্গে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে থাকার সময়ে তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথাও বলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, মানবাধিকার কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ মধ্যপ্রদেশ সরকার মানেনি। সে ক্ষেত্রে তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছিলেন। এখানেও তিনি সেই অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করতে চান। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি মন্তব্য করেন, রাজ্য সরকার যদি মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশকে মান্য না করে, তা হলে এত খরচ করে ‘লোক দেখানো’ রাজ্য মানবাধিকার কমিশন করার কী প্রয়োজন।
এই জনস্বার্থের মামলা দায়ের হওয়ার পরে মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কী হয়েছে, তারা কী সুপারিশ করেছে, রাজ্য সরকারের ভুমিকা-ই বা কী ছিল, সব জানিয়ে আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যকে আর একটি নতুন আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এক সপ্তাহ পরে মামলার শুনানি হবে।
প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে বলা হয়, মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ মানতে কোনও রাজ্য সরকার বাধ্য নয়। কিন্তু যে ভাবে এ দিন প্রধান বিচারপতি মধ্যপ্রেদেশে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, তাতে স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা ভাবছেন। কী ভাবে তিনি রাজ্য সরকারকে মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ মানতে বাধ্য করতে পারেন, তার কোনও ব্যাখ্যা প্রধান বিচারপতি দেননি। মধ্যপ্রদেশে তিনি কী ভাবে রাজ্য সরকারকে মানবাধিকার কমিশনের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করেছেন তার উদাহরণও দেননি।
রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে বলা হয়, মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ রাজ্য সরকার না মানলে যে কেউই হাইকোর্টের শরণাপন্ন হতে পারেন। হাইকোর্টের নির্দেশ রাজ্য সরকারের পছন্দ না হলে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে। |
|
|
|
|
|