|
|
|
|
ন্যাশনাল ফাইবার মিশন |
কুটিরশিল্পীদের প্রশিক্ষণ শুরু হল খড়্গপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
‘ন্যাশনাল ফাইবার মিশনে’ গ্রামীণ শিল্পীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। টানা ৫ বছর ধরে এই প্রকল্পে প্রায় ১৪ হাজার শিল্পীকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ বলেন, “গ্রামীণ শিল্পীরা যে পদ্ধতিতে কাজ করেন তার থেকে উন্নত পদ্ধতি শেখানোই আমাদের লক্ষ্য। যাতে তাঁদের তৈরি সরঞ্জাম সহজেই মানুষের মন আকর্ষণ করে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় নানা ধরনের কুটির শিল্প রয়েছে। কোথাও রয়েছে মাদুর কাঠির চাষ, যা থেকে তৈরি হয় মাদুর, কোথাও বাঁশ থেকে তৈরি করা হয় ঝুড়ি, ফুলের সাজি, টুপি, সাবুই ঘাসের নানা সরঞ্জাম এমনই নানা কিছু। কিন্তু বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে হাতে তৈরি জিনিসকে কোথাও টেক্কা দিচ্ছে যন্ত্রে তৈরি জিনিস। যন্ত্রে উৎপাদিত দ্রব্য শৌখিন ও আকর্ষণীয়, দামও কম। ফলে তার ক্রেতাও বেশি। তাই কুটির শিল্পের শিল্পীরা যাতে সহজেই যন্ত্রের ব্যবহার রপ্ত করে নিত্য নতুন সরঞ্জাম তৈরি করতে পারে তার কৌশল শেখানো হচ্ছে ৩০ দিনের এই প্রশিক্ষণে। প্রশিক্ষণের সময় যন্ত্র থেকে শুরু করে যাবতীয় কাঁচামালেরও খরচ দিচ্ছে সরকার।
প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি বছরে ন্যাশনাল ফাইবার মিশনে মাদুরে ৮২০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সবং, নারায়ণগড় ও পিংলা— এই তিনটি ব্লকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ৫ বছরে ৯ হাজার ৭০০ জন শিল্পীকে প্রশিক্ষণের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। বিনপুর ১, ২ ও নয়াগ্রাম ব্লকে সাবুই ঘাসে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ১১০ জনকে। ৫ বছরে ১৪০০ জন শিল্পীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাঁশে ৫ বছরে ১২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার মধ্যে চলতি বছরে দাঁতন ১ ও ২ ব্লকে ৭০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের রামজীবনপুর ও খাসবাড়ে ৪৪০ জনকে দেওয়া হচ্ছে তাঁতের প্রশিক্ষণ।
জানা গিয়েছে, খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ন্যাশনাল ফাইবার মিশনের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে প্রশিক্ষণের সঙ্গে চলবে গবেষণাও। প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্তমানে জেলার শিল্পীরা তাঁদের তৈরি সামগ্রী জেলার বিভিন্ন বাজারে বা মেলায় বিক্রি করেন। খুব বেশি হলে নিয়ে যান পাশের জেলায়। কিন্তু খড়্গপুরে প্রকল্পটি চালু হলে তা আন্তর্জাতিক মানের সামগ্রী তৈরিতে সাহায্য করবে। তখন জেলার এই শিল্পকর্ম সারা ভারতের সঙ্গে বিদেশেও রফতানি করার সম্ভাবনা রয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “প্রকল্পটি চালু হলে এই সমস্ত শিল্পীরা ভবিষ্যতে আরও অত্যাধুনিক সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ পাবেন। সে ক্ষেত্রে জেলার কুটির শিল্প আরও উন্নত হবে।” |
|
|
|
|
|