|
|
|
|
ভুটানি টাকা বন্ধে আশ্বাস সুব্বারাওয়ের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
উত্তরবঙ্গ ও অসমের ভুটান সংলগ্ন এলাকাগুলিতে ভুটানি টাকার রমরমা বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানালেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাও। পাশাপাশি, উত্তর-পূর্বে খুচরো সংকট কতটা বাস্তব, নাকি তা তৈরি করা হচ্ছে, তা নিয়েও খোঁজ নেবেন তিনি।
দু’দিনের অসম সফরে এসে গত কাল মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সার্বিক চেহারা খতিয়ে দেখেন তিনি। খানাপাড়ায় অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ স্টাফ কলেজে ‘স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটি’-র আলোচনা সভায় উঠে আসে, রাজ্যের ক্রেডিট-ডিপোজিট রেশিও (সিডিআর) হারের প্রসঙ্গও। অসমে তা ৪৬ শতাংশ। অথচ জাতীয় গড় ৭৬ শতাংশের বেশি। রাজ্যে ঋণ-আমানতের এই হার বাড়ানোর জন্য সুব্বারাওয়ের কাছে আর্জি জানান গগৈ। রাজ্যে, গত বছর ৬ লক্ষ ৪৪ হাজার কিষাণ ক্রেডিট কার্ড বিলি হওয়ার কথা ছিল। হয়েছে মাত্র ১ লক্ষ ৩৩ হাজার। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সুব্বারাওয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কৃষিক্ষেত্রে ঋণ না দেওয়ায় রাজ্য সরকার আরবিআই গভর্নরের সামনেই ব্যাঙ্কগুলির সমালোচনা করে। সুব্বারাও জানান, কৃষি ও অ-কৃষিযোগ্য জমির ফারাক এবং জমির বিনিময়ে কৃষিঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে নীতিগত বিভিন্ন সমস্যার ফাঁসেই কৃষিঋণের পরিমান কম হচ্ছে। উত্তর-পূর্বে ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্রকে সাহায্য করা ও ১ লক্ষ আত্মনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলার জন্য সুব্বারাও ‘নাবার্ড’-কে নির্দেশ দেন। রাজ্যে ১৩,১৪৭ জন প্রতি একটি করে ব্যাঙ্কের শাখা থাকা উচিত। সেই অনুযায়ী রাজ্যে ২৪০০ ব্যাঙ্কের শাখা থাকা দরকার। কিন্তু ২০১১ সালের হিসাবে সংখ্যাটি ১৭০৬। গ্রামের মানুষকে ব্যাঙ্কের সুবিধা পৌঁছে দিতে রাজ্যে আরও ২০০ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখা খোলার কথা ঘোষণা করেন রাও।
রাজ্যের ভুটান সীমান্ত ও পশ্চিমবঙ্গেল নেপাল-ভুটান সীমান্তে বিদেশি নোটের রমরমা নিয়ে সুব্বারাও তদন্তের আশ্বাস দেন। অসম-মেঘালয়ে, ৫ টাকা বা তার কম খুচরো কোনও দোকানে ফেরত দেওয়া হয় না। বদলে ধরিয়ে দেওয়া হয় লজেন্স। এ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০১০ ও ২০১১ সালে বেশ কয়েকটি ‘কয়েন মেলা’-র আয়োজন করেছিল। ব্যাঙ্কগুলিতে ‘কয়েন মেশিন’ বসানোর প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা বেড়েই চলেছে। সুব্বারাও অবশ্য বলেন, এই সমস্যার কথা তিনি জানতেনই না। তিনি বলেন, “উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে কয়েনের সমস্যা সত্যি রয়েছে কী না তা নিয়ে খোঁজ নিতে হবে। প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নেব।”
রাজ্যের জাল নোট যে ভাবে ছড়াচ্ছে তা নিয়েও রাজ্য সরকার আশঙ্কা প্রকাশ করে। অভিযোগ ওঠে, জাল নোট-সহ কোনও সাধারণ মানুষ ব্যাঙ্কে গেলে তাঁকেই প্রথমে হেনস্থা হতে হয়, আটক হতে হয়। সুব্বারাও বলেন, “এ ক্ষেত্রে আইন তেমনই। বাহককেই প্রথম সন্দেহ করা হয়। নিরীহ মানুষকে বাঁচাতে এক্ষেত্রে আইন সংশোধন হওয়া প্রয়োজন।” উত্তর-পূর্বে বেসরকারি অর্থ লগ্নিকারী সংস্থার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে চিন্তিত সুব্বারাও বলেন, “এটি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আওতায় পড়ে না। এদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ও পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে, আর্থিক প্ররোচনা সংক্রান্ত নানা ধরণের অপরাধ বিষয়ে রাজ্য পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।” |
|
|
|
|
|