তৃণমূলের কর্মচারি ইউনিয়নের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রইল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারিদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। বুধবার উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারের নির্দেশে সোমবারের খেলা স্থগিত রাখার কথা সার্কুলার জারি করে জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আপাতত দু’টি কর্মচারি সংগঠনের মধ্যে টানাপোড়েনের জেরে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই কিছুদিন পরেই তা করা হবে বলে ভাবা হয়েছে।”
এই বছরই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বোর্ডের আওতার বাইরে এই আলাদা করে কর্মচারি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিয়নের সম্পাদক সীতারাম মুখোপাধ্যায় ও বাসুদেব সিংহরায়কে। কিন্তু তাতে আপত্তি জানান, তৃণমূল অনুমোদিত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ। তার জেরেই স্থগিত রইল কর্মচারিদের এই ক্রীড়া। শৈলবাবুদের বক্তব্য, “সীতারামকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল, একটি কমিটি তৈরি করে তার হাতে প্রতিযোগিতার দায়িত্ব দেওয়া। ওদের দুই নেতাকে আহ্বায়ক করে কমিটি তৈরি করা হলেও আমাদের ডাকাই হয়নি।”
সীতারামবাবুদের পাল্টা বক্তব্য, “আমরাই গতবার ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। যাঁরা আপত্তি করেছেন, এ ব্যাপারে তাঁদের সমর্থন প্রায় নেই বললেই চলে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র স্বীকৃতি রয়েছে আমাদের সংগঠনের।” তাঁর বক্তব্য, “এই কর্মচারি ক্রীড়ার আয়োজন করতে চায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগ। তাই গতবারের মতই এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দায়িত্ব উপাচার্য আমাদের নিতে বলেন। আমরা বৃহস্পতিবার উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে এসেছি। ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন আমরাই করবো।” তিনি জানান, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ৮৫ হাজার টাকার চেক পান। তার মধ্যে ৭০ হাজার টাকা ওই স্পোর্টসে ব্যবহার করার কথা ছিল। সেই টাকায় তাঁরা প্রতিযোগিতার পুরস্কারও কিনে ফেলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস অফিসার সুরজিৎ নন্দীর বক্তব্য, “সারা ভারত বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতা চলার সময়ে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বলা হয়েছিল, কর্মচারীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনের দায়িত্ব নিতে। তখন আমি ব্যস্ত থাকায় বলেছিলাম, পরে ওই বিষয়ে কথা বলবো। কিন্তু এক বারও বলিনি দায়িত্ব নেবো না। রেজিস্ট্রার দু’দিন আগে আমাকে চিঠি দিয়ে ওই প্রতিযোগিতার আয়োজনও করতে বলেছেন। তার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হবে।”
উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারের অবশ্য বক্তব্য, “কর্মচারীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অবশ্যই হবে। কিন্তু তা নিয়ে কলহ হলে কী করে চলবে! তাই ওই প্রতিযোগিতা পিছিয়ে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করছি। এই প্রতিযোগিতা ক্রীড়া বোর্ডই আয়োজন করবে।” |