|
|
|
|
অ্যারোজকে হারিয়ে ফের শীর্ষে মর্গ্যান ব্রিগেড |
তানিয়া রায় • কল্যাণী |
অ্যারোজ ১ (অলউইন)
ইস্টবেঙ্গল ২ (চিডি, লালরিন্দিকা) |
ডার্বি ম্যাচ এখনও ছ’ দিন দূরে। ট্রেভর জেমস মর্গ্যান কি ছ’-রাত নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবেন?
অ্যারোজের বিরুদ্ধে জিতলেও, কল্যাণী স্টেডিয়ামে খেলা শেষ হওয়ার পর কিন্তু ঘুরপাক খাচ্ছে একটাই প্রশ্ন, ওডাফা-টোলগের যুগলবন্দির বিরুদ্ধে লাল-হলুদের জোড়া স্ট্রাইকার হবেন কে? আরও পরিষ্কার করে বললে, এডে চিডির সঙ্গে সঙ্গত করবেন কে?
অ্যান্ড্রু বরিসিচ পাতে দেওয়ার যোগ্য নন। শনিবার তাঁকে দেখে মনে হল, মর্গ্যানের নতুন রিক্রুট এই অস্ট্রেলীয় আর যাই হোক গোল করে ম্যাচ জেতানোর উপযোগী রসদ নন। কর্তাদেরও অনেকেরই সে রকম মত। ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ অবশ্য গত মরসুমে যেমন অ্যালান গাওকে আড়াল করতেন, এ দিন তেমনই দাঁড়ালেন বরিসিচের পাশে। বলে দিলেন, “আপনারা বলছেন বটে, ও কিন্তু খারাপ খেলেনি।”
|
|
মশাল জ্বাললেন সেই চিডি। কল্যাণীতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
সাহেব কোচ বরিসিচের পক্ষে দাঁড়াতেই পারেন, কিন্তু তাঁকে ডার্বিতে নামালে কতটা সাফল্য পাবেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে! এ দিকে মর্গ্যানের হাতে থাকতে পারত আরও তিনজন স্ট্রাইকার। মননদীপ সিংহ, রবিন সিংহ এবং বলজিৎ সিংহ সাইনি। কিন্তু হারাধনের একটি ছেলে হারানোর মতোই লাল কার্ড দেখে বড় ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন মননদীপ। রবিন এবং বলজিতের ফর্ম খুবই খারাপ। তাই পঞ্জাব তনয়ের বিপক্ষের ফুটবলারকে অযথা ধাক্কা মেরে লাল-কার্ড দেখা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না মর্গ্যান। এতটাই ক্ষুব্ধ তিনি যে প্রকাশ্যেই বলে দিলেন, “আশা করি মননদীপের উচিত শিক্ষা হয়েছে। ডার্বিতে ওর না থাকাটা নিঃসন্দেহে বড় ক্ষতি।”
শুধু স্ট্রাইকাররাই বা কেন, ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠের হালও তো ভাল নয়। সাপ্লাই লাইন উধাও, সেই জমাট বাঁধার ব্যাপারটাও নেই। মিস পাসেরও ছড়াছড়ি। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েই তো শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল অ্যারোজ।
অ্যারোজ টিমটা ফেডারেশনের। দলে কোনও বিদেশি নেই। আর্থার পাপাসের ছেলেদের সবথেকে ভাল দিক হল, প্রচণ্ড দৌড়য় আর প্রত্যেকেই দুরন্ত ফিট। এটা দিয়েই তারা নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল লাল-হলুদ ব্রিগেডকে। এতটাই যে, কার্ড সমস্যায় পড়ে যাওয়া মেহতাব ও পেনকে শেষ পর্যন্ত নামাতেই হল মর্গ্যানকে। বিরতির আগেই ২-১ এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ম্যাচটা থেকে তিন পয়েন্ট পেতে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ইঞ্চিতে লড়তে হল মেহতাবদের। শেষ মুহূর্তে অ্যারোজ সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে ডার্বির আগে পুরো পয়েন্ট তাঁবুতে নিয়ে যেতে পারতেন না ওপারা-পেনরা। উঠতে পারতেন না লিগ শীর্ষে। যদিও তাঁরা লিগ টেবিলের দু’নম্বরে থাকা চার্চিল ব্রাদার্সের চেয়ে দু’টি ম্যাচ বেশি খেলেছেন। তীব্র চাপে পড়ে যাওয়া ম্যাচ শেষ পর্যন্ত বের করে আনার পর মর্গ্যান স্বীকার করে নিলেন, টিম ভাল খেলেনি। “দল যে ভাল খেলেছে এটা বলতে পারব না। তবে এই মুহূর্তে তিন পয়েন্টটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেটা অন্তত হাতছাড়া হয়নি।” বলে দিলেন সাহেব কোচ।
এ যাত্রা তো রক্ষা হল, কিন্তু করিম বেঞ্চারিফার দলের বিরুদ্ধে মর্গ্যান রক্ষা পাবেন তো? লিগ টেবিলের নানা অঙ্কে ফের চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে ফিরেছে ইস্টবেঙ্গল। ফলে ডার্বি জেতাটা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পেন-মেহতাবদের কাছে। দেখার, চতুর ব্রিটিশ কোচ কীভাবে টপকান এই কঠিন বাধা। |
ইস্টবেঙ্গল: অভিজিৎ, নওবা, গুরবিন্দর, ওপারা, সৌমিক, সুবোধ (মেহতাব), সঞ্জু, লোবো (পেন), লালরিন্দিকা, বরিসিচ (মননদীপ), চিডি।
|
লিগ-যুদ্ধ
বাংলা ১ গোয়া ২ |
ইস্টবেঙ্গল (১৯ ম্যাচে ৩৯) |
খেলা বাকি মোহনবাগান, এয়ার ইন্ডিয়া, ইউনাইটেড স্পোর্টস, ইউনাইটেড সিকিম, স্পোর্টিং, ডেম্পো, লাজং
কোথায় এগিয়ে সাতের মধ্যে ছ’টা হোম ম্যাচ।
কোথায় পিছিয়ে শেষ পাঁচ ম্যাচে ধারাবাহিকতার অভাব। জয়-৩, হার-২, গোল পার্থক্য ৬-৬। |
চার্চিল ব্রাদার্স (১৭ ম্যাচে ৩৮) |
খেলা বাকি ইউনাইটেড স্পোর্টস, মোহনবাগান (২), পুণে এফসি (২), এয়ার ইন্ডিয়া, ওএনজিসি, সালগাওকর, ডেম্পো
কোথায় এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল শীর্ষে থাকলেও, দু’টো ম্যাচ কম খেলায় পাঁচ পয়েন্টের পার্থক্য।
কোথায় পিছিয়ে বেটোর চোট এবং দলের স্টপার বিলালের অনুপস্থিতি। |
ডেম্পো (১৮ ম্যাচে ৩৫) |
খেলা বাকি এয়ার ইন্ডিয়া, স্পোর্টিং, পুণে এফসি, পৈলান অ্যারোজ, চার্চিল, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, লাজং
কোথায় এগিয়ে মাঝপথে খেই হারিয়ে ফেললেও, লিগ জেতার অসীম খিদের জোরে প্রত্যাবর্তনের অদ্ভুত ক্ষমতা।
কোথায় পিছিয়ে শেষ পাঁচ ম্যাচে ভাইচুংয়ের দলকে ৭-০ গোলে হারানো ছাড়া আর কোনও সাফল্য নেই। ড্র-৩, হার-১। |
বাগানের আশা-নিরাশা |
দুপুরে ইউনাইটেড সিকিমের হারে বাগানে সামান্য স্বস্তি এলেও, রাত গড়াতেই অবনমনের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিল সালগাওকর। শনিবার পুণে এফসি-কে ২-০ গোলে হারিয়ে ডেভিড বুথের দল এখন ১৮ ম্যাচে ১৭। লাজং ১৯ ম্যাচে ১৯, ইউনাইটেড সিকিম ১৯ ম্যাচে ১২, মোহনবাগান ১৪ ম্যাচে ৫। |
|
|
|
|
|
|