মঞ্চ প্রস্তুত। তা বলে রঙিন কাপড়ে ঢাকা, ম্যাড়াপ-মাইকের ওই ঘেরাটোপে সটান উঠে পড়া?
ভাবতেই পারেন না প্রান্তিক মানুষগুলো। শাড়ি, শাল, বাসনকোসন নয়, দিন কয়েক আগে সেই ‘অধরা’-অচেনা মঞ্চে ঠাঁই পেয়েই আপ্লুত হরিণঘাটা নগরউখড়ার আবাদি চাষি পানু সাহা, মোল্লাবেলিয়ার জরি শিল্পী মানিক বারিক কিংবা কল্যাণী কাঁঠালতলার পরিচারিকা মিনা চৌধুরীরা। চোখের জল সামলে তাঁরা বলছেন, “আমরা ভাবতেই পারছি না!”
|
না ভাবা অনেক কিছুই এ ভাবেই বোধহয় হয়। —নিজস্ব চিত্র। |
পারতেনও না যদি না স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তা তাঁদের এ ভাবে ‘টেনে’ তুলত। এই উদ্যোগ অবশ্য সরকারী অনুদানে নয়। মহকুমাশাসক শৈবাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গতে বাঁধা কাজের বাইরেও বহু কাজ বাকি থেকে যায়। প্রান্তিক মানুষগুলো হয়তো কখনও কেমনে শাড়ি, কম্বল পেয়ে থাকেন। তা বলে ওঁদের অধিকাংশেরই গৃহস্থালীর সরঞ্জাম বলে কিছু নেই। তাই আমরা সবাইকে হিসাবে সব রকমের বাসনও দিয়েছি।’’ কল্যাণীর গা ঘেঁষে থাকা হতদরিদ্র মানুষগুলোর দুরবস্থা দেখে অনেকদিন ধরেই পরিকল্পনা ছিল এমন কিছু করার। অফিসের কাজের ফাঁকেই একটু একটু করে সবকিছুর প্রস্তুতি নিয়ে, বেতনের টাকা জমিয়ে শৈবালবাবুর এই উদ্যোগ। তিনি অবশ্য জানান, এলাকার বহু মানুষই এগিয়ে এসেছিলেন এ উদ্যোগে। আর, কল্যাণী মহকুমার তিন ব্লক থেকে আসা সাফাইকর্মী সাগরিকা পাল, বাসন্তী বাঁশফোড় কিংবা প্রৌঢ় রিকশাচালক চুনচুন সিংহ বলেন, ‘‘আমাদেরকেও কেউ মঞ্চে তুলে সম্মান জানাবে এটা এই জীবনে ভাবিনি। আমাদের জন্য উঠে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করছেন কেউ এ-ও কী কোনও দিন ভেবেছিলাম!’’ |