|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৬... |
|
সময় এখন ভয়ানক মাগ্যি... |
বইপোকা |
‘ছ’দুগুণে বারো, যুক্ত এক, ইতি গজ তিন... বয়স ২৬ তারিখ...জমা আড়াই সের...খরচ ৩৭ বৎসর।’ মিলনমেলায় গত দিবস বৈকালে শ্রী কাক্বেশ্বর কুচকুচের শ্লেটখানা লইয়া দেখি এই লেখা। জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘এ সব কী লিখছ আবোল-তাবোল?’ কাক বলিল, ‘ওসব লিখতে হয়। তা না হলে হিসেব টিকবে কেন? ঠিক চৌকসমতো কাজ করতে হলে গোড়ায় এসব বলে নিতে হয়।’ এ সব মানে? ‘ওই যে, ছ’দুগুণে বারো দিন, উদ্বোধনে যুক্ত এক, ইতি গজ তিন দিন’, কাক বলিতেছে, ‘৩৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলার মাঠে বসিয়া আছ, আর এই হিসাবটি মস্তকে ঢুকিতেছে না! কী বিপদ!’ বেজায় লজ্জা পাইলাম। ভাগ্যিস মার্জারিকে লইয়া যাই নাই তাই তাহার ‘ফ্যাঁচ’ হাসিটি হইতে নিস্তার পাইলাম। কাক বলিয়া চলিল, ‘দেখেই বোঝা যাচ্ছে অঙ্কটা এল্-সি-এম্ নয়, তবে জি-সি-এম্ হইতে পারে। জি ফর গিল্ড, সি ফর কর্তা, এম ফর...না থাক’। অঙ্ক শব্দের নানার্থ লইয়া প্রশ্ন করিতে যাইব, কাক ভারি অবাক হইয়া বলিল, ‘তোমাদের দেশে সময়ের দাম নেই বুঝি?’ আমি বলিলাম, ‘সময়ের দাম কী রকম?’ কাক বলিল, ‘এখানে কদিন থাকতে, তাহলে বুঝতে। আমাদের বাজারে সময় এখন ভয়ানক মাগ্যি, এতটুকু বাজে খরচ করবার যো নেই। এইতো কদিন খেটেখুটে চুরিচামারি করে খানিকটে সময় জমিয়েছিলাম, তাও তোমার সঙ্গে পচা তর্ক করতে অর্ধেক হয়ে গেল।’ বলিয়া সে আবার হিসাব করিতে লাগিল। আমি অপ্রস্তুত হইয়া ফিরিব কি ফিরিব না ভাবিতেছি, এমন সময় হঠাৎ গাছের ফোকর থেকে সুরুৎ করে পিছলিয়ে মাটিতে নামল দেড়হাত লম্বা এক বুড়ো, তার পা পর্যন্ত সবুজ রঙের দাড়ি, মাথাভরা টাক। টাকের উপর খড়ি দিয়ে লিখছে, ‘এই দ্যাখো নোটবুক
পেন্সিল এ হাতে
লিখিয়াছি ২৬
ছাব্বিশই হোক বুক’। |
|
|
|
|
|