ছুটি দিল হাসপাতাল
জামিন নাকচ, সাত দিনের জেল-হাজত আরাবুলের
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন। কিন্তু শুক্রবার বাড়ি ফিরতে পারলেন না ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। বামনঘাটায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার মামলায় এ দিন জামিনের আবেদন নাকচ করে আরাবুলকে সাত দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন সকালেও আরাবুল ফের চিকিৎসকদের জানান, তাঁর ‘বুকে ব্যথা হচ্ছে’ এবং ‘গা বমি করছে’। এর আগে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, আরাবুলের ‘ট্রেড মিল টেস্ট’ হবে। সেই সঙ্গে ‘অ্যাঞ্জিওগ্রাফি’ও হতে পারে। তবে হাসপাতালের সুপার তমালকান্তি ঘোষ এ দিন জানান, রোগীকে পর্যবেক্ষণের পরে চিকিৎসকদের মনে হয়েছে, এখনই ওই সব পরীক্ষার দরকার নেই। আপাতত তাঁকে সুস্থ বলেই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।

বারুইপুর কোর্টের সামনে
আরাবুল।—নিজস্ব চিত্র
আরাবুলকে ওয়ার্ড থেকে বার করার সময় কার্ডিওলজি বিভাগের সামনে ছিল পুলিশে-পুলিশে ছয়লাপ। ছিলেন আরাবুলের অনুগামীরা। প্রবল ধাক্কাধাক্কির মধ্যেই পুলিশ তাঁকে গাড়িতে তুলে প্রথমে নিয়ে যায় বারুইপুর থানায়। সেখানে ঘণ্টাখানেক জেরা করেন তদন্তকারীরা। দুপুর ২টো নাগাদ তাঁকে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হয়। আইনজীবীদের ভিড়ে মিশে সেখানে আরাবুলকে বাইরের খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দেন তাঁর এক অনুগামী। অসুস্থতার কারণে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট হিমিকা দাস বন্দোপ্যাধ্যায় নিজেই নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৪টেয় তিনি আদালতে এলে শুনানি শুরু হয়।
সিপিএম নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলার মামলায় গত সোমবার আরাবুলের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতেই তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে আদালত। তবে ৮ জানুয়ারি বামনঘাটায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার মামলার (কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার কেস নম্বর-১১) এ দিনই প্রথম শুনানি হল।
শুনানির শুরুতেই অভিযোগকারী (বামনঘাটার ঘটনায় আহত) সিপিএম কর্মী হাসেম আলি মোল্লার আইনজীবী সুশীল চক্রবর্তী বলেন, “আদালতে সরকারি কৌঁসুলি নেই। সরকারি কৌঁসুলি না থাকলে জামিনের আবেদনের শুনানি করা যায় না।”
বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, হাফিজুর রহমান-সহ আরাবুলের ১৭ জন আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করেন, বামনঘাটায় সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছিল। অভিযোগে বলা হয়েছে, সে দিন আরাবুলের নেতৃত্বে গুলি চালানো এবং বোমাবাজি হয়। কিন্তু আরাবুলের গুলিতেই যে অভিযোগকারী জখম হয়েছেন, এমন নির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। তা ছাড়া, আরাবুল অসুস্থ। এই দু’টি কারণে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হোক।
পুলিশের পক্ষ থেকে এ দিন বামনঘাটা-কাণ্ডে ঘটনাস্থল থেকে কিছু লোহার রড, বাঁশ ও ইটের টুকরো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে আদালতের কাছে একটি তালিকা (সিজার-লিস্ট) জমা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আদালতের কাছে জমা দেওয়া পুলিশ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, আরাবুলকে জেরা শেষ হয়েছে। সেই সংক্রান্ত নথিও জমা দেওয়া হয়। আরাবুলের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাট, সাক্ষী ও অভিযোগকারীকে ভয় দেখানোর আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে পুলিশ আদালতের কাছে তাঁকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার আর্জি জানায়। শেষ পর্যন্ত বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করেন।
বাইরে অপেক্ষারত আরাবুলের অনুগামীরা হতাশ হয়ে পড়েন। কয়েক জন সঙ্গে আনা মালা ছিঁড়ে ফেলেন। সন্ধ্যায় আরাবুলকে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে।
এ দিন এক ফাঁকে আরাবুলকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, “তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাকে দেখতে হাসপাতালে এলেন না কেন?” আরাবুলের জবাব, “ওটা নেত্রীকেই জিজ্ঞাসা করুন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.