|
|
|
|
ভোটে কাঠি ত্রিপুরায় |
কংগ্রেসের বাম-বিরোধী জোটে সামিল এনসিটি
আশিস বসু • আগরতলা |
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে ত্রিপুরায় শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর অ-বাম জোট তৈরি হল। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বেই এই জোট গঠন করা হয়েছে। আইএনপিটি-র সঙ্গে জোটের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস। আজ রাজ্যের আর একটি উপজাতি দল, ন্যাশনালিষ্ট কাউন্সিল অফ ত্রিপুরা-র (এনসিটি) সঙ্গে নিবার্চনী আঁতাতের কথা জানিয়ে দিল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মন বলেন, ‘‘ধর্মনিরেপেক্ষ বামবিরোধী জোট শক্তিশালী করার উদ্দেশে এনসিটি দল কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করেছে। উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত রামচন্দ্রঘাট আসনে এনসিটি প্রার্থী দেবে। বাকি যে যে আসনে প্রার্থীদের নাম ইতিমধ্যেই এনসিটি ঘোষণা করেছে সেই সব আসন থেকে তারা প্রার্থী প্রত্যাহার করবে।
এনসিটি’র রাজ্য সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক অনিমেষ দেববর্মা জানান, রাজ্যে বাম শাসনের অবসানে তাঁরা কংগ্রেস-আইএনপিটি জোটে সামিল হলেন। যদিও রামচন্দ্রঘাট আসনটি কিছুতেই ছাড়তে রাজি নয় আইএনপিটি। আবার এনসিটি রামচন্দ্রঘাট আসনটি ছাড়া অন্য কোনও আসনে এই মুহূর্তে নির্বাচনী লড়াই করতে রাজি নয়। অনিমেষবাবুই ওই আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে বৃহত্তর স্বার্থে এনসিটিকে কংগ্রেস সমর্থন করবে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক সিন্হা। একই কেন্দ্রে কংগ্রেসের দুই জোট সঙ্গী কী ভাবে প্রার্থী দেয়, প্রদেশ নেতৃত্ব এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘রাজনীতিতে সবই হয়।’’ আইএনপিটি প্রধান বিজয় রাংখল বলেন, ‘‘একই কেন্দ্রে দুই জোট সঙ্গী আইএনপিটি এবং এনসিটি, কী ভাবে লড়াই হবে তা আমার জানা নেই!’
এ দিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এ রাজ্যে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে। দলের কিছু কর্মী ইতিমধ্যেই সমাজবাদী দলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতা অরুণ ভৌমিক বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় বাম শাসনের অবসানে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটকে সম্পূর্ণ ভাবে সমর্থন করছি।’’ অবশ্য ত্রিপুরায় কংগ্রেস-জোটকে সমর্থন বা বিরোধিতা করার বিষয়ে তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে কোনও সবুজ সংকেত তাঁরা যে পাননি, অরুণবাবু তাও স্বীকার করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায় বর্মনের দাবি, ‘‘জিরানিয়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা কংগ্রেস প্রার্থীদের মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার মিছিলে সামিল হয়েছেন।’’ ‘পরিবর্তন’-এর ডাকে তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকরা যে ভাবে সাড়া দিচ্ছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এর জন্য তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব-সহ দলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’ কংগ্রেস জোটকে সিপিএমের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী, পিডিএস-ও সমর্থন করছে বলে প্রদেশ নেতৃত্ব দাবি করেছেন।
অন্য দিকে, প্রদেশ কংগ্রেসে বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করা রাজ্য কংগ্রেসের উপজাতি সেলের নেতাদের সুদীপবাবুরা শেষ পর্যন্ত সঙ্গে আনতে পেরেছেন। কয়েক দিন আগে টিকিট না পাওয়ায় তাঁদের কয়েক জন নেতা বিভিন্ন পদ থেকে ইস্তফা দেন। আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত থেকে উপজাতি সেলের নেতা দেবব্রত কলই বলেন, ‘‘নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার কথা আমরা ঘোষণা করেছিলাম। সেই সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।” সুদীপবাবুর নেতৃত্বেই তাঁরা বামবিরোধী আন্দোলন শক্তিশালী করবেন বলে দেবব্রতবাবু জানান। |
|
|
|
|
|