উত্তরবঙ্গ উৎসবে ব্রাত্য স্থানীয় শিল্পীরাই
ত্তরবঙ্গে উৎসবে কোচবিহার জেলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীদের ব্রাত্য করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। জেলার শিল্পীদের একাংশ ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। অনুষ্ঠানে বহিরাগত নাট্যগোষ্ঠীকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও কোচবিহারের কোনও নাট্যগোষ্ঠী ডাক না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারাও। সব মিলিয়ে ২৯ জানুয়ারি থেকে ৩ ফ্রেব্রুয়ারি কোচবিহারে আয়োজিত ওই উৎসব ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হল। স্থানীয় শিল্পী ও নাট্যগোষ্ঠীর অভিযোগ, কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে উৎসবের মূল অনুষ্ঠান হচ্ছে। কলকাতার শিল্পী স্বপন বসু, ইন্দ্রানী সেন, ইন্দ্রনীল সেন, ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়, সুতপা বন্দোপাধ্যায়ের পাশাপাশি ভূমি ও দোহার ব্যান্ডের শিল্পীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
কিন্তু স্থানীয় শিল্পীদের হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া কাউকেই উদ্যোক্তারা ডাকেননি। নাটকের ক্ষেত্রেও কলকাতা ও শিলিগুড়ির দুটি নাট্যগোষ্ঠী আমন্ত্রিত। জেলার কোনও দল উৎসবে নাটক করার জন্য ডাক পায়নি। কোচবিহারের খ্যাতনামা ভাওয়াইয়া শিল্পী প্যারিমোহন দাসের ছেলে পরেশ দাস বলেন, “ভাওয়াইয়া গাই। রবীন্দ্র সংগীতের চর্চাও রয়েছে। কিন্তু আমাকে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে জানানো হয়নি। স্থানীয়রা উপেক্ষিত।”
উত্তরবঙ্গ রবীন্দ্র অ্যাকাডেমির দেবযানী গুহ বলেন, “বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করে দেখলাম হাতে গোনা কয়েকজন ডাক পেলেও উৎসবে আমাদের কিছু জানানো হচ্ছে না। ক্ষোভে তাই শিলিগুড়ি চলে এসেছি। এ বার রবীন্দ্র সঙ্গীতের চর্চাটা শুধু নিজের ভাল লাগার জন্য করতে চাইছি।” ভাওয়াইয়া সঙ্গীতে জেলার পরিচিত মুখ আষেয়া সরকার বলেন, “উপেক্ষা গা সওয়া। কেন পছন্দের কয়েক জনকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে উদ্যোক্তারা তা বলতে পারবেন।”
নাট্যগোষ্ঠীগুলির ক্ষোভ চরমে। কোচবিহারের ইন্দ্রায়ুধ নাট্যগোষ্ঠীর দীপায়ন ভট্টাচার্য বলেন, “জেলা উৎসব হচ্ছে। কিন্তু এখানকার দলকে ডাকা হয়নি দেখে অবাক লাগছে। আমরা শুধু ক্রেতা, শ্রোতা দর্শক হয়েই থাকব।” মাথাভাঙার গিলোটিন নাট্য সংস্থার কর্তা নারায়ণ সাহার কথায়, “সরকারি অনুষ্ঠানে ডাক পেলে ভাল লাগত। কিন্তু কেন ডাকা হল না সেটা উদ্যোক্তারা ভাল বলতে পারবেন। আমরা গত ৩০ বছর যেভাবে নাট্যচর্চা করছি সেভাবে চালিয়ে যাব।”
গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে উদ্যোক্তারা। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক তথা জেলার ওই উৎসব কমিটির সম্পাদক তপন তরফদার বলেন, “রবীন্দ্র ভবন বুকিং থাকায় ছয় দিন নাটকের ব্যবস্থা করা যায়নি বলে সমস্যা হয়েছে। তবে আমরা ভাওয়াইয়া, পল্লিগীতি, নজরুল গীতি সহ সঙ্গীতের অন্যান্য বিভাগে যতটা সম্ভব জেলার শিল্পীদের রাখার চেষ্টা করেছি।” উৎসব কমিটির সাংস্কৃতিক বিভাগের সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, “বিকল্প মঞ্চের ব্যবস্থা করে জেলার কোনও নাট্যদলের অনুষ্ঠান মহকুমাস্তরে দেওয়া যায় কি না সেটা দেখা হবে। নতুন করে স্থানীয় শিল্পীদের কিছু নাম সংযোজনের ব্যাপারে চেষ্টা করব।”
উদ্যোক্তারা যাই বলুন না কেন, প্রতিদিন রাসমেলার মাঠে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান হবে। প্রতিদিনই নির্দিষ্ট সময়ের অর্ধেকের বেশি সময় বহিরাগতদের জন্য ইতিমধ্যে বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২১ লক্ষ বাজেটের উৎসবের সিংহভাগ খরচ ধরা হয়েছে বহিরাগত শিল্পীদের জন্যই। স্থানীয় শিল্পীদের গড়ে মাথাপিছু সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা সাম্মানিক দেওয়া হচ্ছে। জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিকের দাবি, “বহিরাগত খ্যাতনামাদের সঙ্গে স্থানীয়দের গুলিয়ে ফেললে ঠিক হবে না। লোকশিল্পীদের সরকার নির্ধারিত সাম্মানিকের চেয়ে বেশি টাকা দেওয়া হচ্ছে।” স্থানীয় শিল্পী মহলের প্রশ্ন, লোকশিল্পীদের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত সাম্মনিকের যুক্তি দেখানো হলে বহিরাগতদের নিয়ে মাপকাঠি কেন হবে না?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.