নামেই ডাক্তারখানা। অথচ ডাক্তার নেই, ওষুধ নেই, কম্পাউন্ডার নেই, কোনও সহকারীও নেই! সরকারি সংস্থা ইএসআই-এর সার্ভিস ডিসপেন্সারিগুলি (এসডি) নিয়ে এক সমীক্ষায় নেই-রাজ্যের এই করুণ ছবি উঠে এসেছে। রাজ্যের শ্রম দফতরের তৈরি টাস্ক ফোর্স প্রায় সব ক’টি এসডি-তে সমীক্ষা চালিয়ে সরকারকে একটি রিপোর্ট দিয়েছে। সরকারি এই ডাক্তারখানাগুলির শোচনীয় অবস্থার কথা মেনে নিয়েছেন শ্রম দফতরের কর্তারা।
টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টে বলা হয়েছে, দু’চারটি এসডি বাদ দিলে প্রত্যেকটিতেই প্রবল স্থান সঙ্কট রয়েছে। বসার জায়গা না থাকায় বারান্দা বা সিঁড়িতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় অসুস্থ শ্রমিককে। অনেক জায়গায় আলো-পাখাও
নেই। কম্পিউটারে শুধু নামটুকু নথিভুক্ত করা যায়।
ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, এমনকী শিশুদের সাধারণ ওষুধও অমিল। শ্রমিক-রোগীদের ওষুধ কিনতে হয় বাইরে থেকে।
ইএসআই-এর নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেকটি এসডি-র নোটিস বোর্ডে ওষুধের তালিকা টাঙিয়ে রাখার কথা। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, কোনও এসডি-তেই তা করা হয় না। টাস্ক ফোর্স জানিয়েছে, বারাসত, নৈহাটি, কাঁকিনাড়া, গৌরহাটি ও বরাহনগরের মতো বেশ কয়েকটি এসডি-তে রোগীর ভিড় বেশি।
কিন্তু ডাক্তার ও অন্য কর্মী প্রায় না থাকায় পরিষেবাই পণ্ড হতে বসেছে। টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ, প্রতিটি এসডি-কে আগাম তিন মাসের ওষুধ মজুত রাখার লিখিত নির্দেশ দিক সরকার। যে সব যন্ত্রপাতি এসডি-তে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে, সেগুলি নিকটবর্তী ইএসআই হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কেনা আটকাতে এসডি-গুলিতে যথেষ্ট ওষুধ রাখতে হবে।
শ্রম দফতর সূত্রের খবর, ইএসআই প্যানেলভুক্ত ডাক্তারের সংখ্যা কম থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। অ্যডমিনিস্ট্রেটিভ মেডিক্যাল অফিসার সুরজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, বর্তমানে রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবার ইএসআই-এর আওতাভূক্ত। অথচ, ডাক্তারের সংখ্য মাত্র সাড়ে চারশো।
তিনি জানান, কয়েক দশক আগে স্থানীয় ডাক্তাররা ইএসআই-এর প্যানেলভুক্ত হতেন। এঁদের বলা হত ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট মেডিক্যাল প্র্যাক্টিশনার’, বা আইএমপি। কম টাকা দেওয়ায় নতুন আইএমপি-ও পাওয়া যাচ্ছে না। |