নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ইস্টবেঙ্গল-২ (চিডি-পেনাল্টি সহ ২)
পুণে এফসি-১ (আরাতা) |
স্বপ্নভঙ্গের অন্ধকূপ থেকে ফের আশার কুটিরে ঢুকে পড়লেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। দিন সাতেক আগে সুভাষ ভৌমিকের ধাক্কায় যে ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ জয়ের স্বপ্ন কার্যত চুরমার হয়ে গিয়েছিল, প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে পুণে এফসি-কে হারিয়ে লাল-হলুদে নতুন আলোর সন্ধান দিলেন এডে চিডি।
কথায় বলে দরকারে যে কাজে আসে, সে-ই আসল বন্ধু। শুক্রবার বালেওয়াড়ি স্টেডিয়ামের জোড়া গোলদাতা চিডি ফের একবার প্রমাণ করলেন, ইদানীং কেন তাঁকে লাল-হলুদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী বলা হয়। ফেড কাপ ফাইনালে ডেম্পো-বধের কারিগর আই লিগেও অক্সিজেন দিলেন মর্গ্যানকে। খুলে দিলেন চ্যাম্পিয়নশিপের বন্ধ দরজা। পুণে থেকে ফোনে চিডি বলছিলেন, “গোল করাটা আমার কাজ। দরকারের সময় সেটা করতে পেরেছি বলে আরও ভাল লাগছে। আগেও বলেছি। এখনও বলছি। আই লিগে আমাদের আশা শেষ হয়ে যায়নি।”
ইস্টবেঙ্গলের কাছে সবচেয়ে স্বস্তির ব্যাপার, যত দিন যাচ্ছে চিডি যেন আরও পরিণত হয়ে উঠছেন। বেড়ে চলেছে গোলের খিদে। শুক্রবার তাঁর দু’টো গোলের মধ্যেও অসম্ভব ইচ্ছেশক্তি। ম্যাচ শুরুর পাঁচ মিনিটের ভিতরেই পেনের থ্রু থেকে যখন পুণের বক্সে বল ধরছেন চিডি, তখন সামনে পায়ের জঙ্গল। কিন্তু চকিতে যে টার্নটা নিলেন, তাতেই কুপোকাত দুই ডিফেন্ডার। একা চিকাওয়ালি চিডিকে আটকাবেন সাধ্য কী? নিমেষে অভ্র মণ্ডলের পাশ দিয়ে বল পুণের জালে। ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় গোলের পাশে পেনাল্টি লেখা থাকলেও, সেটা আদায় করেছেন চিডিই। যে ভাবে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গতি বাড়িয়ে পুণের বক্সে ঢুক পড়েছিলেন, তাতে সিংগম সিংহের কাছে ফাউল করা ছাড়া উপায় ছিল না।
আই লিগে ভাগ্যের চাকা আবার ইস্টবেঙ্গলের দিকে ঘুরে গিয়েছে। লিগ টেবিলের যা অবস্থা, তাতে চার্চিল ১৬ ম্যাচে ৩৮। ইস্টবেঙ্গল ১৮ ম্যাচে ৩৬। সুভাষ ভৌমিকের দল দু’টো ম্যাচ কম খেলে দু’পয়েন্টে এগিয়ে থাকলেও, এই মুহূর্তে জোড়া ধাক্কায় জর্জরিত চার্চিল। বেটোর চোট এবং দলের এক নম্বর স্টপার বিলাল নিজ দেশে। ইস্টবেঙ্গল বোধহয় আই লিগে প্রত্যাবর্তন করার জন্য এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর পাবে না। মর্গ্যান নিজেও বলছিলেন, “আই লিগ আবার খুলে গেল।”
আই লিগের দরজা খুললেও, দুশ্চিন্তার মেঘ সরল না। যে রক্ষণের সংগঠন নিয়ে বহু ম্যাচে ভুগতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে, সেই রক্ষণই এ দিন ফের ডোবাচ্ছিল। চিডি শুরুতে গোল করলেও, মিনিট দশেকের মধ্যে ১-১ করে ফেলে পুণে। প্রায় তিরিশ গজ দূর থেকে ভেসে আসা বল বুঝতেই পারলেন না রাজু গায়কোয়াড়। নিটফল, আরাতার বাঁ পায়ের স্লাইডিং শট অভিজিতকে দাঁড়িয়ে দেখতে হল। এখানেই শেষ নয়। রক্ষণের বদান্যতা আরও ভয়ঙ্কর হতে পারত, যদি ভাগ্য আর অভিজিতের হাত না থাকত। লাল-হলুদ গোলকিপার একাই বাঁচালেন তিনটে। মোগার একটা শট পোস্টে লাগল।
ইস্টবেঙ্গল: অভিজিৎ, সৌমিক, রাজু, অর্ণব, নওবা, পেন (গুরবিন্দর), মেহতাব, হরমনজিৎ, ইসফাক, চিডি (ভাসুম), মননদীপ (বরিসিচ)
|