বন্দুকে চমক নেই রায়নায়
খোদ কৌসর আলির বাড়ি থেকে অস্ত্র মিলবে, তা হয়তো কেউ ভাবেননি। তবে এলাকায় যে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রয়েছে এবং প্রয়োজনে তার সদ্ব্যবহার হবে, রায়নায় লাগাতার হানাহানির পরিস্থিতিই তা বলে দিচ্ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বামফ্রন্ট জমানায় রায়না, মাধবডিহি, খণ্ডঘোষ এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল সিপিএমের জোনাল সদস্য কৌসর আলির। ২০০৯-এ লোকসভা ভোটের আগে দলেরই আর এক নেতা বামদেব মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁর এই আধিপত্য চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। বামদেবের নেতৃত্বে একত্রিত হন তৃণমূল এবং সিপিএম ছেড়ে আসা বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। বামদেব ও কৌসরের অনুগামীদের মধ্যে পরপর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে থাকে।
লোকসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকেরা এলাকায় এলে গ্রামবাসীরা তাঁদের কাছে কৌসরের বিরুদ্ধে মারধর, বাড়িতে আগুন লাগানো-সহ নানা রকম সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ জানান। এর পরে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে রায়নার মতো শক্ত ঘাঁটিতে সিপিএমের পক্ষে সব বুথে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়নি।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর থেকে তৃণমূলের বামদেব মণ্ডল ও শেখ নিয়মুলের গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখল নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। কয়েক দিন আগে নিয়ামুল ও অশোক সাঁতরা নামে আর এক তৃণমূল নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আর এ সবের মাঝে কৌসর আলি ফের মাথা তোলার চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশের একাংশের দাবি।
পুলিশ জানায়, কৌসরের বিরুদ্ধে মাধবডিহির কাঁইতিতে দুই তৃণমূল কর্মী শেখ সরাফত ও শেখ আটুলকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি রায়না থানা এলাকায় গোলমাল পাকানোর অভিযোগও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অবশ্য দাবি, “কৌসরের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। কাঁইতিতে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরেই ওই দুই সমর্থকের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় অকারণে কৌসরকে জাড়ানো হয়েছে।”
তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশের দাবি, পরপর নিয়ামুল ও কৌসর গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় হাত শক্ত হবে বামদেব মণ্ডলের। বামদেববাবু অবশ্য পুরো ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, “পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। এতে কার সুবিধা হবে, কার অসুবিধা হবে, সেই হিসেব কষার কী প্রয়োজন?”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ জানুয়ারি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বর্ধমান সার্কিট হাউসে একটি বৈঠক করেন। সেখানে তিনি দলের নেতা ও প্রশাসনের কর্তাদের রায়না-সহ জেলার নানা এলাকায় শান্তি ফেরানোর কথা বলেন। তারই জেরে যে সব নেতার নামে মামলা রয়েছে, দলমত নির্বিশেষে পরপর তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.