শেওড়াফুলি থেকে গ্রেফতার করা হল এক বিচারককে। খোরপোষের মামলায় প্রতিপক্ষ ওই বিচারকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। ব্যারাকপুরের পঞ্চম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারক পরাগ নিয়োগীর জারি করা ওই নির্দেশ দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের কাছে পৌঁছেছিল। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিলদক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশন আদালতের বিচারক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। খোরপোষ না পেয়ে তাঁর স্ত্রী ব্যারাকপুরের ওই আদালতে মামলা করেন বলে জানা গিয়েছে। সোমবার রাতে শেওড়াফুলির বাড়ি থেকে ওই বিচারককে গ্রেফতার করেন বালুরঘাটের ডিএসপি উত্তম ঘোষ।
গত নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে ব্যারাকপুরের পঞ্চম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারক পরাগ নিয়োগী বালুরঘাটের সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশন আদালতের বিচারক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। চলতি জানুয়ারির ২২ তারিখের মধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করে ব্যারাকপুরের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন।
জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি জেলা জজকে লিখিত জানিয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। এর পরে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা জজ মণিশঙ্কর দ্বিবেদী হাইকোর্টের ঊর্ধতনের কাছে বিষয়টি নিয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন বলে আদালত সূত্রের খবর। এর পরেই অভিযুক্ত ওই বিচারককে গ্রেফতার করতে বালুরঘাট থেকে ডিএসপির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শেওড়াফুলিতে হানা দেয়।
বালুরঘাটের আদালতের ওই বিচারক ধৃত দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে জানাতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমার কিছু জানা নেই।” শ্রীরামপুরের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও তাঁর বিরুদ্ধে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি আছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এই বিষয়ে জানতে চাইলে ‘বিষয়টি জানা’ নেই বলে অভিযুক্ত বালুরঘাটের সিভিল জজ দেবাশিসবাবু মন্তব্য করেছেন।
অধুনা সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশন কোর্টটি ‘মুন্সেফ কোর্ট’ বলেই পরিচিত সংখ্যালঘু মুসলিম মহিলাদের ডিভোর্সের মামলা সহ জমিজমা সংক্রান্ত অভিযোগের মামলাগুলির বিচার জেলার এই একমাত্র দেওয়ানি কোর্টেই হয়। গত এক বছর ধরে বালুরঘাটের ওই আদালতের বিচারক ছিলেন। ধৃত দেবাশিসবাবু বিচারকের গ্রেফতারের ঘটনার খবরে বালুরঘাট আদালতের আইনজীবীদের মধ্যে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। |