শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, সপুত্র চৌটালার ১০ বছরের কারাদণ্ড |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
অবৈধ ভাবে শিক্ষক নিয়োগের দায়ে হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দলের (আইএনএলডি) প্রধান ওমপ্রকাশ চৌটালা এবং তাঁর ছেলে অজয়কে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিল দিল্লির এক আদালত।
আজ বিশেষ সিবিআই বিচারক বিনোদ কুমার এই রায় ঘোষণার পরেই আদালত চত্বরে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। কোর্টের বাইরে আইএনএলডি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-বোমা ছোড়েন ওমপ্রকাশ-অনুগামীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চালায় পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। তবে সমর্থকদের বোমা-ইটে কেউ হতাহত হননি। |
|
সাজা ঘোষণার পর কোর্টের সামনে সমর্থকদের বিক্ষোভ। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই। |
বিভিন্ন মামলায় জনপ্রতিনিধিদের কারাদণ্ড পাওয়ার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এর আগে টেলিকম দুর্নীতিতে জেলে যেতে হয়েছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুখরামকে। নিজের সচিবকে অপহরণ ও খুনের দায়ে ২০০৬ সালে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবু সোরেনকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল দিল্লির এক আদালত। পরে দিল্লি হাইকোর্ট তাঁকে মুক্তি দেয়। জেলযাত্রার তালিকায় এ বার যুক্ত হল আইএনএলডি বিধায়ক ওমপ্রকাশ এবং অজয়ের নাম।
যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অজয় চৌটালার দাবি, “কংগ্রেস সরকার আর সিবিআই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে।” চৌটালাদের আইনজীবী জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন করা হবে।
অজয় যাই দাবি করুন না কেন, এই শাস্তির ফলে তাঁর এবং তাঁর বাবার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ এই শাস্তির ফলে আগামী বছর রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না বাবা-ছেলে। যদি না উচ্চতর আদালত তাঁদের শাস্তির উপর স্থগিতাদেশ দেয়। কারণ জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী কোনও মামলায় কেউ দু’বছরের বেশি কারাদণ্ড পেলে সাজা পাওয়ার দিন থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ছ’বছর পর্যন্ত কোনও ভোটে লড়তে পারবেন না তিনি।
২০০০ সালে হরিয়ানায় অবৈধ ভাবে তিন হাজারেরও বেশি জুনিয়র বেসিক ট্রেনড (জেবিটি) শিক্ষক নিয়োগের ঘটনায় গত ১৬ জানুয়ারি সপুত্র চৌটালা-সহ ৫৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। সেদিনই দোষীদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল।
এ দিন ওমপ্রকাশ ও অজয় ছাড়াও আরও সাত জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। তাঁদের মধ্যে দু’জন আইএএস অফিসার এবং এক জন মহিলা। এ ছাড়া এক জনকে পাঁচ বছর এবং বাকি ৪৫ জনকে চার বছরের জেল দেওয়া হয়েছে।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন না ৭৮ বছরের ওমপ্রকাশ। কিন্তু সকাল থেকেই কোর্ট চত্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেন আইএনএলডি-র বহু কর্মী-সমর্থক। মামলার গুরুত্ব বুঝে পুলিশও কোর্ট চত্বরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল। তবুও এড়ানো যায়নি সংঘর্ষ। চৌটালাদের শাস্তির কথা শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে তাঁরা কোর্টের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বেধে যায় সংঘর্ষ। এর ফলে এ দিন আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্মও ব্যাহত হয়। আদালতে ঢুকতে গিয়ে অসুবিধায় পড়েন আইনজীবীরাও। |
|