বিতর্ক, অস্বস্তি, চাঞ্চল্য। একাধিক বার তাঁর কীর্তিকলাপের দৌলতেই এই ‘উপহারগুলি’ পেয়েছে ব্রিটেনের রাজপরিবার। তিনি অবশ্য এ জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন সংবাদমাধ্যমকে।
চার মাস পরে তাঁর দেশে ফেরার আগে সেই সংবাদমাধ্যমকেই ডাকল ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। উদ্দেশ্য? বিতর্কিত, উচ্ছৃঙ্খল রাজকুমার হ্যারির সঙ্গে নয়, ব্রিটেনের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত ‘অ্যাপাশে হেলিকপ্টার পাইলট’ ক্যাপ্টেন ওয়েলসের ছবি দেখানো। লাস ভেগাস কাণ্ডের পরে গত পাঁচ মাস ধরে আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশের একটি মরু-ক্যাম্পে ঠিক কী ভাবে জীবন কাটাচ্ছিলেন সেই ছবিই তুলে ধরা হল সেখানে।
ঠিক কী করতেন তিনি সেখানে?
এক কথায় বাকি পাঁচ জন সেনার মতোই তাঁর কাজ ছিল তালিবান-নিধন। নিজেই জানিয়েছেন, এই পাঁচ মাসে বহু তালিবান হত্যা করেছেন। তবে বেশিরভাগ সময়েই স্থলসেনাকে সাহায্য করতে অভিযান করতেন রাজকুমার হ্যারি। আর বাকি সময়টা? হ্যারির নিজের বয়ানে দক্ষিণ আফগানিস্তানের ওই মরু-ক্যাম্পে অবসর বিনোদন বলতে ছিল সতীর্থদের সঙ্গে শুধু ভিডিও গেম খেলা এবং ছবি দেখা। একই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, দাদা উইলিয়াম চাইলেই বাড়িতে ফিরে স্ত্রী-র সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। কিন্তু তিনি পারেন না। |
হ্যারি ব্রিটেনের একটি চ্যানেলের সাংবাদিকদের দেখিয়েছেন, চার জন সেনার সঙ্গে কোথায় থাকতেন, কোন মেসে বাকি সেনা অফিসারদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করতেন। এক কথায় আর পাঁচ জন ব্রিটিশ অফিসারের মতোই সাধারণ জীবন কাটাতেন তিনি। খ্যাতির দুনিয়া থেকে অনেক দূরে। ‘স্পটলাইট’ থেকে এই দূরত্বটাই তাঁর ভীষণ কাঙ্খিত ছিল, একই সঙ্গে জানিয়েছেন হ্যারি। লাস ভেগাসে তাঁর নগ্ন ছবি প্রসঙ্গে বলেছেন, “হয়তো পরিবারকে, নিজেকে ছোট করেছি।” কিন্তু ব্যক্তিগত সময়ে গোপনীয়তা রাখাটাই স্বাভাবিক বলে মনে করেন। এবং সেখানে সংবাদমাধ্যমের উঁকিঝুঁকি মোটেও যথাযথ নয়, মত হ্যারির। সন্তানসম্ভবা বৌদি কেট মিডলটনের ব্যক্তিগত জীবনকেও সম্মান জানানো হবে বলে আশা করেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমকে দোষী ঠাউরেও একটা বিষয় কিন্তু বেশ জোর গলায় বলছেন তিনি। রাজকুমার হ্যারি, ক্যাপ্টেন ওয়েলস, এবং ব্যক্তি হ্যারি এই তিন ভূমিকায় তিন রকম দায়িত্ব সামলাতে হয় তাঁকে।
আর তাই ভূমিকা বদলাতেই বদলে যায় আচার ব্যবহার, পোশাক-পরিচ্ছদ, চলন বলন। লাস ভেগাসের উচ্ছৃঙ্খল হ্যারি হয়ে ওঠেন উর্দিধারী একনিষ্ঠ সেনা অফিসার, বা উচ্ছ্বসিত হবু কাকা। বাবার নিষেধ সত্ত্বেও যিনি খবরের কাগজে নিজেকে নিয়ে ছাপা সব কিছু পড়েন, বিরক্ত হন। আবার দক্ষ ‘সেলিব্রিটি’র মতো সব দায় চাপান সংবাদমাধ্যমের উপর।
সব ভূমিকায় স্বচ্ছন্দ রাজকুমার হ্যারি দেশে ফেরার পরে আবার নতুন কী ভূমিকা নেবেন, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা ব্রিটেন। |