গত বার দাঁড়িয়ে থেকে অশোক ঘোষ, বিমান বসুদের আগে মালা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এ বার রেড রোডে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান থেকে সরেই দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বছরের সরকারি অনুষ্ঠান হবে নেতাজি ভবনের পাশের মাঠে। সেখানেই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, বিরোধীদের মর্যাদা দিয়েই এমন সিদ্ধান্ত। সরকারের মতে, মুখ্যমন্ত্রী ‘সৌজন্যের রাজনীতি’তে বিশ্বাসী বলেই এমন সিদ্ধান্ত। আর বিরোধী শিবিরের এক নেতার কথায়, “নেতাজি ভাগ হয়ে গেলেন! রেওয়াজও ভাঙা হল!”
রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে ২৩ জানুয়ারির অনুষ্ঠান করতে চেয়ে কেন্দ্রীয় নেতাজি জয়ন্তী কমিটির তরফে চিঠি দিয়েছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন সাংসদ তথা সুভাষচন্দ্রের ভ্রাতুষ্পুত্র সুব্রত বসু। সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুও। সেই আবেদনের কথা উল্লেখ করেই অন্যান্য বছরের রেওয়াজে এ বার ব্যতিক্রম ঘটানোর কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্যানিংয়ে সোমবার সরকারি কর্মসূচির মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের অশোকবাবু আমাকে দু’টি চিঠি দিয়েছেন। আমি ওঁদের বলেছি, আপনারা ময়দানে নেতাজির জন্মদিন পালন করুন। রাজ্যের প্রতিনিধি হিসাবে সুব্রতদা (পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়) যাবেন। আমি নেতাজি ভবনে যাব। আমরা বিরোধীদের মর্যাদা দিই।”
পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এ দিন মহাকরণে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। কয়েক দিন আগে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু সরকারের কাছে চিঠি লিখে ময়দান এলাকায় নেতাজি মূর্তির পাদদেশে ২৩ জানুয়ারির অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিলেন। সেই চিঠি পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরকারি অনুষ্ঠান হবে নেতাজি ভবনের পাশের মাঠে।
তবে ময়দানে নেতাজির মূর্তিতে সরকারের তরফে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় মালা দেবেন।”
সরকারের সিদ্ধান্ত জানার পরে ফব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হাফিজ আলম সৈরানি অবশ্য বলেছেন, “আমাদের দাবি ছিল দু’টো। এক, যথাযথ মর্যাদায় ২৩ জানুয়ারি দেশপ্রেম দিবস পালন করা হোক। দুই, বরাবরের মতো কেন্দ্রীয় নেতাজি জয়ন্তী কমিটির সঙ্গে রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে নেতাজি মূর্তিতে অনুষ্ঠান করুক। সেখানে সরকারের এই সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এতে খুশি নই।” ফ ব নেতারা বুধবার রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে নেতাজির মূর্তিতে মালা দিয়ে তার পরে রেড রোডে যাবেন। বামফ্রন্টের বৈঠকেও এ দিন নেতাজির জন্মদিন প্রসঙ্গে কথা হয়। বৈঠকের পরে বিমানবাবু বলেছিলেন, “গত বার আমরা রেড রোডে মালা দিয়েছিলাম। এ বারও সরকারের অনুষ্ঠান হয়ে যাওয়ার পরে ওখানে নেতাজির মূর্তিতে মালা দেব।” তখনও অবশ্য সরকারের রেড রোড থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়নি। |