ঘুরে দাঁড়ানোর ময়দান জুড়ে বন্ধ পার্টি অফিস
ঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। কিন্তু সাংগঠনিক ভাবে কতটা ‘লড়াই’ দিতে পারবে সিপিএম, প্রশ্ন তা নিয়েই।
রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পরে বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকায় সিপিএমের বেশ কিছু পার্টি অফিস দফতর তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’ রায়নার সিপিএম বিধায়ক নিজের বাড়িতে থাকতে পারছেন না, এমন অভিযোগও উঠেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অভিযোগ, “তৃণমূল সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। সে কারণে বর্ধমান গ্রামীণ এলাকায় আমাদের ২৭টি দলীয় দফতর বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।” তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
সিপিএম সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রথম বন্ধ হয় সিপিএমের কেতুগ্রাম ১ দক্ষিণ লোকাল কমিটির অফিস। কান্দরার ওই অফিসটি পরে এক বার খোলা হলেও ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রায় দু’বছর ধরে পড়ে রয়েছে তালাবন্ধ হয়ে। একই অবস্থা কেতুগ্রাম ১ উত্তর লোকাল কমিটিরও। কোমরপুর গ্রামে কাটোয়া-সিউড়ি রোডের উপরে সিপিএমের অফিস তৃণমূল দখল করতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ। অফিসের দেওয়াল থেকে দলীয় প্রতীক মুছে দেওয়া হয়। লালঝান্ডা নামিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত দলের অন্দরেই ‘ক্ষোভ’ তৈরি হওয়ায় সিপিএমের এই অফিস তৃণমূল দখল করতে পারেনি। কিন্তু কেতুগ্রামেই আরও দু’টি পার্টি অফিস বন্ধ রয়েছে।
জেলা সিপিএম সূত্রের খবর, গ্রামীণ এলাকায় কেতুগ্রামের ওই দু’টি দলীয় দফতর ছাড়াও রায়নার তিনটি, খণ্ডঘোষের তিনটি, বর্ধমান সদরের দু’টি, মঙ্গলকোটের একটি, মন্তেশ্বরের একটি-সহ ২৭টি কার্যালয় বন্ধ। জামালপুরে একটি এবং ভাতারে দু’টি পার্টি অফিস বন্ধ হয়ে রয়েছে। সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক দুর্যোধন সর অভিযোগ করেন, “পার্টি অফিস খোলার চেষ্টা করলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করেছে। অশান্তি পাকিয়েছে। সে কারণে আমাদের অনেক কর্মী-সমর্থক গ্রামছাড়া।’’ অমলবাবুর অভিযোগ, “রায়নার বিধায়ক বাসুদেব খাঁ দীর্ঘদিন ধরে নিজের গ্রাম আলমপুরে ঢুকতে পারছেন না।” কাটোয়াতেও দু’টি পার্টি অফিস বন্ধ রয়েছে বলে সিপিএমের দাবি।
পুলিশের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে সিপিএমের অভিযোগ, প্রায় ছ’মাস ধরে কাটোয়ার কৈথন ও খাজুরডিহিতে তাদের দলীয় দফতর বন্ধ রয়েছে। কৈথন গ্রামে তাঁদের দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। দলের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “তৃণমূলের নাম করে ওই সব কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই সব তৃণমূলীরা আসলে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থক।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রদেশের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এ সব ঘটনায় কংগ্রেস কোনও ভাবেই যুক্ত নয়।”
পুলিশের ভূমিকাতেও ক্ষুব্ধ সিপিএম। অমলবাবু বলেন, “পুলিশকে যে কত বার বলেছি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে আমাদের দলীয় দফতর বন্ধ! কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।” জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা অবশ্য বলেন, “সিপিএম এ নিয়ে আমার কাছে কোনও চিঠি দেয়নি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, এ রাজ্যে তারা যখন ‘উন্নয়ন’ ও ‘শান্তি’র জন্য প্রচার করছে, সেই সময়েই সিপিএম ‘সন্ত্রাসের পরিবেশ’ তৈরি করার চেষ্টা করছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) তথা রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ দাবি করেন, “কোথাও সিপিএমের দলীয় দফতর বন্ধ নেই। নিজেদের সংগঠন নেই বলে অপপ্রচার চালিয়ে সিপিএম সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে।”
সিপিএম নেতারা আপাতত আশা করছেন, জেলা জুড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সৌজন্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই পার্টি অফিসগুলি খোলা সম্ভব হবে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে সব কর্মী-সমর্থক দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তাঁরাও আবার ‘ঘরমুখো’ হচ্ছেন। অমলবাবুর দাবি, “দ্রুত পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.