দক্ষিণ কলকাতা
ওয়ার্ড অফিস
কোথায় পাব তারে
যেন চোর-পুলিশ খেলা!
নেই ওয়ার্ড অফিস। জমি জটে আটকে রয়েছে পুরসভার ওয়ার্ড অফিস নির্মাণের কাজ। তাই পুর-পরিষেবার জন্য কাউন্সিলরকে খুঁজে পেতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় এলাকার মানুষকে। নির্দিষ্ট কোনও জায়গা না থাকায় কাউন্সিলরকে কাজ চালানোর জন্য কখনও বসতে হয় পাড়ার ক্লাবে, কখনও বা পার্টি অফিসে। এ ভাবেই টালিগঞ্জের চারুচন্দ্র (ইস্ট) অ্যাভিনিউ সংলগ্ন ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-পরিষেবার কাজ চলছে বছরের পর বছর। পুরকর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এখানে ওয়ার্ড-অফিস তৈরির জন্য পুরসভার কোনও জায়গা নেই। এলাকায় পূর্ত দফতরের জমিতে ছাড়পত্র পেলেই ওয়ার্ড অফিস তৈরি করা যেতে পারে। পুরকর্তৃপক্ষ এখানে ওয়ার্ড অফিস তৈরির জন্য ইতিমধ্যে একটি নকশাও তৈরি করেছেন।
পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধায় বলেন, “ওয়ার্ড অফিস না থাকায় এলাকাবাসীদের সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু, কোনও জায়গা না পেলে পুরসভা কী করে ওয়ার্ড অফিস নির্মাণ করবে? পুরসভা থেকে জমি খোঁজার চেষ্টা চলছে। সেই জমি পেলেই সমস্যা মিটে যাবে।” স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের মমতা মজুমদার বলেন, “এখানে ওয়ার্ড অফিস খুবই প্রয়োজনীয়। নির্দিষ্ট কোনও জায়গা না থাকায় স্থানীয় ক্লাব বা পার্টি অফিসে বসে কাজ চালাতে হয়। কোথায় কখন বসছি তা সব সময় সবার জানা সম্ভব নয়।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওয়ার্ড অফিস না থাকায় পুর-পরিষেবা সংক্রান্ত কোনও বিজ্ঞপ্তি পেতে তাঁদের অসুবিধা হচ্ছে। কাউন্সিলর কোন দিন কোথায় বসছেন তা জানা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাঁদের অভিযোগ, এই ওয়ার্ডে দ্রুত একটি অফিস নির্মাণের জন্য বরো অফিসে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। লেক গার্ডেন্স উড়ালপুলের নীচে অনেক জমিই খালি পড়ে রয়েছে। সেই জমির একটি অংশেই ওয়ার্ড অফিস তৈরির জন্য পুরকর্তৃপক্ষ অনেক দিন আগেই পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়নি।
এখানে জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
১০ নম্বর বরোর অন্তর্গত এই ওয়ার্ডে উড়ালপুলের তলায় যে জমি ফাঁকা পড়ে তা রাজ্য পূর্ত দফতরের। এই বরোর চোয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, “পড়ে থাকা এই জমির একাংশে ওয়ার্ড অফিস এবং তার ঠিক উল্টো দিকের জমিতে উদ্যান তৈরির পরিকল্পনার জন্য পুরসভাকে ছাড়পত্র দিতে পূর্ত দফতরকে অনুরোধ করেছি। তারা ছাড়পত্র দিলে পুরসভা ওয়ার্ড অফিস তৈরি করতে পারবে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছি। পুর আধিকারিকরাও পূর্ত দফতরকে এ ব্যাপারে লিখিত আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পূর্ত দফতর কোনও ছাড়পত্র দেয়নি।”
পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ওয়ার্ড অফিস এবং তার কাছেই আমাদের জমিতে একটি উদ্যান নির্মাণের জন্য পুরসভা আমাদের কাছে আবেদন করেছে। সরকারি পদ্ধতি মেনেই এই জমিতে পুরকর্তৃপক্ষকে নির্মাণের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতর এই কাজ শুরু করেছে।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.