|
|
|
|
জগন-ঝড়ে পৃথক তেলেঙ্গানাই এখন খড়কুটো কংগ্রেসের |
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • হায়দরাবাদ |
গোটা কংগ্রেস যখন চিন্তনে ডুবতে জয়পুরমুখী, এই প্রথম সক্রিয় ভাবে নেই তিনি। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আজকের দিনটি কাটালেন তাঁর ‘শীতের রাজধানী’ হায়দরাবাদে। আর তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে ক্ষণিকের জন্য সরগরম হয়ে পড়ল তাঁর সভা। এমন সময়ে, যখন কংগ্রেস নেতৃত্ব পৃথক তেলেঙ্গানার ঘোষণা ‘খুব দ্রুত’ই করতে চান।
কলকাতায় আসার আগে এখানে চোখের চিকিৎসকদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি। রাজ্যপাল ই এস এল নরসিংহন ও মুখ্যমন্ত্রী কিরণ রেড্ডিও ছিলেন মঞ্চে। তাঁদের সামনেই পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে সরব হলেন কয়েক জন। নিরাপত্তা কর্মীরা অবশ্য ক্ষিপ্রতার সঙ্গেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে অর্থমন্ত্রী হিসাবে প্রণববাবু যখন হায়দরাবাদে এসেছিলেন, তখনও তেলেঙ্গানাপন্থী বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।
হায়দরাবাদ এখনও তেলেঙ্গানা নিয়ে সরগরম। তেলেঙ্গানার সমর্থনে এক দিকে যেমন সভা-মিছিল চলছে, তেমনই এর বিরোধিতাও চলছে পুরোদমে। কিন্তু রাজ্য কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “এই মুহূর্তে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য ঘোষণা ছাড়া গতি নেই। আগামী সপ্তাহেই এর রোডম্যাপের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে। চন্দ্রশেখরের টিআরএস কংগ্রেসে মিশে যাওয়ার বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত। তবে রাজ্য গঠন হতে বছর গড়িয়ে যাবে।” জয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন-বৈঠকেও তেলেঙ্গানা নিয়ে একপ্রস্ত আলোচনা হবে।
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে গত মাসের শেষে যে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন, তার আগে আলোচনা না করায় ক্ষুব্ধ কিরণ রেড্ডি। আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও তাঁর একান্তে একপ্রস্ত কথা হয়েছে। পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের বিষয়টি এক সময়ে প্রণববাবুর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই চিদম্বরম একতরফা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। তার পর থেকেই পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি আরও জোরালো হতে থাকে। বিজেপিও পৃথক তেলেঙ্গানাকে সমর্থন করে কংগ্রেসের উপর চাপ বাড়িয়েছে। অনেকেই মানেন, তেলেঙ্গানা পৃথক হলে দেশের অন্য প্রান্ত থেকেও একই দাবি উঠবে। রাজ্য কংগ্রেসের এক সূত্রের দাবি, খোদ মুখ্যমন্ত্রী কিরণ রেড্ডিও আদতে পৃথক রাজ্য চান না।
কিন্তু কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের কথায়, জল এখন অনেক দূর গড়িয়ে গিয়েছে। প্রয়াত রাজশেখর রেড্ডির ছেলে জগন্মোহন যে ভাবে দাপট বাড়াচ্ছেন, তাতে পৃথক রাজ্য গঠনই কংগ্রেসের ভরসা। রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের ১৭টি-ই তেলেঙ্গানায়। পৃথক রাজ্য হলে কংগ্রেস এখান থেকে অন্তত ১৫টি আসন পেতে পারে। লোকসভার সঙ্গেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। কংগ্রেসের ওই নেতার কথায়, তার আগে পৃথক রাজ্য বাস্তবে রূপ না নিলে, ভোটারদের আর ‘বোকা’ বানানো যাবে না। |
|
|
|
|
|