কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াতে শিল্পপতিদের নিয়ে দিল্লি আসার কথা গত কালই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্দেশ্য, রাজ্যের জন্য অর্থসাহায্য মঞ্জুরি। মমতার ঘোষণার এক দিনের মধ্যে দিল্লি এসে সেই চাপ তৈরির কাজই শুরু করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের সঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের দাবি তো জানালেনই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করতে কাল তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময়ও চাইলেন অমিতবাবু।
কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে আজ সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে বসেছিলেন চিদম্বরম। বৈঠকে রাজ্যের জন্য আর্থিক সাহায্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সাহায্যের পরিমাণ বাড়াতে দরবার করেন অমিতবাবু। রাজ্যের দাবিদাওয়া সংক্রান্ত বিষয়টি চর্বিতচর্বণ হলেও বৈঠকের শেষে অমিতবাবু দাবি করেছেন, বাজেট প্রস্তুতির প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। তাই রাজ্য চায়, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গকে ঋণগ্রস্ত রাজ্য হিসেবে মাথায় রেখে অতিরিক্ত আর্থিক সাহায্য মঞ্জুর করুক। তাঁর এই দাবির পিছনে যুক্তি, “এত বিশাল ঋণের বোঝা সত্ত্বেও রাজ্যের আর্থিক বৃদ্ধির হার জাতীয় বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি। পশ্চিমবঙ্গের মাথায় ওই ঋণের বোঝা না থাকলে উন্নয়নও গতি পাবে। তাই কেন্দ্রের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।”
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অনুদানের পরিমাণ বৃদ্ধিরও দাবি জানান অমিতবাবু। তাঁর বক্তব্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়কের মতো সামাজিক পরিকাঠামো প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় অনুদান ৮০ থেকে ১০০% করার দাবি জানিয়েছে রাজ্য। সূত্রের খবর, অমিতবাবুর এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো বেশ কিছু রাজ্য। তবে যোজনা কমিশন দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী যোজনায় কেন্দ্রীয় অনুদানের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার পক্ষে। তাই শেষ পর্যন্ত এই দাবি মানা হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। বৈঠকে পণ্য পরিষেবা কর নিয়েও আলোচনা হয়। তবে সমাধানসূত্র মেলেনি। কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে বিক্রয়কর ধীরে ধীরে কমিয়ে পণ্য পরিষেবা কর চালু করার পক্ষে রাজ্যগুলিকে চাপ দিয়ে চলেছে।
অমিতবাবুর যুক্তি, এ ক্ষেত্রে বিক্রয় কর বন্ধ করার ফলে রাজ্যগুলির যে আর্থিক ক্ষতি হবে, তা মিটিয়ে দিক দিল্লি। সব অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে গঠিত এমপাওয়ার্ড কমিটির সুপারিশও তাই ছিল। কিন্তু কেন্দ্র এই পরিমাণ আর্থিক সাহায্য দিতে নারাজ। তবে চিদম্বরম জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেট অধিবেশনে পণ্য পরিষেবা কর সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধন বিল আনতে চলেছে কেন্দ্র। বৈঠকে অমিতবাবু রাজ্যের আর্সেনিক সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রের সাহায্যও চেয়েছেন।
|
‘বেঙ্গল লিডস’-এ মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, বিভিন্ন পরিবহণ নিগমের পড়ে থাকা জমি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই জমি আদৌ বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা যাবে কি না, গেলে কতটা করা যাবে, তা নিয়ে গোড়াতেই ধন্দে পরিবহণ-কর্তারা। পরিবহণ দফতর সম্প্রতি নিগমগুলির প্রায় ৩০টি ডিপোর জমি নিয়ে সমীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছিল কেপিএমজি নামে একটি সংস্থাকে। বুধবার ওই সংস্থার দেওয়া রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ ডিপোয় জমি নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে। তাই ওই সব জমি এখনই বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা যাবে না বলে মনে করছেন পরিবহণ-কর্তারা।
|
প্রশিক্ষণ পার্শ্বশিক্ষকদেরও |
দু’বছরের ডিপ্লোমা অফ এলিমেন্টারি এডুকেশন ট্রেনিংয়ের জন্য পার্শ্বশিক্ষকদেরও আবেদন নিতে হবে বলে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য পার্শ্বশিক্ষক সমন্বয় সমিতি মামলা করে বলে, সর্বশিক্ষা প্রকল্পে ২০১৫ সালের ৩০ মার্চের মধ্যে প্রাথমিক ও জুনিয়র হাইস্কুলের কর্মরত সব শিক্ষকের প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্য সরকার পার্শ্বশিক্ষকদের আবেদন নিতে নারাজ। বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত বলেন, আইনে বৈষম্য চলে না। একই স্কুলের অন্য শিক্ষকেরা সুযোগ পাবেন আর পার্শ্বশিক্ষকেরা পাবেন না, এটা হতে পারে না। |