নার্সিংহোমে গিয়ে ফিরহাদ, রবীন্দ্রনাথকে শুভেচ্ছা সূর্যর
তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কেউ যাওয়ার আগেই নার্সিংহোমে গিয়ে সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে দেখে এলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। কার্যত তার পরেই সেখানে হাজির হন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস! শাসক দলের বর্ষীয়ান বিধায়ককে দেখতে গিয়েই সূর্যবাবু খবর পান, একই নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। কয়েক দিন আগেই সিপিএম বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা আহত হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় যিনি কটাক্ষ করেছিলেন! সৌজন্যের খাতিরে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আপাতদৃষ্টিতে নিখাদ সৌজন্য। শাসক ও বিরোধী শিবিরের কাদা ছোড়াছুড়ি, কটূক্তির স্রোতে যা ইদানীং ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। সরকারি দলের বিধায়ক বা মন্ত্রীরা অসুস্থ হলে বিরোধী দলনেতা খোঁজ নিতে যাচ্ছেন, বাম জমানায় বিরোধী তৃণমূলের বয়কটের রাজনীতির দৌলতে এমন ঘটনা বিশেষ চোখে পড়ত না। সূর্যবাবুরা অবশ্য এখনও সে পথে হাঁটেননি। এর আগেও অসুস্থ শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। তবে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যায়, বিরোধী দলনেতার বুধবারের পদক্ষেপে সৌজন্যের মোড়কের আড়ালে সূক্ষ্ম রাজনীতি আছে! তৃণমূলে একঘরে হয়ে-থাকা রবীন্দ্রনাথবাবুকে দেখতে গিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইয়ের খোঁজ তাঁর দলেরই বিশেষ কেউ রাখেন না! আর ববির কেবিনে গিয়ে চায়ের পেয়ালা হাতে হাল্কা আলাপচারিতায় সূর্যবাবু এই তথ্যই সামনে এনে ফেলেছেন যে, পুরমন্ত্রী বেসরকারি নার্সিংহোমেই ভরসা রেখেছেন! প্রতিপক্ষ সিপিএমের বিধায়ককে কটাক্ষ করার সময় সে যা-ই বলে থাকুন না কেন!
ঘটনাচক্রে, রাজ্যের আর এক মন্ত্রী অরূপও এ দিন ওই নার্সিংহোমে গিয়েছিলেন। মতুয়াদের ‘বড়মা’ বীণাপাণি দেবীর ওই নার্সিংহোম থেকে ছুটি পাওয়ার বিষয়টি দেখভাল করে তিনি রবীন্দ্রনাথবাবুর কাছে গিয়ে তাঁর শরীরেরও খোঁজখবর নেন। পরে অরূপ বলেন, “আমি মাস্টারমশাইয়ের কাছে ১০ মিনিট ছিলাম। ওঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছি।” তৃণমূল সাংসদ সোমেন মিত্রের স্ত্রী এবং বিধায়ক শিখা মিত্রও মাস্টারমশাইকে দেখতে গিয়েছিলেন।
সূর্যবাবুর দাবি, তাঁর হাসপাতাল-সফরে রাজনীতির কিছু নেই। তাঁর কথায়, “রবীন্দ্রনাথবাবু প্রবীণ বিধায়ক। বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ। রাজনীতির বাইরেও আমাদের কথাবার্তা হত। যখন মন্ত্রী ছিলাম, উনি বিধায়ক, তখনও হত। যখন খবর পেলাম ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে ওঁকে এখানে সরানো হয়েছে, বুঝেছিলাম কিছু জটিলতা হয়েছে। তখনই ঠিক করেছিলাম, আসব। ওঁর আরোগ্য কামনা করেছি।” লাওডন স্ট্রিটের ওই নার্সিংহোমেই এ দিন ভর্তি হয়েছেন ফিরহাদ। বিরোধী দলনেতার মন্তব্য, “খবর পেয়ে ওঁকেও দেখে এসেছি।”
কলকাতার প্রবীণ প্রাক্তন মেয়র, সিপিএমের কমল বসুও এখন ওই নার্সিংহোমে ভর্তি। তবে তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরিস্থিতি নেই বলে সে দিকে যাননি বিরোধী দলনেতা। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যবাবু তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রীকে (এখনও কাগজে-কলমে ইস্তফা মঞ্জুরের ঘোষণা হয়নি) দেখতে যাওয়ার পরেই নার্সিংহোমে সৌজন্য দেখাতে মায়া ঘোষ, কৃষ্ণা দেবনাথ ও দেবব্রত বসুকে পাঠিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। গিয়েছিলেন মানস ভুঁইয়াও। কৃষ্ণাদেবীর বক্তব্য, “রবীন্দ্রনাথবাবু খুব খুশি হয়েছেন এবং প্রদীপবাবুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.