বাড়িতে ঢুকে এক সিআরপি জওয়ানকে কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। পরে ওই বাড়ি থেকে টাকা-গয়না লুঠপাট করে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে পুরুলিয়ার জয়পুর থানার বেলিয়াগোড়া গ্রামে। পুলিশ জানায়, নিহত জওয়ানের নাম যুধিষ্ঠির মাহাতো (৩৩)। বুধবার ওই গ্রামে যান পুলিশ সুপার সি সুধাকর। তিনি বলেন, “খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, যুধিষ্ঠিরবাবু সিআরপিএফের ২৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের ওয়্যারলেস অপারেটার বিভাগের কনস্টেবল পদে ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার চাষে কর্মরত ছিলেন। ২৫ ডিসেম্বর প্রায় এক মাসের ছুটিতে তিনি জয়পুরের বাড়িতে এসেছিলেন। ২০ জানুয়ারি কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে স্ত্রী উষাদেবী ও দেড় বছরের মেয়েকে নিয়ে শুয়েছিলেন ওই জওয়ান। দুষ্কৃতীরা ছাদ বেয়ে বাড়ির মধ্যে ঢোকে। উষাদেবী বলেন, “আট-দশ জন ডাকাত রাত ১টা নাগাদ বাড়িতে ঢুকেছিল। ওরা হিন্দি ও কুরমালি ভাষায় কথা বলছিল। ওদের মধ্যে এক জনের হাতে ছোট বন্দুক ছিল। স্বামীকে সরাসরি ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে ডাকাতদল।” দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণে বাঁচতে পারেনি যুধিষ্ঠিরবাবু। পুলিশ জানিয়েছে, ভোজালি জাতীয় কোনও অস্ত্র দিয়ে তাঁর বুকে কোপ মারে দুষ্কৃতীরা। জয়পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা ওই জওয়ানকে মৃত বলে জানিয়েছিলেন। রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। |
এখানেই খুন হন জওয়ান যুধিষ্ঠির মাহাতো।নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। গ্রামের প্রান্তে বাড়ি যুধিষ্ঠিরবাবুদের। একই চত্বরের মধ্যে বাড়ি হলেও পৃথক থাকেন তাঁর দুই দাদা ভগীরথ ও নরহরি মাহাতো। মঙ্গলবার রাতে উষাদেবীর আর্তনাদে ঘুম ভেঙে ছুটে এসেছিলেন দুই দাদা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। নরহরিবাবু বলেন, “দুষ্কৃতীরা যুধিষ্ঠিরের বাড়ির আলমারি ও আমার বাড়ির আলমারি ভেঙে সোনার গয়না, নগদ টাকা লুঠ করেছে।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অবশ্য ধারণা, এটা নিছক ডাকাতি করতে গিয়ে খুনের ঘটনা নয়। ওই সিআরপি জওয়ানকে খুন করার পূর্ব পরিকল্পনা থেকেই বাড়িতে ঢুকে দ্রুত অপারেশন সেরে পালাতে সক্ষম হয়েছে দুষ্কৃতীরা বলে পুলিশের একাংশ মনে করছে। নিহত জওয়ানের পরিবারের দাবি, আততায়ীরা বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে মোটরবাইক রেখেছিল। কাজ সেরে মোটরবাইক নিয়েই পালায় তারা। |