সমুদ্র উৎসবে শুধুই জলসা, তিমিরে দিঘা
নামেই সমুদ্র উৎসব। আসলে নাচ-গানের জলসা। লক্ষ-লক্ষ টাকা ব্যয় করে দিঘায় জলসা করার যৌক্তিকতা নিয়ে এ বার উঠল প্রশ্ন।
কথা ছিল গত বছরের মতো এ বারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমুদ্র উৎসবের উদ্বোধন করবেন। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদায় সরকারি অনুষ্ঠান থাকায় তিনি আসতে পারেননি। নগরোন্নয়ন ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও আসবেন বলেছিলেন। তিনি অসুস্থ, কলকাতার এক নার্সিংহোমে ভর্তি। পর্যটন দফতর উৎসবের উদ্যোক্তা হলেও আসননি পর্যটনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। কলকাতায় কৃষ্ণেন্দুবাবু জানিয়েছেন, উপনির্বাচনে শেষ না হওয়া পর্যন্ত মহাকরণেও যেতে চাইছেন না তিনি। সে কারণেই দিঘাতেও যাননি। সে কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েওছেন। অগত্যা, বুধবার উৎসবের উদ্বোধন করলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী।
গত বছর ১৩ জানুয়ারি কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ‘সমুদ্র উৎসব’ হয়েছিল দিঘায়। উৎসব বলতে মূলত কলকাতা থেকে শিল্পী, কলাকুশলীদের নিয়ে নাচ-গান। এ বার সমুদ্র উৎসবের বিস্তার বেড়েছে। চার ভাগে হচ্ছে উৎসব। নতুন দিঘায় উৎসবের উদ্যোক্তা পর্যটন দফতর। পুরনো দিঘা, তাজপুর ও মন্দারমণিতে উৎসবের দায়িত্বে স্থানীয় হোটেল মালিক সংগঠনগুলি। এই জন্য ওই সংগঠনগুলিকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বারও ওই টাকায় শুধুই জলসার আয়োজন করা হয়েছে। পুরনো দিঘায় শুধু বিচ ভলিবল আর বিচ কবাডি হচ্ছে। তা-ও বাইরে থেকে খেলোয়াড় এনে।
দিঘার এক হোটেল মালিকের কথায়, “গত বছরে সমুদ্র উৎসবে যত টাকা খরচ হয়েছিল, তার ছিটেফোঁটাও দিঘার পরিকাঠামো উন্নয়নে খরচ করলে আজ গোয়ার ঝলক নজরে আসত।” রামনগরের সিপিএম নেতা আশিস প্রামাণিক বলেন, “টাকা যখন খরচই হচ্ছে, তখন স্থানীয় মাদুর, ঝিনুক শিল্পীদের স্টল করার সুযোগ দিতে পারত। নাচ-গান তো যে কোনও জায়গাতেই হতে পারে।” স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সমুদ্র উৎসবের এক বছর পরেও সেই অর্থে দিঘার পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়ন হয়নি। থমকে রোপওয়ে, ডিয়ার পার্কের কাজ। ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, একমুখী গাড়ি চলাচল, মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভের আদলে রাস্তা তৈরিকোনও কাজই হয়নি। ‘পরিবর্তনে’র সৈকতনগরীর দখল নিয়েছে সিন্ডিকেট আর ভুয়ো আর্থিক কারবারে পুষ্ট হোটেল মালিকেরা। এখনও রাস্তার ধারে ছন্নছাড়া ভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ঝুপড়ি দোকান। রিকশা, হকার-রাজ আর নানা ধরনের গাড়ি-বাসের ভিড়ে যানজট সর্বক্ষণ। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির অবশ্য দাবি, ‘‘গত এক বছরে অনেক কাজ হয়েছে। রাস্তার দু’পাশে বাতিস্তম্ভ বসানো ছাড়াও তিনটি বাগান, বাইপাস সম্প্রসারণ হয়েছে।” এ ছাড়াও অমরাবতী পার্ককে ঘিরে রোপওয়ে, ট্রয় ট্রেন, স্নো-পার্ক, স্পা, মন্দারমণিতে রাস্তা ও সমুদ্র ভাঙন রোধের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি বিধায়কের। তাঁর মতে, “রাতারাতি উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তা বাস্তবায়ন হতে সময় লাগবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.