ইটভাটা/২
অভিযোগের ‘শাস্তি’ ছিল বড় তিক্ত
মাস কয়েক আগে করিমপুর-২ ব্লকের রামনগর ও নারায়ণপুর এলাকায় জমি লাগোয়া ইটভাটার ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে প্রায় এক হাজার বিঘার কলা চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
অন্য দিকে, জলঙ্গির এনায়েতপুরের শামসুল মণ্ডলের বিঘা দুয়েক আমবাগান আছে। গতবার আমের মুকুলও এসেছিল ভালই, কিন্তু পাশের ইটভাটার ধোঁয়া ও ছাইয়ের দাপটে গাছের মুকুল গাছেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দু’টো ঘটনাতেই প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ শামসুল এবং করিমপুর-২ ব্লকের অন্তত শতাধিক কলা চাষির।
নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে কৃষিজমির উপরে তো বটেই ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকাতেও রমরমিয়ে চলছে ইটভাটাগুলো। দুই জেলার সীমান্তঘেঁষা বেশ কিছু এলাকাতে প্রশাসনের চোখের সামনেই গত কয়েক বছরে তৈরি হয়েছে এমন অসংখ্য ইটভাটা। কোথাও সেই ভাটার দাপটে উর্বরতা হারাচ্ছে কৃষি জমি, নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল। কোথাও আবার সকাল থেকেই ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে ভাটালাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের। ইটভাটা থেকে নির্গত ছাই ও ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে প্রশাসনের কাছেও অভিযোগও জানানো হয়েছে একাধিকবার। তার ফল অবশ্য হাড়ে হাড়ে টের পেতে হয়েছে অভিযোগকারীদের অনেককেই।
ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
জলঙ্গির এনায়েতপুরের শামশুল মণ্ডল যেমন বলেন, “অভিযোগ জানিয়ে বড্ড তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে দাদা। এর বেশি কিছু বললে আবার বিপদে পড়তে হবে।’’ শামশুলের মতো অনেকেই বলছেন, ‘‘প্রশাসনের কোন সাহায্য তো মেলেইনি উল্টে ‘ফল ভাল হবে না’ বলে শাসিয়ে গিয়েছে ভাটা মালিকদের ঘনিষ্ঠ ‘সেজ’ কিংবা ‘মেজ’ দাদারা।”
প্রশাসন ওই ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ঠিক কি ধরণের ‘ব্যবস্থা’ নিয়েছিল জানেন না অভিযোগকারীরা। তবে এটা তাঁরা বুঝেছেন এই সব ভাটামালিকদের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্ক এতটাই ‘মধুর’ যে মুখ বুঁজে সহ্য করে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। আর মাটি মাফিয়াদের সঙ্গে পেরে ওঠাও বড় কঠিন কাজ।
রামনগর ও নারায়ণপুর এলাকার ওই কলাচাষিদের আক্ষেপ, ‘‘আমাদের দাবি ছিল কৃষি জমিতে ওই ভাটাগুলো বন্ধ করা হোক। মহকুমা ও জেলা প্রশাসনকে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি নিজেরাও দরবার করে এসেছি বেশ কয়েকবার। কিন্তু কই, কেউই তো কিছুই করল না ওই ভাটা বন্ধ না। জানি আবারও ক্ষতি হবে চাষআবাদে, সে দায় কে নেবে?’’ কৃষ্ণনগর করিমপুর কিংবা করিমপুর বহরমপুর, রাজ্যসড়কের দুই পাশের চাষের জমির মধ্যেই রমরমিয়ে চলছে অজস্র বেআইনি ইটভাটা। এগুলো কার অনুমতি নিয়ে চলছে? দূষণ নিয়ন্ত্র্ড় পর্ষদদের কোন অনুমতি আদৌ আছে কি? ভুমি রাজস্ব দফতরই বা কী বলছে? ভাটাগুলো বেআইনি জেনেও কেন ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ হয়ে বসে রয়েছে তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.