রাখে ধোনি মারে কে, সিরিজ এখন ১-১
ভারত ২৮৫-৬ (৫০ ওভারে)
ইংল্যান্ড ১৫৮ (৩৬ ওভারে)
৮৫ তাড়া করতে নেমে ১৫ ওভারে যখন ৭৩-৪ ইংল্যান্ড, তখনই কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম ম-ম করছে জয়ের গন্ধে। ড্রামের কানফাটানো আওয়াজ, টিকিট ছিঁড়ে তৈরি কনফেটির বৃষ্টি, হাজার হাজার তেরঙার হাসি। উন্মত্ত গ্যালারির অবিশ্বাস্য অনুরণনে তখন কাঁপছে প্রেসবক্সও।
কুক-পিটারসেন প্যাভিলিয়নে। তা ভারতীয় আম্পায়ারের ভুলে কুককে এলবিডব্লিউ দেওয়া হলেই বা কী, তখনই তো নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে সিরিজ ১-১ হওয়া। বাকি তিনটে ম্যাচ জমে যাওয়া। আর সবচেয়ে বড়, টিম ইন্ডিয়ার জয়ে ফেরা। সবুজ-মেরুন ভক্তদের জন্য যদি মঙ্গলবার স্বস্তির হাওয়া এনে দেয়, দিনটা তো নীল জার্সির সমর্থকদেরও। হারের পৃথিবী থেকে একটু একটু করে জয়ের অভ্যেসে ফেরার।
ধোনির রান করার অভ্যেসটা অবশ্য নতুন কিছু না। চলছেই। ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব ধোনিকে প্রায় একা কাঁধেই টানতে হচ্ছে গত কয়েকটা সিরিজে। পাকিস্তান সিরিজে একাই টেনেছেন দলের ব্যাটিং। আশা করা হয়েছিল, ইংল্যান্ড সিরিজে অন্তত নামী-দামি ওপেনার ও মিডল অর্ডার নড়েচড়ে বসবে। লম্বা জুটিতে ভদ্রস্থ টার্গেটে পৌঁছে দেবে টিমকে। বিশেষ করে ধোনি যখন কিছুতেই আগে নামছেন না। সুযোগের পর সুযোগ। তবু প্রতি ম্যাচে সেই এক গল্প। শেষ দিকে নেমে ধোনি বাঁচালে বাঁচল, না হলে একের পর এক উইকেট খুইয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার মিছিল।
কোচিতে ধোনি-ধামাকা। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই
এ দিন ভারতীয় ইনিংসের শুরুটা পুরনো হলেও শেষটা যে অন্য রকম হল। তার পিছনে ধোনি-রায়না ও পরে স্লগে ধোনি-জাডেজার অসামান্য যুগলবন্দি। ৪৪ ওভারে ভারত যখন ২০৩-৬, ২৬০ যখন মরীচিকা মনে হচ্ছে, সেই সময় শুরু একসঙ্গে ধোনি-ধামাকা আর জাডেজার গোলাগুলি। ৬৫ বলে ধোনির ৭২-এর শেষ দিকে ছিল হেলিকপ্টার শটের বন্যা। টেনিস বলে ক্রিকেট খেলে যে শটটা আয়ত্ত করেছেন ক্যাপ্টেন কুল। শেষ ওভারে ধোনি আউট হয়ে গেলে কী হবে, ওই ওভারেই কুড়ি রান তুলে জাডেজা মনে করিয়ে দিলেন, বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংটাও তিনি করতে জানেন। বুঝিয়ে দিলেন, সাত নম্বরে অলরাউন্ডারের স্লটের জন্য তাঁর নাম ভাবা যেতেই পারে।
ডেথ ওভারে ইংরেজ বোলাররা ভয়ানক পিটুনি খেলেন। এক দিকে ধোনি, অন্য দিকে জাডেজারেহাই কোথায়? শেষ ছ’ওভারে উঠল ৮৪! তার আগে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে সেই একই গল্প। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কথা বলার ভঙ্গি যত দ্রুত, রান করায় ঠিক ততটাই স্লথ গম্ভীর। এ দিনও যথারীতি ব্যর্থ। রাহানে পরপর সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু রান নেই। কোহলি এখনও অফ-ফর্মের কুহেলিকায়। যুবরাজ সেই সেট করে সোজা বল ঘোরাতে গিয়ে ট্রেডওয়েলের শিকার। এ দিন তাঁর আউট নিয়ে সংশয় থাকলেও পরে আম্পায়ারের ভুলে ধোনি (তখন ৬ ব্যাটিং) জীবন পেয়ে যাওয়ায় ভারতীয় শিবির ওটা নিয়ে আর বেশি নাড়াচাড়া করবে না ধরেই নেওয়া যায়।
কোচির জয়ে ব্যাটিংয়ের দুই নায়ক যদি ধোনি-জাডেজা হন, বোলিংয়ে অবশ্যই ভুবনেশ্বর-অশ্বিন। তেইশ বছরের পেসার এই মরসুমে ভারতীয় বোলিংয়ে নিঃসন্দেহে সেরা আবিষ্কার। কুক, পিটারসেন, ইয়ন মর্গ্যানযে তিন ইংরেজ বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারতেন, সেই তিনকেই ড্রেসিংরুমে ফেরালেন তরুণ পেসার। এ দিন তাঁর অবিশ্বাস্য বোলিং হিসেবের (দুটো মেডেন-সহ দশ ওভারে ২৯ রান, তিনটে উইকেট) পিছনে রয়েছে নিয়ন্ত্রিত সুইং বোলিং। শুরুটা যদিও করেছিলেন অশোক দিন্দার জায়গায় টিমে ফেরা সামি আহমেদ। দ্বিতীয় ওভারেই ফর্মে থাকা ইয়ান বেল-কে ফিরিয়ে। কফিনের শেষ পেরেকগুলো সযত্নে পুঁতে দিলেন অশ্বিন। যাঁকে এ দিন চব্বিশ নম্বর ওভারের আগে ডাকতে হল না। ভারতীয় বোলিং কোচিতে এতটাই স্বস্তির গদিতে বসিয়ে দিয়েছিল ধোনিকে!
অতঃকিম? রাঁচি ম্যাচের আগে ঘাড়ে বন্দুক নিয়ে নয়, ঘরের ছেলে এ বার হাসিমুখেই ঘরে ফিরছেন!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.